ফরিদপুর প্রতিনিধি॥
রাজনীতি শুরু বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল দিয়ে। দলীয় পদেও আছেন। এখন সেই পরিচয় গোপন করে নিজেকে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দেন তিনি। রাজনৈতিক পরিচয় পরিবর্তনের এই অভিযোগ শেখ মো. চয়নের বিরুদ্ধে। তার বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নে। চয়ন এখনও নিজ উপজেলা ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন। অথচ নিজেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্রলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির কোনো পদেই নেই চয়ন। আগেও কোনো কমিটিতে ছিলেন না। মুকসুদপুর উপজেলা ছাত্রদলের এক প্রত্যয়নপত্র সূত্রে জানা যায়, শেখ মো. চয়ন ২০১৩ সালের ১৩ এপ্রিল তাকে গোবিন্দপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। পরে একই বছরের শেষ দিকে উপজেলা ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক পদ পান তিনি।
গোবিন্দপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ গত ১০ মে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কার্যনির্বাহী সংসদকে লেখা চিঠিতে জানায়, শেখ মো. চয়ন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। নির্বাচনের পর সে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যোগ দেয়। সরকারি মুকসুদপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগ এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ২০১৪ সালের আগে কখনোই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। ইউনিয়ন যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ আলাদা চিঠিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে শেখ চয়ন সম্পর্কে জানিয়েছে। চিঠিতে তাকে ‘সুবিধাবাদী হাইব্রিড’ নেতা বলে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনগুলো।
এছাড়া গত ২৮ আগস্ট উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আতিকুর রহমান মিয়ার স্বাক্ষর করা এক প্রত্যয়ন পত্রে বলা হয়, শেখ চয়ন আওয়ামীলীগের সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে কিছুদিন আগে একটি প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছিল উপজেলা আওয়ামী লীগ। পরে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে তার জড়িত থাকার বিষয়টি জানার পর সেই প্রত্যয়নপত্র বাতিল করেছেন তিনি। এর আগে ১৫ জুন ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ এক জরুরি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চয়নকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রদলের সঙ্গে তার জড়িত থাকার বিষয়টি গোপন করায় ছাত্রলীগ তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শেখ মো. চয়ন স্বীকার করেন যে, তিনি ছাত্রলীগের কোনো কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেই। তবে কেন তিনি এ পরিচয় দিয়েছেন? জবাবে তিনি জানান, আগে এই পরিচয় দিলেও এখন দেন না। ছাত্রদলের সঙ্গে তার জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি এসবের কিছুই জানি না।’