রূপালী ব্যাংক কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৮ নেতাকর্মীকে চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে তাদের সঙ্গে সমঝোতায় আসার আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।
রোববার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে সিবিএ নেতাদের নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, আমরা চাই না প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ে যারা আছেন তাদের অনেক কিছু বেরিয়ে যাক। আমার অনুরোধ, একটা সম্মানজনক সমাধান আপনারা করুন। সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার থাকলেও বলুন। আমরা রাজি আছি এবং শ্রমিক নেতাদের উচিত হবে ঐক্যবদ্ধভাবে বিষয়টি কিভাবে সমাধান করা যায় সে বিষয়ে ভাবা। আমি এ বিষয়ে এতদিন কথা বলিনি। ম্যানেজমেন্টের আচরণ পর্যবেক্ষণ করেছি। তাদের আচরণ সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না।
নৌপরিবহনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষে। শ্রমিক নেতাদের দোষ দিয়ে আদমজী জুট মিল বন্ধ করেছিল বিএনপি। অফিসারদের লুটপাটের কথা কিন্তু বলা হয়নি। গোড়ায় হাত দিলে অনেক কিছু বেরিয়ে যায়। এতটুকু বলব, প্রধান বিচারপতি সিনহার ইতিহাস সবার জানা।
সূত্র জানায়, এটি পূর্বনির্ধারিত কোনো কর্মসূচি ছিল না। ব্যাংকের কাছ থেকেও এজন্য কোনো অনুমতিও নেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে চাকরিচ্যুত সিবিএ সভাপতি মোস্তাক আহমেদ জানান, সমবেদনা জানানোর জন্য নৌমন্ত্রী এসেছিলেন। ট্রেড ইউনিয়ন রক্ষা করতে, ব্যাংক বাঁচাতে সমঝোতা করতে ম্যানেজমেন্টকে বলেছেন মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিনসহ শ্রমিক লীগ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিবিএ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
৫ ডিসেম্বর রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক মো. নূরুজ্জামান, উপ-মহাব্যবস্থাপক শওকত আলী খান, সহকারী মহাব্যবস্থাপক সাখাওয়াত হোসেন ও প্রি›িসপাল অফিসার জসিম উদ্দিন সরকারের সঙ্গে গুরুতর অসদাচরণ ও অশালীন আচরণ করেন সিবিএ নেতারা। এমনকি ওই কর্মকর্তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করেন তারা। এ ঘটনায় এ বছরের ১৯ আগস্ট সিবিএ সভাপতি খন্দকার মোস্তাক আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক কাবিল হোসেন কাজী ও কেয়ারটেকার আরমান মোল্লাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয় ড্রাইভার আবুল কালাম আজাদকে। আর ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছে অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার (গ্রেড-১) আহসান হাবিব এবং কেয়ারটেকার আনোয়ার হোসেন, ছাব্বির আহমেদ ভূঁইয়া ও মনিরুল ইসলামকে।
২০০৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিবিএ নেতাদের শাস্তির পর রাষ্ট্রায়ত্ত কোনো প্রতিষ্ঠানে সিবিএ নেতাদের শাস্তির ঘটনা এটাই প্রথম।