• বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৬ অপরাহ্ন

জঙ্গিদের নিয়ে অভিযানে নেমেছে সিসিটিসি

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৩
সিসিটিসি প্রধানের নেতৃত্বে অভিযানে নামা দল

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের টাট্টিউলি গ্রাম ও আশপাশের পাহাড়ি এলাকায় আরও ‘জ‌ঙ্গি আস্তানা’ আছে কি না এর সন্ধানে অভিযানে নেমেছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিসিটিসি) ইউনিট। মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সকালে আটক জঙ্গিদের নিয়ে অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীটির দল।

অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সিসিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান। এর আগে গতকাল সোমবার সকালে কর্মধা ইউনিয়নের আছকরাবাদ বাজার থেকে স্থানীয় লোকজন ১৭ জনকে জঙ্গি সন্দেহে আটক করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও সিটিটিসি ঘটনাস্থলে এসে তাদের হেফাজতে নেয়।

কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আটকদের সঙ্গে কথা বলার পর সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মঙ্গলবার নতুন আরেকটি আস্তানায় অভিযান চালানো হবে। তারপরই আমরা এই অভিযান ও আটকদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।’

এর আগে শুক্রবার রাত থেকে কর্মদা ইউনিয়নের পূর্ব টাট্টিউলি গ্রামের বাইশালীবাড়ি এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১০ নারী-পুরুষকে আটক করেছিল সিটিটিসি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছিল, তারা নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’র সদস্য। তাদের আটকের আগে ৭ আগস্ট ঢাকার মিরপুর থেকে একই সংগঠনের আরও ১০ জনকে আটক করা হয়েছিল। পরে ১১ আগস্ট ফরহাদ নামের একজনকে ঢাকা থেকে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্য ধরেই শুক্রবার কুলাউড়ার পূর্ব টাট্টিউলি এলাকায় অভিযানে নেমেছিল সিটিটিসি।

গত ১২ আগস্ট অভিযান পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি সাংবাদিকদের ধারণা দিয়েছিল, হয়তো সেই আস্তানা থেকে কিছু লোক পালিয়ে গেছে। তারা আশপাশেই কোথায় অন্য আস্তানায় আত্মগোপন করেছে।

সেই থেকে এলাকায় সাধারণ মানুষের নজরদারি ও সচেতন থাকায় ১৭ জনকে আটক করা গেছে। এর জন্য স্থানীয়দের ধন্যবাদ জানিয়ে সিটিটিসির প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এখানে যারা আটক আছেন তাদের আমরা পরিপূর্ণভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারিনি। এটা সময়সাপেক্ষ বিষয়। তবে আমাদের মনে হচ্ছে, সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্যারেক্টার থাকতে পারেন। এরই মধ্যে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, সেখানে একজন চিকিৎসক আছেন। তার স্ত্রী দুদিন আগে পূর্ব টাট্টিউলি থেকে আটক হয়েছিলেন। চীন থেকে পড়াশোনা করে আসা দুজন প্রকৌশলীও আছেন।

আটক ওই চিকিৎসক হচ্ছেন সোহেল তানজিম রানা (২৭)। তিনি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের পোড়াবাড়ি গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নানের ছেলে। সিরাজগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করতেন। স্ত্রী মাইশা ইসলাম হাফসাকে (২০) নিয়ে কর্মস্থলের পাশেই ভাড়া বাসায় থাকতেন। মাইশা শনিবার পূর্ব টাট্টিউলি থেকে আটক হয়েছিলেন। ২৬ জুলাই থেকেই তারা নিখোঁজ ছিলেন বলে পরিবার জানিয়েছে।

আটকদের মধ্যে নতুন জঙ্গি সংগঠনের প্রধান আছেন কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা এখনও এসব ব্যাপারে নিশ্চিত নই। তবে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র আছে। আরও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ বিষয়ে জানানো হবে। এগুলো খুব স্পর্শকাতর বিষয়, সময়ের ব্যাপার। তারা কেউ হঠাৎ এখানে আসেনি বা ঘর ছাড়েনি। আরও জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানা যাবে, কেন তারা এই পাহাড়ি অঞ্চলে এসে আস্তানা গেড়েছিল।’

ব্রিফিংয়ের আগে ও পরে আটকদের সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটিটিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, অভিযান পরিচালনার স্বার্থেই এটা করা হয়েছে। তখন হয়তো সবাইকে হাজির করা হতে পারে। সেই অভিযান সফল করতে সিটিটিসি সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করে।’

সিসিটিসি প্রধান বলেন, ‘উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে পুলিশ সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। একদম নতুন একটি জঙ্গি সংগঠন মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু জনগণের সহায়তায় আমরা অনেককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ