ক্রিকেটের অন্যতম পুরোনো দ্বৈরথের একটি অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড লড়াই। তাসমান সাগরের দুই পাড়ের দুই দেশের ম্যাচকে ডাকা হয় ট্রান্স-তাসমান লড়াই নামে। জমজমাট এই দ্বৈরথ দেখতে মুখিয়ে থাকে ভক্তরা। এমন ম্যাচ আগে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৯.২ ওভারে অলআউট হলেও ৩৮৮ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে অস্ট্রেলিয়া। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৮৩ রান করে কিউইরা। এতে শ্বাসরুদ্ধকর এই দুই দেশের লড়াইয়ে ৫ রানের জয় পায় প্যাট কামিন্সের দল।
৩৮৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকে থেকে মারকুটে ব্যাটিং করতে থাকে নিউজিল্যান্ড। তবে দলীয় ৬১ রানে ১৭ বলে ২৮ রান করে আউট হন ডেভন কনওয়ে। তার বিদায়ের পর দ্রুত ফিরে যান উইল ইয়াং। ৩৭ বলে ৩২ রান করে তিনি। এরপর ক্রিজে আসা ড্যারিল মিচেলকে নিয়ে ৯৬ রানের জুটি গড়েন রাচিন রবীন্দ্র। দলীয় ১৬৮ রানে ৫১ বলে ৫৪ রান করেন ড্যারিল মিচেল। এরপর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক টম ল্যাথাম। তাকে নিয়ে ৫৪ রানের জুটি গড়েন রবীন্দ্র। দলীয় ২২২ রানে ২২ বলে ২১ রান করে আউট হন অধিনায়ক ল্যাথাম।
এরপর ক্রিজে আসা গ্লেন ফিলিপসকে নিয়ে নিজের শতক পূর্ণ করেন রাচিন রবীন্দ্র। ফিলিপসকে নিয়ে ৪৩ রানের জুটি গড়েন রাচিন। দলীয় ২৬৫ রানে ১৬ বলে ১২ রান করে আউট হন ফিলিপস।তার বিদায়ের পরই ফিরে যান রাচিন রবীন্দ্র। ৮৯ বলে ১১৬ রান করে আউট হন তিনি। এরপর ক্রিজে আসা জেমস নিশাম নিয়ে ২৭ রানের জুটি গড়েন মিচেল স্যান্টনার। ১২ বলে ১৭ রান করেন তিনি। তার বিদায়ের পর দ্রুত আরও এক উইকেট হারায় কিইউরা।
শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য ১৮ রান প্রয়োজন হয় নিউজিল্যান্ডের। সেখানে দলকে জয়ের পথেই রাখে নিশাম। শেষ দুই বলে প্রয়োজন হয় ৭ রান। সেখানে দুই রান নিতে গিয়ে আউট হন নিশাম। ৩৯ বলে ৫৮ রান করে ফিরে যান তিনি। শেশ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ৬ রান। তা আটকে দেন মিচেল স্টার্ক। শেষ পর্যন্ত ৫ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অস্ট্রেলিয়া।
এর আগে টসে হেরে অজিদের হয়ে ব্যাটিঙ্গয়ে আসেন ট্রাভিস হেড ও ডেভিড ওয়ার্নার। হাতের চোট কাটিয়ে আজই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন ট্রাভিস। আর ফিরেই বাজিমাত করেছেন তিনি। আরেক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারকে সঙ্গে নিয়ে আজ শুরু থেকেই নিউজিল্যান্ড বোলারদের উপর চড়াও হয়েছিলেন তিনি। মারকুটে ব্যাটিংয়ে আজ মাত্র ২৫ বলেই ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন হেড। এবারের বিশ্বকাপে এটি যৌথভাবে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড।
হেডের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আজ কিউই বোলারদের তুলোধুনো করেছেন ওয়ার্নারও। তিনিও ফিফটি করেন মাত্র ২৮ বলেই। এ দুজনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে আজ ৮.৫ ওভারেই স্কোরবোর্ডে ১০০ রানের সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া। আর উদ্বোধনী জুটিতে হেড-ওয়ার্নার মিলে তোলেন ১৭৫ রান। ৬৫ বলে ৫ চার ও ৬ ছয়ে ওয়ার্নার ৮১ রান করে আউট হলে ভাঙে এ জুটি। তবে ওয়ার্নার ফিরলেও হেড আজ ঠিকই তুলে নিয়েছেন নিজের সেঞ্চুরি। ১০ চার ও ৭ ছয়ে ৬৭ বলে ১০৯ রান করে হেড ফিরেছেন দলীয় ২০০ রানে ফিলিপসের বলে বোল্ড হয়ে।
এরপর স্টিভ স্মিথ ১৭ বলে ১৮, মিচেল মার্শ ৫১ বলে ৩৬, মারনাস লাবুশেন ২৬ বলে ১৮ রান করে ফিরেন সাজঘরে। ফলে মাঝের ওভারের দিকে কিছুটা কমে আসে অজিদের রান তলার গতি। কিন্তু ম্যাক্সওয়েল মাঠে নামার পরই তা আবার বাড়তে শুরু করে। হেড-ওয়ার্নারের পর ব্যাট হাতে ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে ঝড় তোলেন জস ইংলিশ। ম্যাক্সওয়েল ২৪ বলে করেন ৪১ রান, ইংলিশ করেন ২৮ বলে ৩৮ রান।
ম্যাক্সওয়েল-ইংলিশের পর আজ ব্যাট হাতে কিউই বোলারদের তুলোধুনো করেছেন অজি অধিনায়ক কামিন্স। ২ চার এবং ৪ ছয়ে আজ তিনি ১৪ বলেই করেছেন ৩৭ রান। ফলে ৪৯.৪ ওভারে অস্ট্রেলিয়া অল আউট হলেও পেয়েছে ৩৮৮ রানের বড় এক সংগ্রহ। কিউইদের হয়ে আজ সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট পেয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট এবং গ্লেন ফিলিপ্স।