১৯তম ওয়ালটন জাতীয় ক্রিকেট লিগের পঞ্চম রাউন্ডে দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে জয় পেয়েছে রাজশাহী ও সিলেট বিভাগ। তবে ড্র হয়েছে রংপুর-ঢাকা বিভাগ এবং খুলনা-বরিশাল বিভাগের মধ্যকার প্রথম স্তরের ম্যাচ দুটি। বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম বিভাগকে ইনিংস ও ১৩ রানের ব্যবধানে হারায় রাজশাহী। ইনিংস ব্যবধানে জয়ের সুবাদে প্রথম স্তরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলো রাজশাহী।
হাতের ৭ উইকেটে এদিন চট্টগ্রাম যোগ করতে পারে মাত্র ২১ রান! ১৩০ রানে শেষ হয় তাদের দ্বিতীয় ইনিংস। ২৩ রানে ৬ উইকেট নিয়ে চট্টগ্রামকে একাই গুড়িয়ে দেন দেলওয়ার হোসেন। এক স্পেলেই মাত্র ২ রানের খরচায় নেন ৬ উইকেট! প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে এটি তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং রেকর্ড। প্রথম ইনিংসে চট্টগ্রামের ২৬০ রানের জবাবে ৪০৩ রান করেছিল রাজশাহী।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে ঢাকা মেট্রোপলিটনের বিপক্ষে সিলেট বিভাগের জয়টি ছিল ১৯০ রানের। ৩২৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটে নেমে এনামুল-শাহানুরের ঘুুর্ণি তোপে মাত্র ১৩৩ রানেই গুটিয়ে যায় সিলেট। প্রথম ইনিংসে ৯৬ রানে ৫ উইকেট নেয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ৬৩ রানে নেন ৫ উইকেট এনামুল হক জুনিয়র। ক্যারিয়ারে এটি তার ৩২তম ৫ উইকেট ও ষষ্ঠবারের মত ১০ উইকেট শিকার। ম্যাচ সেরাও হন জাতীয় দলের সাবেক এই খেলোয়াড়। ৪ উইকেট নিয়ে এদিন তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন আরেক স্পিনার শাহানুর রহমান। প্রথম ইনিংসে ৩১৯ রান করেছিলো সিলেট। জবাবে ২৫৯ রানেই গুটিয়ে যায় ঢাকা মেট্রো। ৮ উইকেটে ১৭৬ রান নিয়ে শেষ দিন শুরু করা সিলেট দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা দেয় ৯ উইকেটে ২৬৩ রান তুলে। পঞ্চাশোর্ধো ইনিংস উপহার দেন দশ নম্বর ব্যাটসম্যান আবু জায়েদ।
রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে জয়ের খুব কাছে ছিল খুলনা বিভাগও। কিন্তু অধিনায়ক ফজলে মাহমুদের শতক আর সোহাগ গাজীর অপরাজিত ৬৮ রানে ফলো-অনে পড়েও ম্যাচ ড্র করতে সক্ষম হয় বরিশাল বিভাগ। প্রথম ইনিংসে ২৯৬ রানে গুটিয়ে ফলো-অনে পড়া বরিশাল শেষ দিন শুরু করে ১৩৪ রানে পিছিয়ে থেকে, হাতে ছিল ৯ উইকেট। আর মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংসের সমান রান তুলে ড্র নিশ্চিত করে তারা। ৮ উইকেটে ৫১১ রান করে প্রথম ইনিংস ঘোষনা করেছিলো খুলনা।
খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে অবশ্য ড্রয়ের আভাস পাওয়া গিয়েছিল তৃতীয় দিনেই। দু’দলের প্রথম ইনিংস তখনো শেষ হয়নি। রংপুরের ৮ উইকেটে ৫৬০ রানের (ডিক্লে.) জবাবে প্রথম ইনিংসে ৩২১ রানে অল-আউট হয়ে গতকাল ফলো-অনে পড়ে ঢাকা। পরে ১ উইকেটে ৮৫ রান তুলে ড্র নিশ্চিত করে।
৫ রাউন্ড শেষে প্রথম স্তরে ১টি জয় ও ৪ ড্রয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষেই আছে খুলনা। সমানসংখ্যক ম্যাচে ঢাকার হার বা জয় নেই একটিও, ৫ ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে তারা। একই পরিসংখ্যান নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে রংপুর। ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে বরিশাল।
৫ রাউন্ড শেষে ২ জয়ে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্তরে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে রাজশাহী। সমানসংখ্যক ম্যাচে ১টি করে জয় ও হারে ১২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে সিলেট। এখনো পর্যন্ত জয়হীন চট্টগ্রাম ৮ পয়েন্ট নিয়ে তিনে। একই পরিসংখ্যান নিয়ে টেবিলের তলানিতে ঢাকা মেট্রো।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চট্টগ্রাম-রাজশাহী (২য় স্তর)
চট্টগ্রাম : ২৬০ ও ৪১.৪ ওভারে ১৩০ (আগের দিন ১০৯/৩) (তাসামুল ৩২, সাজ্জাদুল ২১*, সাঈদ ০, রনি ১, রানা ০, ওয়াহিদুল ৭, সাখাওয়াত ০, হাসান ৪; ফরহাদ রেজা ২/৪৪, দেলোয়ার ৬/২৩, শরিফুল ১/২৭, সাকলাইন ১/২৪, মাইশুকুর ০/৭, হৃদয় ০/১)।
রাজশাহী ১ম ইনিংস : ৪০৩
ফল : রাজশাহী ইনিংস ও ১৩ রানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ : দেলোয়ার হোসেন
সিলেট-ঢাকা মেট্রো (২য় স্তর)
সিলেট : ৩১৯ ও ৯১.১ ওভারে ২৬৩ (আগের দিন ১৭৬/৮) (শাহানুর ৫৮, আবু জায়েদ ৫৩*, খালেদ ৮*; ডলার ০/৪৪, সৈকত ০/৯, নিহাদ ৪/৯৫, শরিফ উল্লাহ ১/৪২, ইলিয়াস সানি ৩/৬৩, আশরাফুল ০/৩)।
ঢাকা মেট্রো : ২৫৯ ও ৪৯.২ ওভারে ১৩৩ (লক্ষ্য ৩২৪) (শামসুর ১৩, সৈকত ৩১, আসিফ ১১, মার্শাল ৪, মেহরাব ৪, আশরাফুল ৬, শরিফ উল্লাহ ০, ইলিয়াস সানি ৩৭*, জাবিদ ০, ডলার ৭, নিহাদ ৭*; খালেদ ০/৯, এনামুল ৫/৬৩, রাহাতুল ১/৮, শাহানুর ৪/৩০, অলক ০/১১, ইমতিয়াজ ০/১০)।
ফল : সিলেট ১৯০ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ : এনামুল হক জুনিয়র
খুলনা-বরিশাল (১ম স্তর)
খুলনা ১ম ইনিংস : ৫১১/৮ (ডি.)
বরিশাল : ২৯৬ ও (ফলো অনের পর) ১১০ ওভারে ২৯৬/৫ (আগের দিন ৮০/১) (রাফসান ৮৫, ফজলে রাব্বি ১১০, সালমান ৯, নুরুজ্জামান ১৯, সোহাগ ৬৮*, মঈন ১*; আল আমিন ১/২৯, জিয়াউর ০/১৬, রবিউল ০/১৪, নাহিদুল ১/৪৭, রাজ্জাক ০/১০২, মঈনুল ১/৪৪, রবি ০/১০, রবি ০/৯, এনামুল ১/১৪, মিঠুন ০/১০)।
ফল : ম্যাচ ড্র
ম্যান অব দা ম্যাচ : জিয়াউর রহমান
রংপুর-ঢাকা (১ম স্তর)
রংপুর ১ম ইনিংস : ৫৬০/৮ (ডি.)
ঢাকা বিভাগ : ১৪২.৫ ওভারে ৩২১(আগের দিন ২৯৫/৬) (মোশাররফ ১০, শরিফ ১৭, জাহিদুজ্জামান ০, অপু ২০*, আজিম ০; সাজেদুল ০/১৬, রবিউল ০/৩১, শুভ ২/১০৩, মাহমুদুল ৩/৭১, রহমান ৪/৬০, আরিফুল ০/১, জাভেদ ১/৯, নাঈম ০/১৭)। ও (ফলো অনের পর) ৪৯ ওভারে ৮৫/১ (মজিদ ৫২*, রনি ৯, মিনহাজ ২৩*; শুভ ০/৫, রবিউল ০/১, রহমান ০/৩৫, মাহমুদুল ১/২৮, জাভেদ ০/৪, সাজেদুল ০/১২)।
ফল : ম্যাচ ড্র
ম্যান অব দা ম্যাচ : নাঈম ইসলাম