বোরো মৌসুমের ধান কাটার শুরুতেই শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে শেরপুরে। অন্যদিকে শ্রমিকের মজুরিও বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে বিপাকে পড়েছেন জেলার পাঁচ উপজেলার লাখো কৃষক। ভুক্তভোগী কৃষকরা বলছেন, শ্রমিক সংকটের কারণে পাকা ধান তারা মাঠেই ফেলে রেখেছেন। এদিকে শ্রমিক সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার ভর্তুকি মূল্যে কৃষকদের ধান কাটার জন্য হারভেস্টার মেশিন ব্যবহারের সুবিধা দিয়েছে। ইচ্ছে করলে তারা সাশ্রয়ী মূল্যে ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন।
জেলা কৃষি ও খাদ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এবার জেলার সদরসহ নকলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার ৯২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। আর ৩৩ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করবে খাদ্য বিভাগ।
সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক জুলহাস মিয়া ও নবী হোসেন বলেন, চাল উদ্বৃত্ত এ জেলায় এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে ধান কাটা। শ্রমিক সংকটের কারণে একেকজন শ্রমিক দৈনিক মজুরি নিচ্ছেন এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকা। আর আকাশে মেঘ জমলে মুজুরি হয়ে যায় দ্বিগুণ। এভাবে শ্রমিকের মুজুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন লাখো কৃষক।
কৃষকরা জানান, সরকারিভাবে ধান কাটার জন্য ছাড়কৃত মূল্যে হারভেস্টার মেশিন দেওয়া হলেও তা চাহিদার তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। অনেক গ্রামের কৃষক হারভেস্টার মেশিন এখনো চোখেই দেখেনি।
ধানকাটা শ্রমিক ইউনুস শেখ ও তবারক মিয়া বলেন, সব রকমের খাদ্য পণ্যের দাম বেশি। তাছাড়া বোরো ধান কাটার সময়ও অল্প দিনের। এরপর তাদের থাকতে হয় বেকার। এ কারণে তারা মুজুরি বেশি নিচ্ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, একই সময়ে সব কৃষকের ধান কাটা শুরু হওয়ায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। এ জন্য সরকার ভর্তুকিতে হারভেস্টার মেশিন দিচ্ছে। এতে করে কৃষকেরা সহজেই ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবে।
ড. সুকল্প দাস বলেন, শেরপুরে হারভেস্টার মেশিনের সংকট দেখা দিলে প্রয়োজনে অন্য জেলা থেকে হলেও এখানে এনে ধান কাটার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।