• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৫ অপরাহ্ন

ভালোবাসার টানে সিলেটে নির্বাচনী প্রচারে প্রবাসীরা

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০২৩

সুদূর লন্ডন থেকে তারা ছুটে এসেছেন ভালোবাসার টানে। গত এক মাসে দুই সহস্রাধিক প্রবাসী সিটি নির্বাচন উপলক্ষে সিলেটে এসে পৌঁছেছেন। প্রতিদিন আসছেন। তাদের ভালোবাসার সেই মানুষ নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে তারা সারাক্ষণ ছায়া দিয়ে রেখেছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তারা আনোয়ারুজ্জামানের সঙ্গী হয়ে কখনো বা পৃথকভাবে প্রচারকাজে অংশ নিচ্ছেন। বাংলাদেশে প্রবাসীদের এমন ভোটের উৎসব অতীতে কেউ দেখেনি। সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থীদের পক্ষে আত্মীয়স্বজন-প্রবাসীরা প্রচারে যোগ দিতে দেশে আসেন। বিভিন্ন এলাকায় প্রবাসীরা প্রার্থীও হয়ে থাকেন।

বিভিন্ন স্থানে প্রবাসী জনপ্রতিনিধিও রয়েছেন। কিন্তু এমন দৃশ্য কখনো দেখা যায়নি। সিলেট সিটি নির্বাচনে প্রবাসীদের অংশগ্রহণের বিষয়টি নগরীতে সাড়া জাগিয়েছে। প্রবাসীরা বলছেন, সিলেট এবার তিলোত্তমা নগরী হবে। দেশে এসে আমরা একটি আধুনিক নগরীর ছোঁয়া পাব। কর্মঠ, নিষ্ঠাবান, মানুষের প্রকৃত সেবক হিসেবে আমরা তাকে চিনি। তাকে আমরা কাছে থেকে দেখেছি। আপদে-বিপদে তাকে কাছে পাওয়া যায়। তার হাত ধরে এই নগরীর উন্নয়ন হবে, সেটা আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি। আমাদের শ্রদ্ধার মানুষ, ভালোবাসার মানুষ আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নির্বাচিত হলে আমরা প্রবাসীরাও উপকৃত হব।

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী মানুষের সেবক হিসেবে একজন পরীক্ষিত মানুষ, আমাদের এই নগরীর উন্নয়নে আমরা তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে যাব। আমরা সুদূর প্রবাস থেকে ছুটে এসেছি তার ভালোবাসার প্রতিদান দিতে। আমরা বলতে এসেছি আমরা তোমার সঙ্গে আছি। তোমাকে নগর পিতার আসনে বসিয়ে তবে আমরা বিদেশ ফিরে যাব। নগরীতে আমাদের পরিজন-আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবকে নৌকার প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানকে ভোট দেওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেছি। আমরা নগরবাসীর কাছেও যাচ্ছি। নগরীর উন্নয়নে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানের সমর্থনে সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে দলমত নির্বিশেষে দেশে ছুটে আসা প্রবাসীরা এখন এখানে প্রচারকাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
যুক্তরাজ্য যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমেদ খান বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে রাজনীতি করছি। তার সঙ্গে প্রবাসের মানুষের যে সম্পর্ক, যে ভালোবাসা সেটা অতুলনীয়। আমরা সেই ভালোবাসার টানে ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য সিলেট এসেছি। কারণ প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে মনোনয়ন দিয়ে আমাদেরকে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমরা চাই যে, দেশ ভালো থাকুক। নগর ব্যবস্থাপনা ও বিদেশের সঙ্গে বিনিয়োগ-বাণিজ্য আরও ভালো হোক। আমাদের বিশ্বাস আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী যদি নির্বাচিত হন, তাহলে প্রবাসীরা দেশে বিনোয়োগে আরও উৎসাহিত হবেন। প্রবাসীরা সাহস পাবেন। স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আমরা প্রবাসীরাও প্রচার চালাচ্ছি।

আমি আমার ওয়ার্ডে প্রত্যেকটি বাসায় গিয়েছি। সাধারণ মানুষের কাছেও এই মেসেজটা গিয়েছে যে, আনোয়ারুজ্জামান উন্নয়ন করবেন। তার কোনো ব্যক্তিস্বার্থ থাকবে না। মানুষকেও আমরা উৎসাহিত করছি। ভোটাররাও আমাদেরকে উৎসাহিত করছে।
লন্ডন মহানগর যুবলীগের সহ-সভাপতি জুবায়ের সিদ্দিকী সেলিম বলেন, আনোয়ারুজ্জমাান চৌধুরী একজন কর্মঠ নেতা। তার স্বপ্ন দেশের মানুষের জন্য কাজ করা। আবার দলের সভানেত্রীও তাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। দল থেকে যখন তিনি মনোনয়ন পেলেন, প্রবাসীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তিনি মনে করেন, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নগরীর মানুষের জানমালের নিরাপত্তা, প্রবাসে থাকা বাঙালি কমিউনিটির স্বার্থে কাজ করবেন। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছেÑ সাধারণ মানুষ সরাসরি তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। আমাদের বিশ্বাস, তিনি উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারবেন। আগামী ৫ বছর তিনি নগরীকে একটি স্মার্ট সিটিতে পরিণত করবেন। সেই চিন্তাধারা থেকে আমরা তার সঙ্গে কাজ করছি। আমরা সহায়তা করছি। এটা আমাদের প্রয়োজনীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমাদের বিশ্বাস, তিনি তার রাজনৈতিক কর্মকা- এবং সিলেট সিটির মানুষের মণিকোঠায় চলে গেছেন। এতে সিলেটবাসীও উপকৃত হবেন।
নির্বাচনী পরিবেশ কেমন দেখছেন জানতে চাইলে জুবায়ের সিদ্দিকী বলেন, মানুষের ধারণা ছিল যে, নির্বাচনে ভয়ভীতি ও ধরপাকড় করা হবে। কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো দাঙ্গা-হাঙ্গামা কিংবা বিতর্কিত কর্মকা- চোখে পড়েনি। কারণ সিলেটের মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ আছে। সহনশীলতা আছে। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী আরিফুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এটা সুসম্পর্ক। ভ্রাতৃত্ব ও সহনশীলতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। নির্বাচনী পরিবেশ অনেক ভালো। তিনি আরও বলেন, প্রবাসের ওপর দেশের রেমিটেন্স অনেকাংশ নির্ভর করে। এখন দেশের মানুষের কাছে আমরা ভোট চাচ্ছি। এখানে আমাদের কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই, স্বার্থ নেই। দেশের স্বার্থে মানুষের উন্নয়নের জন্য ভোট চাচ্ছি। আামাদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগযোগ করছি। ওয়ার্ডের মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে ভোট চাচ্ছি। তাদের কাছে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি যে, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর মাধ্যমে আমরা উন্নয়ন করতে পারব।

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের মানবাধিকার সম্পাদক এমএ সারব বলেন, আসন্ন নির্বাচনে সভানেত্রী যখন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে মনোনয়ন দেন, তখন যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়েছিল। তিনি লন্ডন যুবলীগের সভাপতি থেকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পর্যন্ত হয়েছেন। আনোয়ারুজ্জামানের হাত ধরেই সমস্ত আন্দোলন-সংগ্রামে আমরা কাজ করেছি। তার হাতেগড়া বিশাল একটি কর্মিবাহিনী প্রবাসে আছে। বাংলাদেশ থেকে যারা লন্ডনে গেছেন, আদর্শিক টানে তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এভাবেই আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে ঘিরে প্রধানমন্ত্রীর একটি আস্থা-বিশ্বাস তৈরি হয়েছে। তাই দায়িত্ব ও কর্তব্য থেকে আমাদের এভাবে দেশে আসা।

আমরা প্রবাসীরা যারা এসেছি, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলেই দলের জন্য ও নৌকার জন্য কাজ করছি। নৌকার জন্য প্রচারে গিয়ে মানুষের কাছ থেকে আমরা আশাতীত সাড়া পাচ্ছি। কারণ আমাদের ছেলেবেলা এই সিলেটেই কেটেছে। মানুষের সঙ্গে আমাদের অন্তরঙ্গতা নিবিড়। এ ছাড়া এই অঞ্চলের বহু মানুষ যুক্তরাজ্যে বসবাস করে। এই এলাকার মানুষ আবার অনেক অতিথিবৎসল। প্রচারে গেলে মানুষ আমাদেরকে সাদরে গ্রহণ করে। এ যেন নৌকার নগরী মনে হয়েছে।
নির্বাচনী ইশতেহারে আমাদের কিছু দাবি-দাওয়া ছিল, আনোয়রুজ্জামান ভাই সেটা যোগ করেছেন। তিনি এ বিষয়ে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন। নির্বাচন উপলক্ষে প্রবাস থেকে আমাদের অনেক নেতাকর্মী এসেছেন। শুধু যুক্তরাজ্য নয়, কেউ যুক্তরাষ্ট্র থেকে, মধ্যপ্রাচ্য থেকে, ইউরোপের অন্য অনেক দেশ থেকে এসেছেন। তিনি বলেন, নির্বাচন পরিস্থিতি অত্যন্ত ভালো। একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ ও ফেয়ার নির্বাচন হবে। এখন পর্যন্ত আমরা কোথাও কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন হইনি। নৌকার জন্য আমরা নগরে ওয়ার্ডভিত্তিক কাজ করছি। তিন থেকে পাঁচজন করে প্রবাসী ভাগ হয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রচারকাজ করছি। এ ছাড়া সিলেট একটি অধ্যাত্মিক শহর ও পর্যটন নগরী। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকেরা আসেন। তাই তারা যেন এখানে এসে একটি স্মার্ট শহর দেখতে পান এবং স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন; নিরাপদ নগীর উপহার পান, প্রার্থীর কাছে এটাই প্রত্যাশা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ