স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন আর আগের মতো জরাজীর্ণ অবস্থায় নেই। আমরা সমালোচনার ঊর্ধ্বে উঠে স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে কাজ চালিয়ে নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার অনেক উন্নয়ন করেছেন। আমরা টারশিয়ারি লেভেলের উন্নয়নের চেষ্টা করছি। সেকেন্ডারি লেভেল, জেলা, উপজেলা, মেডিকেল কলেজ এবং ইনস্টিটিউটগুলোকে নতুন করে সাজানো হয়েছে। আজ বুধবার (১০ মে) দুপুরে রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বরে ঢাকা ডেন্টাল কলেজ হাসপাতালে ইমার্জেন্সি, আইসিইউ এবং বঙ্গবন্ধুর মুর্যাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের প্রতিটি হাসপাতাল এখন নতুনরূপে সজ্জিত হয়েছে। কিন্তু আমাদের সমস্যা হলো পুরোনো জিনিসটাকেই মনে ধারণ করে রাখি, আমরা নতুন কিছু দেখতে পাই না। আমাদেরকে নতুন কিছু দেখতে হবে, এজন্য হাসপাতালগুলো ভিজিট করতে হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা স্বাস্থ্যসেবায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছি। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। এখন আমরা সেকেন্ডারি ও টার্শিয়ারি লেভেলে স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নের চেষ্টা করছি। জেলা-উপজেলা, মেডিকেল কলেজ ও ইনস্টিটিউটগুলোকে নবরূপে ঢেলে সাজানো হয়েছে। যেকোনো ইনস্টিটিউটে গিয়ে দেখবেন কত সুন্দর, কত পরিষ্কার ও আধুনিক যন্ত্রপাতিতে সজ্জিত। আপনি যদি নতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে যান, তাহলে দেখে আপনার চোখ জুড়িয়ে যাবে। এতো সুন্দর আমাদের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো।
তিনি বলেন, আমাদের ডাক্তার ছিল ১৪ হাজার, এখন ৩৩ হাজার ডাক্তার হয়েছে। বিগত চার বছরেই তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের নার্স ছিল ১৮ হাজার, এখন ৪৫ হাজার নার্স কাজ করছে। তবে আমাদের জনসংখ্যাও তো অনেক, আমরা চাইলেই তো রাতারাতি অবস্থার পরিবর্তন করতে পারব না।
জাহিদ মালেক বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তিনি দিনরাত ২৪ ঘণ্টা পরিশ্রম করছেন। দেশে থাকলেও তিনি সারাদিন কর্মব্যস্ত থাকেন, দেশের বাইরে গেলেও দেশের ভাবমূর্তি অন্যদের কাছে তুলে ধরতে দিনরাত কাজ করেন। প্রধানমন্ত্রীকে আরেকটি কারণে ধন্যবাদ জানাই, সেটি হলো তিনি সব ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতা করে থাকেন। আমরা যখন যে আবেদন করি, তিনি সেটা গ্রহণ করেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেন।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। এমন কী করোনার সময় অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের লকডাউন থাকলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো কাজ বন্ধ ছিল না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অনেক ভালো ভালো কাজ হচ্ছে। আমাদেরকে ধৈর্যধারণ করে সেগুলো দেখতে হবে। আজ ডেন্টাল কলেজের উন্নয়ন আরেক ধাপ এগিয়ে গেল।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের বিরোধীরা যাই বলুক, তারা তো যুদ্ধের সময়, সংগ্রামের সময়, নির্বাচনের সময় এমনকি করোনা যুদ্ধে তারা আমাদের সাথে ছিল না। তাদেরকে সমালোচনা টিভি পর্দায়, পত্রিকার পাতায় আমরা পেয়েছি কিন্তু মানুষের পাশে আমরা পাইনি।
আলোচনা সভার পূর্বে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঢাকা ডেন্টাল কলেজ হাসপাতালে ইমার্জেন্সি, আইসিইউ ও বঙ্গবন্ধুর মুর্যাল উদ্বোধন করেন। ঢাকা ডেন্টাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বোরহান উদ্দিন হাওলাদারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল আহমেদ মজুমদার।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মো. খুরশিদ আলম, ঢাকা ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বশির আহমেদ প্রমুখ।