জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাড়ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ২০৫০ সালের মধ্যে এ উষ্ণতা বৃদ্ধির হার দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা না গেলে, বিশ্বে এমন ওলট–পালট শুরু হবে, যা আর সহজে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে না। বিজ্ঞানীদের এ সমস্ত সতর্কতার মধ্যেই গবেষেণায় উঠে এসেছে আরও কিছু বিষয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ধীর হয়ে আসছে পৃথিবীর ঘূর্ণন, যা প্রভাব ফেলতে পারে পৃথিবীর সময় গণনার হিসাব নিকাশে। গবেষণাটি প্রকাশ করেছেন গবেষক ডানকান এগ্নিউ। তিনি ক্যালিফোর্নিয়া স্যান ডিয়েগো বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত একজন ভৌতবিজ্ঞানী।
এগ্নিউ বলেন, মেরুতে বরফ গলে যাওয়া পৃথিবীর ভরের ঘনত্বকে পরিবর্তন করে, যার ফলে এর কৌণিক বেগ প্রভাবিত হয়।
এগ্নিউ বরফের উপর ঘুরতে থাকা একজন স্কেটারের সঙ্গে তুলনা করে পৃথিবীর ঘূর্ণন ধীর হয়ে আসার বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, একজন স্কেটার যখন বরফের ওপর স্কেটিং করে তখন তার হাত প্রসারিত থাকলে সে দ্রুত ঘুরতে পারে। আর হাত ভেতরের দিকে নামিয়ে আনলে তার গতি ধীর হয়ে আসে। পৃথিবীর ঘূর্ণনের ব্যাপারটাও এমনই।
ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অ্যান্ড টেকনোলজির ভৌতবিজ্ঞানী থমাস হেরিং বলেন, অ্যান্টার্কটিকা এবং গ্রিনল্যান্ড থেকে বরফ গলে গ্রহের অন্যান্য অংশে পরিবাহিত হচ্ছে। গলে যাওয়া বরফ বিষুবরেখার দিকে প্রবাহিত হচ্ছে।
গবেষক এগ্নিউ পৃথিবীর এই পরিবর্তনের জন্য মানুষকেই দায়ী করেছেন। ব্যাঙ্গাত্মক উপস্থাপনায় তিনি বলেন, আমরা মানুষেরা এমন একটি অবিশ্বাস্য কাজ করে ফেলেছি যে পৃথিবীর গতিই পরিবর্তন করে দিয়েছি।
নেচার জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গত কয়েক দশকে পৃথিবীর ঘূর্ণন দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। যে কারণে বিজ্ঞানীরা ২০২৬ সালের মধ্যে সময় গণনায় ঘড়িতে একটি নেতিবাচক লিপ সেকেন্ড মুছে ফেলার কথা ভাবছেন। মেরু অঞ্চলের বরফ গলায় এই সম্ভাবনা তিন বছর ধরে স্থগিত রয়েছে। কিন্তু এ ধরনের সংস্কার গোটা কম্পিউটিং সিস্টেমের ক্ষতি করতে পারে। সূত্র: সিএনএন