আবাসন সংকট নিরসনের জন্য ৩০০ ছাত্রীকে অন্য হলে স্থানান্তরসহ তিন দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বাংলাদেশ কুয়েত-মৈত্রী হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুর ১ টার দিকে তারা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ কুয়েত-মৈত্রী হল থেকে অন্তত ৩০০ শিক্ষার্থীকে অন্য হলে স্থানান্তর করা, হলের আসন সংখ্যার সঙ্গে সমন্বয় রেখে শিক্ষার্থী অ্যালোটমেন্ট দেওয়া এবং মূল ভবনের প্রতি কক্ষে ৬ জনের বেশি শিক্ষার্থী বরাদ্দ না দেওয়া। হলটিতে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর আসন বরাদ্দ দেওয়ায় পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে জানান তারা। দাবির পক্ষে তারা হলটির ১০৫ শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরও সংগ্রহ করেছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, বাংলাদেশ কুয়েত-মৈত্রী হল ছোট হলেও প্রতিবছর বেশি ছাত্রী এখানে অ্যালোটমেন্ট দেওয়া হয়। ফলে অন্যান্য হলে ছাত্রীরা ছয় মাসের মধ্যে বৈধ আসন পেলেও এই হলে পাওয়া যায় না। হলটিতে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রীরা চতুর্থ বর্ষে উঠেও আসন পাননি। এর পাশাপাশি ২০২০-২১, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের আসনও অনিশ্চিত হয়ে আছে। এরইমধ্যে ২০২২-২৩ সেশনে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের এই হলে অ্যালোটমেন্ট দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ চারটি সেশনের শিক্ষার্থী এই হলটিতে আসনের অপেক্ষায় রয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, হলের মূল ভবনে পাঁচটি অতিথি কক্ষে চাপাচাপি করে ১০০ শিক্ষার্থী বার্ষিক চার হাজার টাকা প্রদান করে অবস্থান করেন। তাদের জন্য মাত্র তিনটি ওয়াশরুম রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষিত সিকদার মনোয়ারা ভবনের তৃতীয় তলার ১৫টি অতিথি কক্ষে ১১০ জন শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন। তাদের জন্য রয়েছে মাত্র ২টি ওয়াশরুম। দ্বিতীয় তলায় ২৪ শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে একটি ওয়াশরুম। হলে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে জানান।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, হলের অতিথি কক্ষে শিক্ষার্থীদের চাপ কমানোর জন্য বর্তমানে মূলভবনের প্রতিটি কক্ষে ৬ জনের জায়গায় ৭ জনকে আসন দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে কক্ষগুলো বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। হলের মধ্যে পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আবার হলটির মূল ভবনে কোনো রিডিং রুমও নেই। ঝুঁকিপূর্ণ সিকদার মনোয়ারা ভবনেই হলের দুটি রিডিরুম রয়েছে। কোনো রান্নাঘর না থাকায় মেয়েদেরকে নিজেদের কক্ষেই রান্না করতে হয় বলেও জানান তারা।
এর আগে, গতকাল রবিবার শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের কাছে দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য ‘অসহযোগিতাপূর্ণ’ আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেন তারা। সেসময় অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।