• রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:২১ অপরাহ্ন

সরিষাবাড়ীতে গো-খাদ্য সঙ্কট খড়ের কেজি ৫০ টাকা

আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৭

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি॥
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে গো-খাদ্যের তীব্র সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। হাট-বাজারে প্রয়োজনের তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় প্রতি কেজি খড় বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। খড় বিক্রেতারা চড়া দামে খুশি হলেও বিপাকে পড়েছেন গরু-মহিষ ও ছাগল-ভেড়ার মালিকরা। এছাড়া ধানের চিটা, খুদ-কোঁড়া ও ভুসির দামও নাগালের বাইরে। উপজেলার কয়েকটি হাট-বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
চলতি বন্যায় চরাঞ্চলসহ উপজেলার অধিকাংশ এলাকা ডুবে যাওয়ায় সবুজ ঘাসের সঙ্কটে খড়ের চাহিদা বেড়েছে বলে জানা গেছে। অনেক এলাকায় খড়ও নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দামের ওপর প্রভাব পড়ে। বাধ্য হয়ে অনেকেই গরু বিক্রি করতে চাইলেও খাদ্য সঙ্কটে ক্রেতা নেই। গরুর মালিক ও খামারিদের বাঁচাতে সরকারি সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন অনেকেই।
পৌরসভার সাতপোয়া গ্রামের গরুর মালিক মাহাবুব আলম পলাশ জানান, ‘বৃহষ্পতিবার আরামনগর বাজার থেকে মাত্র এক ভ্যানগাড়ি খড় সাড়ে তিন হাজার টাকায় কিনেছি। মাস খানেক আগেও যার দাম পাঁচ-সাত’শ টাকা ছিল। খড়গুলো তিনটি গরুর সপ্তাহ খানেক যেতে পারে।’
পোগলদিঘা ইউনিয়নের বয়ড়া বাজারে খড় কিনতে আসা ইকরামুল হক লালন জানান,‘তিনটি হাট ঘুরে কিছু খড় কিনেছি। তাও প্রতি কেজি ৫০ টাকা করে।’ তিনি জানান, ‘তাঁর ৪টি গরুর জন্য দুই হাজার টাকার খড় কিনতে হয়েছে; যা কোন রকম ৩-৪ যাবে।’
আওনা ইউনিয়নের কাবাডিয়াবাড়ি গ্রামের খামারি নার্গিস বেগম জানান,‘গরু পালন করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। খড় ও ভুষির দাম চড়া হওয়ায় লোকসান গুনতে হবে।’
পৌরসভার আরামনগর বাজারের ব্যবসায়ী মেসার্স কার্তিক ট্রেডার্সের মালিক সুমন সাহা জানান, ‘বন্যার কারণে সঙ্কট থাকায় গো-খাদ্যের দাম কিছুটা বেশি। চিটার গুড়া ও ভুসির দাম ১১৫০ থেকে ১৪০০ টাকা বস্তা এবং খুদ-কোঁড়া ১৩৫০ থেকে ১৬০০ টাকা বস্তা হয়েছে।’ প্রয়োজনের তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেশি বলে ব্যবসায়ীদের দাবি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সুত্র জানায়, ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরের হিসাবে এ উপজেলায় এক লাখ ৬১ হাজার ২৫টি দেশি গরু ও ৪০ হাজার ৭৩টি শঙ্কর জাতের গরু এবং ৫৫টি গরুর খামার ও ৬৯ টি ছাগলের খামার রয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রৌশনী জাহান জানান, ‘দুই দফা বন্যায় জমিতে পর্যাপ্ত ঘাস জন্মাতে পারেনি। তাই গরুর প্রধান খাদ্য খড়ের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এ জন্য কৃষক ও খামারিদের নেপিয়ার জাতের ঘাস উৎপাদনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’ এছাড়া সরকারিভাবে গো-খাদ্যের সঙ্কট মোকাবেলায় বন্যার্ত এলাকায় প্রতি ইউনিয়নে ২৫-৩০ জনকে মাথাপিছু পাঁচ কেজি করে দানাদার গো-খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ