• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১৪ অপরাহ্ন

ফুটপাত দখল মুক্ত করার পরেও কমছে না যানযট

আপডেটঃ : শনিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৭

রংপুর অফিস॥
রংপুর মহানগরীতে ফুটপাত থেকে হকারদের উচ্ছেদ করার পরও কমছেনা যানজট। এর কারন হিসেবে অধিকাংশ সচেতন মহল ও নগরবীদ বলেন, এ জন্য দায়ী করেন ট্রাফিক পুলিশসহ সিটি করপোরেশনের কর্তৃপক্ষের উপর । ব্যাখ্যায় বলেন, সিটি করপোরেশন অনিয়ম ভাবে ৫ হাজারের অধিক অটো রিক্সার লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এবং বহিরাগত অটো রিক্সা প্রায় ৩০ হাজার প্রতিনিয়তই প্রবেশ  করেন । বিষয়ে নগরবাসি রংপুর ট্রাফিক পুলিশ এর অব্যবস্থাপনাকে মুল দায়ী করেন। তবে বাস্তবতায় এমনটি পাওয়া গেলেও আিনয়ম রয়েছে অটোরিক্স্রা মালিক চালক শ্রমিকদের উপর বেশী। নগরের ব্যস্ততম মডার্ন মোড়, পার্কের মোড়, কলেজ রোড-লালবাগ, শাপলা চত্বর, গ্র্যান্ড হোটেল মোড়, জাহাজ কম্পানি মোড়, সুপারমার্কেট ট্রাফিক মোড়, সিটি বাজার, কাচারীবাজার জিরো পয়েন্ট, মেডিক্যাল মোড়, সাতমাথা মোড়, মাহিগঞ্জ, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সড়কে প্রতিদিনই কোনো না কোনো সময় ভয়াবহ যানজটের গ্যাঁড়াকলে পড়তে হয় লোকজনকে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ফুটপাত দখল ও যত্রতত্র অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে রাখার কারণে যানজটের নগরে পরিণত হয়েছে রংপুর। দাপ্তরিক কাজ, কেনাকাটা কিংবা চিকিৎসা নিতে প্রতিনিয়তই রংপুর অঞ্চলের আট জেলা থেকে মানুষজন আসে বিভাগীয় এই শহরে। কিন্তু যানজটের কারণে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয় তাদের। প্রতিনিয়ত যানজট সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে রংপুর ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ। রংপুর নগরের ব্যস্ততম সড়কগুলো যানজটমুক্ত করতে ১৬ কিলোমিটার বাইপাস সড়ক চার লেনে উন্নীত করা হলেও এর সুফল মিলছে না। কারণ সড়কের ওপর রয়ে গেছে বিদ্যুৎ ও টেলিফোন সঞ্চালন লাইনের খুঁটি।  এ ছাড়া অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দাপট। ফুটপাত দখলের কারণে নগরজুড়ে তীব্র যানজট লেগেই থাকে।  এতে করে রংপুর এখন নিত্য ভোগান্তির নগরে পরিণত হয়েছে। সিটি করপোরেশন ও পুলিশ প্রশাসন পরস্পরের ওপর এর দায় চাপাচ্ছে। সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নগর কর্তৃপক্ষ চার হাজার ৮০০টি লাইসেন্স দিলেও নগরে চলাচল করছে প্রায় ৪০ হাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। অর্থাৎ অবৈধভাবে প্রায় ৩৫ হাজার অটোরিকশা চলাচল করছে। অন্যদিকে অদক্ষ ও অযোগ্য চালকের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।দেখা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের মোড় থেকে মেডিক্যাল মোড় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার বিস্তৃত ধাপ এলাকায় বেসরকারিভাবে গড়ে উঠেছে ‘চিকিৎসা পল¬ী’। এখানে রয়েছে বড় বড় ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদির দোকান, ক্লিনিক ও চিকিৎসকদের চেম্বার। বিভাগের আট জেলা দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও রংপুরের মানুষজন চিকিৎসাসেবা নিতে মূলত এখানেই আসে। সে কারণে প্রতিনিয়তই ভিড় থাকে এই এলাকায়। তার ওপর যত্রতত্র অটোরিকশা ও ওষুধ কম্পানির প্রতিনিধিদের মোটরসাইকেল, চিকিৎসকদের গাড়ি ও রোগী বহনকারী অ্যাম্বুল্যান্স, প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস সড়কের দুই পাশে পার্কিং করায় চার লেনের সড়কের দুই লেনই বন্ধ হয়ে থাকে।এদিকে কয়েকদিন থেকে শহরে বা শহরের আশে পাশে মোটর সাইকেল কিংবা হলুদ পিক আপ ধরছে ট্রাফিক পুলিশ এটা ট্রাফিক বিভাগের চলমান প্রক্রিয়া। এব্যাপারে ভুক্তভোগী সাইদ বলেন, দু একটা মোটর সাইকেল বা হলুদ পিক আপ অথবা অন্যান্য গাড়ীর লাইসেন্স এর জন্য শহরে যানযট এর সৃষ্টি হচ্ছে আর তার জন্য এই সমস্ত গাড়ী কড়া নজরদারিতে রেখে আটক করে পরীক্ষা নিরাক্ষা করছে। আর এদিকে শহরের যাঞ্জটের প্রধান কারন ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সা আর তাদের কে জামাই আদর করে যেখানে যেমন ইচ্ছা তেমন সাজে চলতে দেওয়া হচ্ছে এটা মোটেই আশা করে না রংপুর পুলিশ প্রশাসনের কাছে নগরবাসী। তাই নগরবাসীর জোড় দাবী তারা যেমন এখন ফুটপাত দখল মুক্ত পেয়ে স্বাচ্ছন্দ্য চলাফেরা বাজার হাট করছে ঠিক তেমন রাস্তা থেকে সীমিত সংখ্যক অটো রিক্সা রেখে বাকী গুলো কে অন্য কোন জায়গায় ডাইভারট করে দিলে এই তীব্র যানযটের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে বলে মনে করেন। পুলিশ সূত্র জানায়, নগরের প্রধান প্রধান বিপণিবিতান যেখানে মানুষের সমাগম বেশি হয়, ইতিমধ্যে সেসব এলাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিপণিবিতান এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তবে সব রাস্তায় স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারবে রিকশা ও মোটরসাইকেল।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রংপুরের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান পিপিএম বলেন, ‘ফুটপাত দখল ও রিকশা-অটোরিকশা যেখানে-সেখানে পার্কিং করার কারণেই মূলত যানজটের সৃষ্টি হয়। শুধু আইন প্রয়োগ করে নয়, এই সমস্যা সমাধানে সবাইকে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।রংপুর সিটি করপোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অটোরিকশার লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ রয়েছে। কিন্তু প্রতিদিনই আমদানি হচ্ছে নতুন নতুন অটোরিকশা।  সিটি করপোরেশনের মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু বলেন, ‘পুলিশ সহায়তা করলেই অবৈধ অটোরিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। তবে পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) খন্দকার গোলাম মো. ফারুক বলেন, সবাই একত্র হয়ে কাজ করলে নগরে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা আনা সম্ভব।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ