• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৩ অপরাহ্ন

বিদেশি কোম্পানির গ্যাস বিল পরিশোধ করতে পারছে না পেট্রোবাংলা

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ১৩ জুন, ২০২৩

বহুজাতিক কোম্পানি থেকে গ্যাস-এলএনজি কিনে নির্ধারিত সময়ে মূল্য পরিশোধ করতে পারছে না বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। এ কোম্পানিগুলোর কাছে বর্তমানে ৪৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার বা প্রায় ৫ হাজার ৯ কোটি টাকা দেনা রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির। বকেয়া পরিশোধ করতে না পারায় মূল বিলের ওপর সুদযুক্ত হয়ে দেনার বোঝা বড় হচ্ছে। একই সঙ্গে নতুন করে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে এলএনজি আমদানিও ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ঋণ চাওয়ার পাশাপাশি বিদেশি সংস্থাগুলোর বিল পরিশোধে প্রয়োজনীয় ডলার সংস্থানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা চেয়েছে পেট্রোবাংলা।

জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ এবং পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, দেশে বতর্মানে দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে পাওয়া মোট গ্যাসের ৬০-৬৫ শতাংশ সরবরাহ করে আমেরিকান কোম্পানি শেভরন। স্থানীয় খনি থেকে উত্তোলন করে গ্যাস সরবরাহকারী আরেকটি কোম্পানি তাল্লো। আর দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় তরলীকৃত গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ করে কাতারের রাস গ্যাস এবং ওমানের ওকিউ ট্রেডিং। এছাড়া খোলা বাজার থেকেও এলএনজি আমদানি করা হয়। এ কোম্পানিগুলো বর্তমানে সম্মিলিতভাবে ৪৬ কোটি ৭০ লাখ ডলারের বেশি পেট্রোবাংলার কাছে পাওনা রয়েছে। বকেয়া থাকা বিলগুলোর মধ্যে ২ মাস থেকে ৬ মাসের পুরোনো বিল রয়েছে। আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার বাজার থেকে ডলার সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে না। ফলে ইনভয়েস মূল্যের সঙ্গে বিলম্ব ফি যুক্ত হচ্ছে।

সম্প্রতি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়, পেট্রোবাংলা এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে কয়েক দফা আলোচনা ও চিঠি চালাচালি করে। গত সপ্তাহে এক বৈঠকে বিল পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার সংস্থানের ব্যবস্থা করবে বলে জ্বালানি বিভাগকে আশ্বস্ত করেছিল বলে বৈঠকে উপস্থিত সূত্র জানিয়েছে। তিনি বলেন, দেশে বিদ্যুৎ ও শিল্প উৎপাদনের চাকা এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম সচল রাখতে গ্যাস সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখতে হবে। পাশাপাশি আমদানির পরিমাণ বা স্থানীয় উৎপাদনও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এমন অবস্থায় দীর্ঘমেয়াদে বকেয়া থাকলে গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হবে। কেননা বকেয়া পরিশোধ না করলে নতুন করে জ্বালানি সরবরাহ করবে না বলে কয়েকটি আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি জানিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন এক্ষেত্রে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। পেট্রোবাংলার চ্যালেঞ্জও বাড়ছে।

পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, বিবিয়ানা ও জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন করে শেভরন। স্থানীয় উৎপাদনের ৬০-৬৫ শতাংশ এবং মোট গ্যাস ব্যবহারের ৪৩ শতাংশই সরবরাহ করে এই আমেরিকান বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানিটি। গত বছরের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত শেভরনের কাছে পেট্রোবাংলার বকেয়া ২১ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এছাড়া বিশ্বের বৃহত্তম এলএনজি কোম্পানি কাতারের রাস গ্যাসের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির অধীনে এলএনজি আমদানি বাবদ ৬ কোটি ৯০ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং ওমানের ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেডের কাছে ৫ কোটি ৪০ লাখ ৬৬ হাজার ডলার বকেয়া রয়েছে। এছাড়া স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয় বাবদ বকেয়া রয়েছে ১১ কোটি ৩৮ লাখ ২০ হাজার। এই বকেয়া বিলগুলোর সিংহভাগ নিষ্পত্তি করতে হবে জনতা ব্যাংককে। এছাড়া অগ্রণী ব্যাংক ও আইএফআইসি ব্যাংককেও তাদের ব্যাংকে খোলা এলসির বিপরীতে যথাক্রমে- ৭ কোটি ৬৭ লাখ ৮০ হাজার এবং ৩৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার মূল্যের বিল পরিশোধ করতে হবে। এজন্য জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে পেট্রোবাংলা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ