ভোলার চরফ্যাশনে কলেজ ছাত্র মোরশেদ আলমের প্রেমে মজেছিলেন দুই তরুণী। এই দুই প্রেমিকার একজন বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে ৩ দিন ধরে অনশনে আছেন।
এ অনশনের খবর শুনে আরেক প্রেমিকা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আর অভিযুক্ত প্রেমিক মোরশেদ নিজ ঘরবাড়ি ছেড়ে এখন পলাতক।
এদিকে অনশনকারী প্রেমিকাকে ঘরে আটকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মোরশেদের পরিবারের বিরুদ্ধে। তবে পুলিশ এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ। এ ঘটনা দেখতে উৎসুক জনতা সকাল-বিকাল ভিড় করছেন প্রেমিক মোরশেদের বাড়িতে।
বৃহস্পতিবার বিকালে চরফ্যাশন উপজেলার চর মানিকা ইউনিয়নের করিমপাড়া গ্রামের মাওলানা সামসুদ্দিনের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে ওই তরুণী অনশনে বসেন।
ওই তরুণীর দাবি, সামসুদ্দিনের কলেজপড়ুয়া ছেলে মোরশেদ আলমের সঙ্গে তার দুই বছর প্রেম চলছে। তরুণীর পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হলে প্রেমিক মোরশেদের প্ররোচণায় গত ১২ জুলাই বাড়ি থেকে ৬০ হাজার টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে আসেন। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটান। ওইদিন দক্ষিণ আইচা গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের সামনে রেখে মোরশেদ টাকা পয়সা নিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। নিরুপায় হয়ে ওই তরুণী মোরশেদের বাড়িতে এসে বিয়ের দাবিতে অনশন করে।
শুক্রবার বিকালে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলের ঘরের মধ্যে মেয়েটিকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তার সঙ্গে কাউকে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না।
মেয়ের মায়ের অভিযোগ, তার মেয়েকে পিটিয়ে আহত অবস্থায় আটকে রাখা হয়েছে।
এদিকে মোরশেদের বাড়িতে এক প্রেমিকার অনশনের খবরে তার আরেক প্রেমিকা চরফ্যাশন উপজেলার এওয়াজাপুর গ্রামের মো বাচ্চুর মেয়ে নাবিলা (১৯) বৃহস্পতিবার রাতে ঘরের ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। নাবিলার সঙ্গে মোরশেদের পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হয়েছিল।
জানা যায়, মোরশেদের বাবা মাওলানা সামসুদ্দিন স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে মোরশেদ দ্বিতীয় সন্তান। আর নাবিলার বাবা শ্রম মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেন। তিন বোনের মধ্যে নাবিলা সবার বড় ছিল।
শশীভূষণ থানার ওসি এনামুল হক জানান, আত্মহত্যার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ক্ষোভ-হতাশা থেকে নাবিলা আত্মহত্যা করেছেন। পরিবারের অভিযোগ না থাকায় লাশ অভিভাবকদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে দক্ষিণ আইচা থানার ওসি শাখাওয়াত হোসেন বলেন, মোরশেদের বাড়িতে এক প্রেমিকার অবস্থান এবং অনশনের খবর পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কিন্তু এখানে পুলিশের কিছু করার নেই। ভুক্তভোগী চাইলে আদালতে যেতে পারে।