পবিত্র ঈদুল ফিতর ও নববর্ষের টানা পাঁচদিনের ছুটির পর প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে প্রথম কার্যদিবসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি ছিল কম। টানা পাঁচদিনের ছুটি শেষে সোমবার (১৫ এপ্রিল) থেকে খুলেছে সরকারি অফিস।
কিন্তু ঈদ আমেজ এখনও কাটেনি। প্রথম কর্মদিবসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরে সহকর্মীদের সঙ্গে ঈদ ও নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে কর্মদিবস শুরু করেছেন। ফলে সচিবালয়ে ঈদের আমেজ বিরাজ করছে।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়, তথ্য অধিদপ্তর, ভূমি মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ঘুরে দেখা যায়, কোনো কোনো মন্ত্রণালয়ের পাঁচজন কর্মকর্তাদের মধ্যে তিনজনকে দেখা যায়। অনেক কক্ষে চেয়ার-টেবিল ফাঁকা পড়ে রয়েছে। প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ে ঈদের আমেজ বিরাজ করছে। সকালে অফিসে এসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একে অপরের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। কোলাকুলি করছেন একে অপরের সঙ্গে।
এছাড়া সচিবালয়ে গাড়ি রাখার স্থানগুলোও অন্যান্য দিনের তুলনায় ফাঁকা। ৪ নম্বর ভবনের দক্ষিণ, ৬ নম্বর ভবনের উত্তর পাশের পার্কিংয়ের স্থানসহ বিভিন্ন জায়গা ফাঁকা ছিল। সচিবালয়ের করিডোর ও লিফটগুলোর সামনে ভিড় ছিল না। সচিবালয়ে দর্শণার্থী কক্ষটিও ছিল ফাঁকা। গাড়ি রাখার স্থানগুলো অন্যান্য সময়ের মতো ভরা ছিল না।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, ফাঁকা সচিবালয় দেখে আমারও ভালো লাগেনি। ঢাকার রাস্তাঘাটগুলো কেমন যেন এখনও ফাঁকা। সচিবালয়ের চিরচেনা ব্যস্ততা দেখতে চাই। এ সপ্তাহটা হয়তো এভাবে ঢিলেঢালা যাবে। আগামী সপ্তাহ থেকে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে। বাংলাদেশ দুটি বড় উৎসব পালন করলো। ঈদের একদিন পর বাঙালি জাতি অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধারণ করে নববর্ষ পালন করেছে।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার অফিস খুলেছে, তবে অনেকেই তিনদিন ঐচ্ছিক ছুটি উপভোগ করছেন। ঈদের পরে প্রথম কর্মদিবস মোটামুটি এমনই হয়ে থাকে। খুব একটা কাজ হয় না, আবার অনেকেই ছুটিতে থাকেন। যারা অফিসে এসেছেন তারাও গল্প করে সময় কাটাচ্ছেন। তাই আগামী সপ্তাহ থেকে সচিবালয়ের অফিস পুরোদমে শুরু হবে।
বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান সকালে মন্ত্রণালয়ের সহকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছিলেন। এ সময় তিনি বলেন, ছুটি শেষে আমরা নিরাপদে কর্মস্থলে ফিরে এসেছি। আজ থেকে আবার নিয়মিত কাজে যুক্ত হবে সবাই।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ বলেন, সকালে এসেই আমি দপ্তরের সহকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি। কিছুক্ষণের মধ্যে সচিবের সঙ্গে দেখা করতে যাবো।
দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের প্রশাসক শাখার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, উপস্থিতি মোটামুটি। প্রথম কর্মদিবস হওয়ায় কাজের চাপ কম। অনেকেই ছুটি নিয়ে বাড়ি গেছেন। এ সপ্তাহের বাকি কর্ম দিবস এভাবেই উপস্থিতি কম থাকবে বলে জানান তিনি। কাজের তেমন চাপ নেই, তাই ঈদ ও পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা বিনিময়ে দিয়ে দিন শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাইনি। ঈদ এখানে ভালো কেটেছে। আমরা যে কক্ষে বসি, সেখানে চারজনের মধ্যে এসেছে দুজন। অন্য কলিগরা বাড়ি গেছেন। ছুটিতে আমরা এখানেই কাজ করেছি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে ১০, ১১, ১২, ১৩ এপ্রিল (বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার) এবং পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ১৪ এপ্রিল ছুটি ছিল। এবার ঈদ ও পহেলা বৈশাখ মিলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টানা পাঁচদিন ছুটি ভোগ করেছেন। ছুটি শেষে সোমবার অফিস শুরু হয়।