• রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১৮ অপরাহ্ন

দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ছাদে ফল ও সবজি বাগান

আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৭

ফরিদপুর প্রতিনিধি॥
ফরিদপুরে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বাড়ির ছাদে ফলের বাগান ও সবজি চাষ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাড়ছে আবাস স্থান। কমছে ফসলী জমি। ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে চাষা-বাদের জমি পরিমান। আর ইট-কংক্রিটের শহরের মানুষের গাছ লাগাবার মতো জায়গা পাওয়া এখন দুষ্কর হয়ে পড়েছে। তাই শখ করে বাগান কিংবা নিজের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মিটানোর জন্য শহরের মানুষদের জন্যে ছাদের কোন বিকল্প নেই। ইচ্ছে আর গাছের প্রতি ভালোবাসা থাকলে বাড়ির ছাদে ফলের ও সবজি বাগান করে পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ।

বাড়ির ছাদে বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ। আছে নানা জাতের সবজি ও ফুল। এজেন বিপন্য প্রকৃতির মাঝে সবুজের বিপ্লব। বিশুদ্ধ অক্সিজেনের কারখানা। আর এই অক্সিজেনের কারখানা গড়ে তুলেছেন ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার স্কুল শিক্ষক আবুল বাসার মিয়া। বৃক্ষ প্রেমী আবুল বাসার মিয়া নিজ বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন ফলের বাগান। নগরকান্দা উপজেলা কৃষি অফিসার আশুতোষ কুমার বিশ্বাস এর সহযোগিতায় নিজের বাড়ির ছাদে দুই বছর আগে গড়ে তুলেছেন ফল ও সবজির বাগান। আবুল বাসাকে বাগানের কাজে সহযোগিতা করেন তাঁর দুই কন্যা।

বাগানে কমলা, মালটা, ডালিম, হিমসাগর, ব্যানানা মেঙ্গ, হাড়ি ভাঙ্গ, ফজলি আম, লেবু, পেয়ারা, আমড়া, ড্রাগন, শরিফা, জাম্বুরাসহ ২৩ প্রকার ফলের গাছ। আছে করলা, চিচিংগা, ঝিংগা, কাচা মরিচ, ক্যাপসিকাম, পুদিনা পাতা, লাল শাক ও ভিভিন্ন প্রকারের ফুলের গাছ। বর্তমানে বাগানে ঝুলছে বিভিন্ন প্রকারের মৌসুমী ফল ও সবজি।

আবুল বাসার বলেন, গাছের প্রতি ভালবাসা থেকে তিনি বাড়ি ছাদে বাগান করেছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উন্নতমানের ফলের চারা সংগ্রহ করে লাগিয়েছেন। তিনি বলেন, সামান্য পরিশ্রম করলেই বাড়ির ছাদে বাগান কের বিভিন্ন প্রকার ফল ও সবজি উৎপাদন করে নিজের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মেটান সম্ভব। এতে যেমন ভ্যাজাল মুক্ত ফল ও সবজি পাওয়া যায়। তেমনি পরিবেশের ভারসম্য রক্ষা হয় এবং অক্সিজেরে চাহিদাও পুরন হয়।

শুধু স্কুল শিক্ষক আবুল বাসারই নয় ছাদে বাগান করেছেন শহরের পূর্বখাবাসপুরের বাসিন্ধ একজন সফল রাজনীতিবিদ বৃক্ষ প্রেমিক একেএম কিবরিয়া স্বপন। ছোট বেলা থেকেই গাছের প্রতি তার ভালবাসা। সেই ভাল বাসা থেকে নিজ বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন ফলের বাগান। ছাদে ফুটিয়েছেন দুর্লভ পদ্ম ফুলও। বর্তমানে তার বাগানে ঝুলছে, মালটা, কমলা, কামরাঙ্গা, ছবেদা, আমড়া, কদবেল, ডালিম, আমলোকি, এলাচসহ বিভিন্ন প্রকারের ফল। দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। কিছু ফলগাছ আছে সারা বছর ফল ধরে। ছাদের বাগানে চাষ করা বিষমুক্ত ফল নিজেরা খাচ্ছেন, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের দিচ্ছেন।

একেএম কিবরিয়া স্বপন বলেন, ইট-কংক্রিটের শহরে নির্মর বাতাশ ও অক্সিজেনের বড়ই অভাব। আর ছোট সময় থেকেই গাছের প্রতি ভালবাস। সেই ভালবাসা থেকে গত চার বছর আগে শুরু করি ছাদের বাগান। বর্তমানে আমার ছাদে ২০ধরনের ফল আছে এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার সবজি আছে। তিনি আরও জানান দুর্লভ পদ্ম ফুলও তিনি তার ছাদে ফুটিয়েছেন। সারা বছরই বাগান থেকে ফল পাওয়া যায়। আশে-পাশের মানুষ আসেন বাগান দেখতে। শহরের অনেকেই আমার বাগান দেখে বাগার করছেন, অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেন বাগান করার।

নগরকান্দা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আশুতোষ কুমার বিশ্বাস বলেন, বাড়ির মালিকদের সাথে কথা বলে ছাদে বাগান করার জন্য উদ্যোগ গ্রহন করি। সেই প্রচেষ্টায় শিক্ষক আবুল বাসার দেড় বছর আগে বাগান শুরু করেন। ইতিমধ্যে ছাদে প্রায় ২০ প্রকার ফল এর চারো রোপন করেন। বর্তমানে বাগানে বিভিন্ন প্রকার ফল ধরেছে। বাড়ির পুষ্টির চাহিদ পুরন করতে সম্ভব হচ্ছে। তার দেখা দেখি বিভিন্ন ব্যক্তি ছাদে বাগান করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে বিভিন্ন প্রকার সহযোগিতা করে আসছি।

চাষাবাদের জমি কমে আসলেও মানুষের মন থেকে কিন্তু হারিয়ে যায়নি সবুজের হাতছানি পাওয়ার আশা। এ কারণেই আধুনিক ফ্যাট বাড়িগুলোর ছাদে সকলেই ফলের ও ফুলেবাগান গড়ে তুলবেন এমটাই প্রত্যাসা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ