রাজধানীর রামপুরা থানার বনশ্রী এলাকা থেকে চালককে অজ্ঞান করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই ও চালক নিহতের ঘটনায় একটি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) রামপুরা থানা পুলিশ।
গত ৮ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে আপডাউন যাতায়াতের কথা বলে চালক শাহ আলম মিয়ার রিকশা ঠিক করে। পরে মাঝ পথে কৌশলে রিকশা ছিনতাই করে নিয়ে নেয় চক্রটি।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- ছিনতাই চক্রের হোতা মো. শরীফুল ইসলাম (৩২) ও তার অন্যতম সহযোগী চান্দু (৪০) এবং চোরাই রিকশা কেনা বাঁচার সঙ্গে জড়িত ফুল মিয়া (৫৯) ও মো. আল আমিন (৩৮)। অভিযানে তাদের কাছ থেকে সাতটি চোরাই রিকশা উদ্ধার করা হয়। গত ৪ মে রাজধানীল মুগদা মানিক নগর ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
রোববার (৫ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম।
হায়াতুল ইসলাম বলেন, ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অটোরিকশা ছিনতাই চক্রের হোতা শরীফুল ইসলাম। তিনি পেশায় কাভার্ডভ্যান চালক। ৯ মাস আগে তিনি কাভার্ডভ্যান চালাতেন সেটি মালিক বিক্রি করে দেওয়ায় বেকার হয়ে যান। এরপর একজনের মাধ্যমে অটোরিকশা চুরি শেখেন। তারা প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৪টি রিকশা ছিনতাই করতো।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৮ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে রামপুরার বনশ্রী এলাকা থেকে অটোরিকশা চালক শাহা আলমের রিকশায় দুজন যাত্রী ওঠে।
পরবর্তীতে পথে তাকে অজ্ঞান করে রিকশাটি নিয়ে যায় চক্রটির সদস্যরা। শাহা আলামকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ এপ্রিল মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে বনশ্রী ও খিলগাঁও এলাকার শতাধিক সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ এ বিশ্লেষণ করে অজ্ঞান পার্টির হোতা শরীফুল ইসলাম তার সহযোগী চান্দু ও শাহাবুদ্দিনকে শনাক্ত করা হয়।
পরে শনিবার (৪ মে) রাতে মুগদা থানার মানিক নগর এলাকা অভিযান চালিয়ে শরীফুল ও চান্দুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩২টি চেতনানাশক ট্যাবলেট ও একটি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চোরাই অটোরিকশা কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত ফুল মিয়া ও আল আমিনকে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্দিরগঞ্জ থানার মিজমিজি এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে সাতটি চোরাই অটো রিকশা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার শরীফুল প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন তিনি গত ৯ মাসে শতাধিক রিকশা চুরি করেছে। এমন কী শাহা আলামের রিকশা ছিনতাই করার পরেও অন্তত ৯টি অটোরিকশা ছিনতাই করেছেন। এসব রিকশা তারা ফুল মিয়া ও অপর একটি চক্রের কাছে বিক্রি করতেন।