রাজশাহীর বাঘায় টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাখি খাতুন। দুই মাস থেকে নানির বাড়িতে বিছানায় কারাচ্ছে। তাকে নিয়ে বৃদ্ধ নানা-নানি নিরুপায় হয়ে পড়েছেন। রাখি খাতুন উপজেলার দিঘা নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও বাউসা ইউনিয়নের দিঘা হিন্দুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, চার মাস আগে বাড়ির পাশে আমগাছ থেকে পড়ে মাথায় ও মাজায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়। ওই সময় প্রাথমিকভাবে তাকে চিকিৎসা করিয়ে ভালো ছিল। কিন্তু দুই মাস থেকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে যায়। বর্তমানে রাখি খাতুন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক মাহাবুল আলমের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গুরুতর অসুস্থ হয়ে এখন নানা-নানির বাড়িতে বিছানায় কাতরাচ্ছে রাখি খাতুন।
এ বিষয়ে বৃদ্ধ নানি বুলবুলি বেগম বলেন, নাতি রাখি খাতুনের বয়স যখন ১ মাস, তখন মা-বাবার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে । এর পর থেকে মা রেখা বেগম তার কন্যাসন্তানকে নিয়ে আশ্রয় নেয় আমার বাড়িতে। এখানে বেড়ে উঠে রাখি খাতুন। ৫ মাস আগে শ্রমিকের ভিসায় গৃহকর্মীর কাজে সৌদি আরবে গেছে রাখির মা রেখা বেগম।
বর্তমানে হাত-পা নড়াতে পারছে না, পাশে ঘুরে বসার মতো শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। মায়ের পাঠানো সামান্য টাকায় রাখি খাতুনের চিকিৎসা অপ্রতুল। তবে তার শিক্ষকরা সাহায্য-সহযোগিতায় কোনো রকমে চিকিৎসা চলছে। তার চিকিৎসায় প্রতিদিন ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। ভ্যানচালক নানা কাউসার আলীর পক্ষে চিকিৎসা করানো তো দূরের কথা, তার আয়ে সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে রাখির নানা কাউসার আলী বলেন, গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বের আমার ছোট ভাই খাকচার আলীকে দিন-দুপুরে ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ভাইকে মর্গ থেকে এনে ১৯ সেপ্টেম্বের দাফন করা হয়। ওই দিন নাতি রাখি খাতুন সন্ধ্যার পর টিউবওয়েলে পানি আনতে গিয়ে ভয়ে পড়ে যায়। এর পর থেকে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করেও ভালো হচ্ছে না।
এ বিষয়ে দিঘা নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাজান আলী বলেন, দরিদ্র পরিবারের জন্য ব্যয়বহুল চিকিৎসা। কোনো হৃদয়বান ব্যক্তির আর্থিক সাহায্য পেলে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়ে স্কুলের সহপাঠীদের কাছে আবার ফিরতে পারত রাখি। সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা। নানা কাউসার আলী, সোনালী ব্যাংক, অ্যাকাউন্ট নাম্বার- ৪৬০৫২০১০০৯২০৯। আড়ানী শাখা, রাজশাহী।