হাই সুগার বা ডায়াবেটিস একটি প্রাণঘাতী রোগ। এটিকে বশে না রাখতে পারলে কিডনি নষ্ট হওয়া থেকে শুরু করে নিউরোপ্যাথি, গ্লকোমাসহ একাধিক জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে চাইলে যেনতেন প্রকারে ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে।
কিন্তু মুশকিল হলো, অনেকেই এই রোগকে বশে রাখতে প্রতিদিন দুই-তিন বার ওষুধ খান, তার পরও তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কিছুতেই নম্নমুখী হতে চায় না। এখন প্রশ্ন হলো, কেন গাদা গাদা ওষুধ খাওয়ার পরও ডায়াবেটিসকে বশে আনা সম্ভব হয় না? চলুন জেনে আসি এর নেপথ্যের কারণগুলো।
সমস্যার মূলে ডায়েট
ডায়াবেটিস একটি লাইফস্টাইল ডিজিজ। তাই শুধু ওষুধ খেয়ে এই রোগকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বিশেষ করে ডায়েটে ভুলভ্রান্তি থাকলে তো কোনোমতেই এই রোগকে বশে রাখতে পারবেন না।
এই কারণেই চিকিৎসকরা ডায়াবেটিস রোগীদের ফাস্টফুড, মিষ্টি ও গরু-ছাগলের মাংস খাওয়া থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আপনিও এসবের পরিবর্তে শাক-সবজি ও ফল বেশি পরিমাণে খান। আশা করছি, এই নিয়মটা মেনে চলতে পারলেই উপকার পাবেন হাতেনাতে।
কম ঘুমালেই ফাঁসবেন
আমাদের প্রত্যেকেরই রাতে অন্তত ৭ ঘণ্টা ঘুম চাই-ই চাই। এই সময়টুকু শান্তিতে নিদ্রা যেতে পারলেই কিন্তু একাধিক জটিল-কুটিল অসুখের ফাঁদ এড়িয়ে চলা সম্ভব। বিশেষ করে, ডায়াবেটিস রোগীদের ঘুমের সময়ের দিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, দিনে পর্যাপ্ত সময় ঘুম না হলে হুট করে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই তো ডায়াবেটিস থাকলে দিনে অন্ততপক্ষে ৭ ঘণ্টা ঘুম আবশ্যক। এই সময়টুকু শান্তিতে ঘুমালেই আর সুগার কন্ট্রোলে বেগ পেতে হবে না।
শরীরচর্চা না করলেই চিত্তির!
ডায়াবেটিস রোগীদের দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করতেই হবে। এটুকু সময় শরীরচর্চা করতে পারলেই অনায়াসে হাই ব্লাড সুগারকে কন্ট্রোলে আনতে পারবেন। তবে অনেকেই ব্যস্ততার দোহাই দেখিয়ে একদমই শরীরচর্চা করেন না। সে কারণেই একগাদা ওষুধ খাওয়ার পরও তাদের সুগার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
তাই যতই ব্য়স্ততা থাকুক না কেন, সুস্থ থাকার ইচ্ছা থাকলে দিনে অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করতেই হবে। এতেই আপনার সুস্থ থাকার পথ প্রশস্ত হবে।
দুশ্চিন্তাই সমস্যার কারণ
স্ট্রেস বাড়লে শরীরে কর্টিসল ও অ্যাড্রিনালিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে। এই দুই হরমোন কিন্তু ব্লাড সুগারকে ঊর্ধ্বমুখী করার কাজে সিদ্ধহস্ত।
তাই যেনতেন প্রকারে স্ট্রেসের ফাঁদ এড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এই কাজে সাফল্য পেতে চাইলে আপনি নিয়মিত ইয়োগা ও মাইন্ডফুলনেস অভ্যাস করুন। এতেই ফল মিলবে হাতেনাতে। সহজেই স্ট্রেস কাটিয়ে সুগারকে বাগে আনতে পারবেন।
ধূমপান নৈব নৈব চ…
নিয়মিত ধূমপান করার অভ্যাস রয়েছে কি? উত্তর হ্যাঁ হলে যে বড্ড মুশকিল। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, সিগারেট ও বিড়ির মতো তামাকজাত দ্রব্য সেবনের পর হুট করেই রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে এই বদভ্যাস ছাড়তেই হবে। তাহলেই সুস্থ থাকতে পারবেন।