কোভিড -২০-২১-২২ এ বিশ^ সব সেক্টরে ধ্বংসাত্মক। নিম্ন মধ্যবিত্তের দেশ হিসেবে রাজনৈতিক অবস্থাও নাজুক। এক চাকুরিজীবী ছাড়া বিশেষভাবে আর্থিকভাবে পড়ে। স্থায়ী কালটা দীর্ঘস্থায়ী হয়। স্বপ্ন দেখে কেউ কেউ বদল করতে পারে প্রায় প্রায় প্রত্যেকটি আবাসিক এলাকা ‘বাড়ি ভাড়া’ সাইনবোর্ড ঝুলতে থাকে। আকাশে ঢাকা সময় মত বাড়ি ভাড়া দিতে না পারায় বাড়িঅলার সাথে বচসা’র খবর প্রচার হয়।
শাহীনুর রেজা
তাই হাতে গোনা দু”একজন বাড়িওলা ভাড়া কম মাত্রা বলে খবর রিপোর্ট। স্কুল-কলেজ-বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র-বেতন এবং তদসংক্রান্ত ফি বলৎ যদি পত্র-পত্রিকায় অভিকদের নাখোশতার খবর পুন:পূন: প্রচার হয়। মালিক প্রতিষ্ঠান বা সরকার কেউ গায়নি। যেমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী ছিল না, ফলে শেখানে-পানির ব্যবহার হয়নি, তাই অভিভাবকদের বোঝানো যেতে পারে। কিন্তু লাভ হয়নি।
বিপদে পড়লে যে কেবল-বান্ধব আত্মীয়- বন্ধু খুব চেনা যায় তাই না, কারণ সংস্থাসহ অনেক বড় প্রতিষ্ঠানকে চেনা গেল। আমরা সঙ্গীত পত্রিকার কোভিড কালে শুধু সঙ্গীতশিল্প সংক্রান্ত দু’টা কথা বলিপ্রথর শিল্পীর সাথে একমত একই গানের গান, সুর, সঙ্গীত মালিক, প্রতীক, বাদ্যযন্ত্রী, স্টুডিও, বাদ্যযন্ত্র, সঙ্গীত একাডেমি, সঙ্গীত শিক্ষক সহ সকলে একাধারে আর্থিক ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। দু’একটি প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সম্মানি-বেতন পাওয়ার বাকিরা ছিল তথৈবচ।
আমি নিজে দেশের প্রাচীনতম একটি সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান বুলবুল একাডেমি অব ফাইন (বাফা)-এ কর্মরত আছি। এ প্রতিষ্ঠানের বেশ সুবিধা ঢাকাতে কাজ করছে। কোভিডের সময় এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা অত্যন্ত দূরত্বের মধ্যে পড়ে। মাসকে মাস অনেক বছর ধরে তাদের সম্মানী বাকি পড়ে। এটা দেখভাল কেউ নাই এখানে। টাকা-পয়সা না মুখের কথাতে সান্তনা পর্যন্ত শিক্ষকরা পাননি। এটা অত্যন্ত দু:খজনক ও আনন্দর।
নীরছি শিল্পকলামি করেছে অনেক গ্রুপ একা একা বাংলাদেশী ব্যক্তিতা করেছে। কিন্তু আপনি আমার ভাই ছিলেন প্রতিষ্ঠান বা প্রকাশক সংস্থার রেডিও-টিভি প্রায় সমাধানে। কিন্তু তারা তানি।
কোভিড- পরে রাজনীতি সঙ্গীত অঙ্গনে যে দূরত্ব হয়েছে তা কখনই এর জন্য ওঠা সম্ভব নয়। কারণ এ দীর্ঘ মহামারী আমাদের শারীরিক-আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি অনেক ক্ষতিসাধন করেছে। এর ফলে আমাদের সুকুমার অনুশীলনগুলি সংকুচিত হয়ে গেছে, যাচ্ছে।
গান বা নাচ না-হয় শখ করে কত-আধটুকু শিখলাম। কিন্তু ওহংঃৎঁসবহঃ এর অবস্থা আরো অনেক, কেউ এগুতে চায় না। নিতান্ত শখের দু’একজন গিটার কাঁধে নিয়ে একাডেমিতে ঘোরাঘুরিতেও বছর ঘুরতে না ঘুরতে ক্লাশ।
আবার/ইউটিউবের বদৌলতে ছেলেতে গানের বন্ধু আমাদের পুরানো আর এক্সপ্লেক্সের ফেসবুকের গানের আলোচনায়। ফেসবুকে দেখলাম, আমাদের চেনা একজন নজরুলের গান গেয়েছেন। কবিতাঁ গানটি ১২য় বেধেছেন আমি ৪ যোগ করেছি। কথাপাহা আপনি ৪ যোগ করুন কে? নিজে একটা ১২ গান প্রকাশ করে পরবর্তীতে ৪ গান যোগ করুন, নজরুল গান কেন? কোথা থেকে আপনি এ দু:সাহস গ্রন্থন?
যেদিন থেকে আমাদের ১৫০০ সিনেমা হল বন্ধ হতে ৫০-এ পৌছাছে। আমাদের গান-বাজনার অধ্যায় থেকে শুরু হয়েছে। পরিমাণ করে
১৫০০ সিনেমা হল তখন প্রতি সপ্তাহে ২টি ছবি রিলি। লক্ষ্য ১ লক্ষ্য ৫টি থাকতে ২ ১০টি গান গানে। গত ৫২ সপ্তাহ হলে মোট গান ৫২০টি। এত বেশি শক্তি সহ গানের জন্য সদস্য কলা-কুশ সদস্য সদস্য সদস্য এবং সবার মধ্যে অংশগ্রহণ মনোভাব বিরাজ করতো।
আজ শুধুমাত্র হলের সংখ্যাই আলোচনানি, সদস্য ১/২টি ছবি রিলিজ দেখতে পাওয়ার গান থাকে দু’টা। সিনেপ্ল্যাক্সের দৌরাত্বে সাধারণের কানে পৌছেনা। নিজেকে এখানে সঙ্গীতকে মনোনীত করা কঠিন।
এতএ হতাশার মধ্যে আনন্দের খড়বড় শিল্প-সাহিত্য-সংগঠিত চরিত্রের একটা অংশ ‘ঠাউন’শাখ ১৪৩০/এপ্রিল ২০২৩ সংখ্যাটি সম্পূর্ণ ‘বিস্ফোরক সংগী সংখ্যা’ হিসাবে প্রকাশ করেছে। সম্পাক মাজ জীবন নোভেল সাইজ এ পত্রিকাটি ৭২৮ পৃষ্ঠা হার সজ্জিত করেছেন। ঢাউস সাইজ এ সঙ্গীত সংখ্যাতে বৈচিত্রপূর্ণ রচনা ও লিখিত আলোচনার আয়োজন।
যেমন
পূর্ববাংলায় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতচর্চা: ড. নূরুল আনোয়ার-সম্পাদনা: অজিত দাশ, বাঙলার গীতরঙ্গ: এর সংকট ও উত্তর পাঠসূত্র-কামালায়ন কবীর, বুদ্ধ নাটকের গীতবাণী ‘চর্যাপদ’-গ উত্তম-ড. জিন বোদ্ধা ভিক্ষুম শিখি, তার কাব্যিক ওংগীতিক প্রকাশ-মুহাম্মদ তানিম নওশাদ, সাংখিক শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে ইসলামী কাণ্ড-মাহমুদুর ইসলাম, পপি নিল ব্যানার্জির সাথে আলাপিতা-অলাপিতা-অবাদ: রাফনিয়া সানলিব, সঙ্গীত ও গানের অর্থনীতি গাউন-ফ্রেদিক জেসন, ধনুবাদ সঙ্গীত সংস্কৃতি: সঙ্গীত কি সামন্ত তান্ত্রিক?-রেগুলা বার্কহার্স্ট কোরেশি-অবাদ: গৌরাঙ্গ হালদার, সঙ্গীত ও ভবিষ্যত-জ্যাক আটালি-অনুবাদ: মোহাম্মদ সাঈদ হাসান খান, রবীন্দ্রনাথের গান: কথা ও সুর সংঘাত-অভ্রু বস রবীন্দ্রিক অভিবাদন: ব্যক্তিগত থেকে নর্ব্যন্ত যাত্রা চক্রবর্তী, কলিম শরাফীরের সাথে আলাপচার-কুররাতুল-আইন-তাহমিনা, নজরুল-সংগীত-তাহায়াসিন, নজরুল ও অজয় ভট্টাচার্য: সাংগীতিক পরস্পরা-মাসুদ রহমান, কমল দাশগুপ্ত: সর্বোচ্চ পূর্ণিমারাতে-সালাহ আহমেদ জুয়েল, বিষ্ণুপ্রসাদ রাভা: অসম বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যের অনন্য নাম-বাসুদেব দাস, আসা চররির লোকসংগীত-আনোয়ার হোসে, ওস্তাদ আজখোর ইসলামের সাথে আলাপচার, ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম গান গাই, ক্ষমতাই গান গাই’-প্রিয়দর্শী চক্রবর্তী, বাংলা গানের আঙ্গিনায় সলিল চৌধুরী-সোমেনজিৎ চক্রবর্তী, মীর দেব বর্মণ: বাংলা গানের নিভৃতচারিণী গীতিকার-মনোজিৎকুমার দাস, নিবারণ পিত: একান্ত লোকবি-কঙ্ক ভণ্ডাচার্য, কল আহমেদ, আমাদের অগ্নি-অমল, আকাশ গণসংগীত: বাগের-চেতনার গান-অমিত রঞ্জন দেব, অগ্নিঝরা গান-শামীম আমিনুর রহমান, বাংলা বেতার কেন্দ্র ও দল-এ.কে.এম. কৌশিক আহমেদ, সুন্দরবন আন্দোলনের গান: প্রবণ ও দিশা-বীথি ঘোষতা, পালাকার সুনীল কর্ম ও ফরহাদ মজহারের আলাপিতা-মোহাদ রোমেল, রাজনৈতিক পরিস্থিতি পটের-রুখসানা কাজল, বহু গান-সুকন্যা দত্ত,
, মনোমোহন দত্তের সমর্থনবাদী সঙ্গীত-নূরনবী শান্ত, মানবতা লোকজ বিপুল বিজয় সরকার-মো. রবিউল ইসলাম, বিচ্ছেদগান: বেদনা নির্বাপণে কথা ও সুরের ঐন্দ্রজালিক শক্তি-শেখ জাহিদ আজিম, শিল্পীর দায় এবং আবদুল আলীমের এক প্রার্থী-মো. মনজুরুল ইসলাম, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও বেঙ্গল মিউকি ফেস্টিভ্যাল-ড. মিজানুর রহমান নাসিম, নাটক সঙ্গীত-প্রদীপ দেওয়ান, সোলায়ে ‘গোলাপজান’ নাটকে সঙ্গীত-শুভাশিস সিনহা, গানের নাটক-দেবলীনা ঘোষিত, ঈশ্বর কৃপাসিন্ধু রায়ের সাথে আলাপচারিতা-মিজানুর রহমান নাসিম, কোমলমতি রুনা লায়লা-আব্দ গান আল মুক্তির সাকিন, কিংবদন্তি রুনা লায়লা আব্দর গান। আসলাম আহসান, রফিকউজ্জামান: সঙ্গীতের স্বপ্ন দর্শনী-শহীদ কাউন্সিল ফরায়, গঙ্গেন্দা: মান্দি এক বাদ্যযন্ত্রের বিশ^ভ্রমণ-ভেল পার্থ, খাসি আদিবাসী: ভাষা সঙ্গীত-সিলভানু লামিন, হাজং গান: কর্মমুখী উদ্দীপক ওবি-জবর রায়, আচিক জনতার কর্মী সমর্থক -অরন্য চিরতান, চাকমা গানের উত্স: ইতিহাস, প্রকৃতি ও জীবনদর্শন-অববে চাকমা, বেদে সঙ্গীত ও সর্পণ যন্ত্র তুবড়ি-রঞ্জনা বিশ^াস, ভাওয়াইয়া ভূমিপুত্র বর্মার সঙ্গে আলচারিতা-মো। মনজুরুল ইসলাম, জিভের আধেড়ে কথা বলে, জিভেই থাকে মজা-রজত কান্তি রায়, ফকির ইয়াছিনের আত্মপরিভ্রণ-মোস্তাক আহমাদীন, বাউলদুর রহমান-আকাশ চেয়ারম্যান, বীর উকি মুন্সীর খবরদার-ওয়াহিদ সুজন, মামুদ জান: মজলিশপুর হাওর-মরসিফ মরসিফ -নূর, পাগলা কানাই: লোকায়ত দর্শনের সরল ভাষাকার-বঙ্গ রাখাল, সাগরপাড়ের গান: ঊমি গর্জন-মানিক বিরাগী, শিক্ষা ওফলা সঙ্গীত-কারী সেনগুপ্তা, শাহ গান প্রাথমিক-নাজিব হাদার, লালন-আহমদ শরী।
৮০০ টাকা মূল্যের সঙ্গীত সংখ্যা ‘উঠান’- এর প্রচ্ছদ করেছেন অজিত দাশ। দলীয় যোগাযোগ-৬/৫এ সৈয়দ রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
সাহিত্য ও সঙ্গীত লেখক ব্যক্তিত্ব, ভাড়প্রাপ্ত সম্পাদক : শাহিনুর রেজা
shahinurmusic@gmail.com