• রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন

আমিরাতের ওপর কঠোর অবরোধ আরোপের হুমকি সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের!

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০২৩
ফাইল ছবি

সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান –

দাবি মানা না হলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওপর কঠোর অবরোধ আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। গত বছর সাংবাদিকদের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় এ কথা জানিয়েছিলেন বলে প্রকাশ করেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

আঞ্চলিক নীতিমালা এবং ওপেক সীমা নিয়ে মতপার্থক্য নিয়ে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ব্যবধানের প্রেক্ষাপটে ওই হুমকি দেয়া হয়েছিল।

ডিসেম্বরে ‘অফ-দি-রেকর্ড’ ব্রিফিংয়ে ক্রাউন প্রিন্স সাংবাদিকদের বলেন, তিনি আবু ধাবির কাছে দাবির একটি তালিকা পাঠিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন যে আমিরাত যদি আঞ্চলিক রাজনীতিতে সৌদি আরবের অবস্থান ক্ষুণ্ন করতে থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

তিনি ওই বৈঠকে উপস্থিতদের বলেছিলেন, ‘আমি কাতারের সাথে যা করেছিলাম, এটা [অবরোধ] তার চেয়েও কঠোর হবে।’

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে কাতারের ওপর অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক অবরোধ আরোপ করে সৌদি আরব। আবু ধাবি ও বাহরাইনের সহায়তায় তিন বছর স্থায়ী ছিল ওই অবরোধ। ২০২১ সালে সৌদি আরব ও কাতারের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।

উপসাগরীয় অঞ্চলে প্রাধান্য বিস্তারে প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও মোহাম্মদ বিন জায়েদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতে, তারা ওই সময় ছয় মাস পরস্পরের সাথে কথাও বলেননি।

সৌদি ক্রাউন প্রিন্স ওই সময় সৌদি সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে আমিরাত ‘আমাদের পিঠে ছুরি চালিয়েছে’ এবং তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘আমি কী করতে পারি, তা তারা দেখবে।’

দুজনের মধ্যে এই ভাঙন মধ্যপ্রাচ্য এবং বৈশ্বিক তেল বাজারে ভূরাজনীতি এবং অর্থনৈতিক প্রভাব বাড়ানোর বৃহত্তর প্রতিযোগিতাকে প্রতিফলিত করছে। এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা হ্রাস পাওয়ায় তাদের দ্বন্দ্ব আরো তীব্র হয়েছে। উভয়েই এখন রাশিয়া ও চীনের সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে চাচ্ছে।

আবার তাদের দ্বন্দ্ব মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। তারা আশঙ্কা করছে, এ ধরনের দ্বন্দ্বের ফলে ইরানের বিরদ্ধে ঐক্যবদ্ধ উপসাগরীয় জোট গঠন করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাছাড়া মুসলিম দেশগুলোর সাথে ইসরাইলের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার কাজও ব্যহত হবে।

ইয়েমেন ও সুদানে পরস্পরবিরোধী অবস্থানে রয়েছে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। তেলের দাম বাড়ানোর সৌদি প্রয়াসেরও বিরোধী আমিরাত।

এদিকে ইরানের সাথে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিক করায় বিস্মিত হয়েছে আমিরাত।

দুজনের মধ্যকার সম্পর্ক মেরামতের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল বাইডেন প্রশাসন। তারা মে মাসে মোহাম্মদ বিন সালমান এবং আমিরাতের প্রেসিডেন্টের ছোট ভাই ও আমিরাতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা তানুন বিন জায়েদের সাথে একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করে দেয়।

সৌদি ক্রাউন প্রিন্স ওই সময় তানুনকে বলেন যে আমিরাতের উচিত হবে না ইয়েমেনে সৌদি-নেতৃত্বাধীন যুদ্ধবিরতিতে হস্তক্ষেপ করা এবং আবু ধাবিকে ছাড় দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

অবশ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল সূত্র জানায়, পরে ক্রাউন প্রিন্স সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যাপারে কোনো নীতি পরিবর্তন না করার জন্য তার উপদেষ্টাদের নির্দেশ দেন।
তিনি তাদের বলেছিলেন, ‘তাদের আর বিশ্বাস করা যায় না।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ