• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১০:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
মোদি বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারতে নির্বাচনের চেষ্টা করছেন : কেজরিওয়াল নেতানিয়াহুকে গাঞ্জের পদত্যাগের আলটিমেটাম ভারতে তৈরি কোভ্যাক্সিন ছিল ক্ষতিকারণ, তোলপাড় পুতিন চীন থেকে যে বার্তা পেলেন ১৯ বার নিশ্চিত মৃত্যুকে জয় করে এখন বিশ্ব রাষ্ট্রনায়ক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র হামাস প্রধানকে হত্যা করে গাজা যুদ্ধ শেষ করতে চায় ! ইসরাইল গাজা যুদ্ধে হেরে যাচ্ছে : সাবেক মোসাদ উপ-প্রধান জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন: রাষ্ট্রপতি সবজি বহনকারী ট্রাক-লরি থেকে চাঁদাবাজি করছে নগর কর্তৃপক্ষ : সাঈদ খোকন পিটিয়ে ২ তরুণীকে আহত করার অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে

বিশ্ব শিক্ষক দিবস ও নন এমপিও শিক্ষক

আপডেটঃ : বুধবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৭

সফিউল্লাহ আনসারী॥
শিক্ষাই জাতীর মেরুদন্ড। শিক্ষকরা আমাদের, আমাদের সন্তানের জীবন গড়ার কারিগড়। শিক্ষকরা আমাদের শেখান আর আমরা শিখি। আর এ শেখা আমরা প্রতিদিন শিখি। ইচ্ছায় শিখি অনিচ্ছায় শিখি। শিক্ষার যেমন শেষ নেই তেমনি শিক্ষকের মর্যাদা ও সীমাহীন। একজন শিক্ষক আমাদের, মানে শিক্ষার্থীদের জীবন গড়ার কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন সারা জীবন। মা-বাবা সন্তানের জন্মদাতা হলেও শিক্ষক তার জীবন আশীর্বাদ হয়ে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে সুন্দর জীবন গড়ে তুলতে সাহায্য করেন পরম মমতায়।
শিশু বয়স থেকে আমাদের শিক্ষার হাতে খড়ি মা-বাবার হাত ধরে হলেও শিক্ষকের সান্যিধ্য ছাড়া শিক্ষার্থীর জীবন অপুর্ণ থেকে যায়। আমাদের বাবা-মা‘ই আমাদের প্রথম শিক্ষা গুরু, আমাদেরকে মানুষ করে গড়ে তোলা অন্যতম শিক্ষক। আমাদের দায়বদ্ধতা, আমাদের বিশ্বাস, আমাদেও বর্তমান-ভবিষ্যত, ভালো-মন্দ, উচিত-অনুচিত, চরিত্র গঠন, পছন্দ-অপছন্দ, সম্মানবোধসহ সমস্ত কিছুই শিখি পরিবরের গুরুজন, অভিভাবকদের কাছ থেকেই। আমাদের বড় হয়ে উঠা, আমাদের জীবনগঠন, আমাদের সফলতা সব কিছুই মা-বাবা আর বড়োদের কাছ থেকেই। জীবনের প্রথম পাঠ থেকে শুরু করে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত মা-বাবা‘ই শিক্ষক হয়ে থাকেন। বলা যায় মা এবং বাবাই প্রথম শিক্ষক।
এই জীবন গঠনের জন্য একাডেমিক স্তর পেড়িয়ে সরকার নির্ধারিত নিয়ম মাফিক আমাদেরকে বিদ্যালয় ও বিশ্ব বিদ্যালয়ে পা রাখতে হয় শিক্ষা গ্রহন করার জন্য। সেখানে যে মহান মানুষগুলো আমাদের পরম মমতা ও দায়িত্ববোধে জ্ঞাণের আলোয় আমাদের জীবনকে আলোকিত করেন সেই সম্মানিত ব্যাক্তিগন আমাদের শিক্ষাগুরু শিক্ষক। আমাদের জীবনে তাঁদের গুরুত্ব অপরিসীম। সৎ নাগরিক তথা মানুষ গড়ার কারিগর তাঁরাই। শিক্ষকের অবদান অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই একজন শিক্ষার্থীর জীবনে।
৫ অক্টোবর বিশ্ব ‘শিক্ষক দিবস’। বিশ্বের অগণিত শিক্ষকদের আদর্শগত মহান কর্মকান্ডের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাঁদের পেশাগত অবদানকে শ্রদ্ধায় স্বরণ করার জন্য সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই বিশ্ব শিক্ষক পালন করা হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়।’ ইউনিসেফ থেকে, ৫ অক্টোবর ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।’
“বিশ্বের সর্বমোট ১৯টি দেশে অক্টোবর মাসের ৫ তারিখ ‘টিচার্স ডে’ পালিত হয়। দেশগুলি হলো-কানাডা, জার্মানি, রাশিয়া, বুলগেরিয়া, আর্জাবাইজান, ইন্দোনিয়া, লিথোনিয়া, ম্যাকেডোনিয়া, মালদ্বীপ, নেদারল্যান্ড, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, কুয়েত, কাতার, রোমানিয়া, সার্বিয়া, ইংল্যান্ড, মাউরেটিয়াস, মালদোভা । আবার বিশ্বের অন্য ১১টি দেশে ২৮ ফেব্রুয়ারি দিনটিতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস চালু। দেশগুলি হল মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনেশিয়া, লিবিয়া, ইজিপ্ট, জর্ডান, সৌদি আরব, ইয়েমেন, বাহরাইন, ইউ এ ই, ওমান। ১৯৯৪ সালের ৫ অক্টোবর থেকে ইউনেস্কোর ঘোষনায় ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ দিনটির যাত্রা শুরু।”এছাড়াও প্রায় ১০০টি দেশে এ দিবস পালিত হয়।
নানা প্রতিকুলতা পেরিয়ে আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থা আজ একটা শক্ত ভীতের উপর দাড়িয়েছে। আর এ কাজে সরকারের উদ্যোগ ও কর্মসুচিকে বাস্তবায়নে শিক্ষকের ভুমিকা অনেক। বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের ধারায় উদ্ভাসিত আমাদের দেশে আজো অবহেলিত শিক্ষক সমাজ। বছরের পর বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদানরত শিক্ষকমন্ডলী এমপিওভুক্তির আশায় আজো দিন গুনছেন।
আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবস। শিক্ষাই জাতীর মেরুদন্ড আর শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। শিক্ষার সাথে শিক্ষকদের স¤পর্ক নিবিড়। শিক্ষকের পরিশ্রম ছাড়া শিক্ষার প্রসার ও বাস্তবায়ন সম্ভব না। তাই শিক্ষার গুরুত্বের সাথে সাথেই শিক্ষকের ভালো-মন্দ ও তাদের অধীকারের কথা গুরুত্বসহকারে ভাবতে হবে। নন এমপিও ভাগ্যাহত শিক্ষকদের দুর্বিসহ জীবন থেকে মুক্তি দিতে দ্রুত এমপিও প্রদান করাও বর্তমান সরকারের খেয়াল করা উচিত। নইলে শিক্ষক দিবস তাদের জীবনে সম্মানের বদলে কষ্টকেই বাড়িয়ে দেবে।
শিক্ষকরা জাতীকে শিক্ষিত করে দেশের শিক্ষার্থীদের জীবন গড়ার কারিগড় হিসেবে জ্ঞাণ বিলিয়ে যাচ্ছেন অকাতরে। অথচ এই ভাগ্যহত শিক্ষকরা তাদের প্রাপ্য অধীকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অজানা কারনে। বাংলাদেশে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় থাকলেও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় লক্ষাধিক শিক্ষক বেতন-ভাতা না পেয়ে অবহেলিত-বঞ্চিত অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন।
শিক্ষক দিবস আমাদের কাছে মহান দিবস হিসেবে শিক্ষকের প্রতি সম্মানবোধকে জাগ্রত করে। তাঁদের আদর্শকে আমাদের জীবন চলার পাথেয় হিসেবে গ্রহন করার উৎসাহ যোগায়। গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল সে কারণেই বলেছেন-‘যাঁরা শিশুদের শিক্ষাদানে ব্রতী তাঁরা অবিভাবকদের থেকেও অধিক সম্মাননীয়’।
পিতামাতা আমাদের জীবনদান করেন আর শিক্ষকরা সেই জীবনকে সুন্দর ভাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করেন। আর এ কারনেই মা-বাবার মতো বা কোন কোন ক্ষেত্রে শিক্ষকদেরকে সম্মান করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কতর্ব্য। বিশ্ব শিক্ষক দিবসের সার্থকতা শুধু তাঁদের প্রাপ্য অধীকারগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন ও নন-এমপিও শিক্ষকদের এমপিও ভুক্তির আওতায় আনা এবং শিক্ষাগুরুর সম্মানকে সমুন্নত রাখা। বিশ্ব শিক্ষক দিবস সফল ও সার্থক হোক।-(তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট, ইউকিপিডিয়া)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ