• শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪০ অপরাহ্ন

জয়পুরহাটে বস্তায় আদা চাষ করে সফল রুস্তম আলী

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪

জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকা বড় মাঝিপাড়া গ্রামের কৃষক রুস্তম আলী বস্তায় আদা চাষ করে সফলতার পাশাপাশি এলাকায় অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এবং স্বপ্ন দেখছেন অধিক লাভের। বড় মাঝিপাড়া গ্রাম ঘুরে কৃষক রুস্তম আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আন্ত: ফসল হিসেবে পেঁপের জমিতে এবার এক হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছেন। পেঁপের পাশাপাশি আন্তঃ ফসল হিসেবে আদা চাষ হচ্ছে বেশ লাভ জনক বলে জানান, রুস্তম আলী । তিনি আরও জানান, এক হাজার বস্তা চাষ করতে খরচ হয়েছে ৪৪ হাজার টাকা। এক হাজার বস্তায় যদি এক কেজি করেও আদা পাওয়া যায় তাহলে উৎপাদন হয় এক হাজার কেজি আদা।

বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী প্রতি কেজি আদা ২০০ টাকা করে বিক্রি করলে ২ লক্ষ টাকা বিক্রি হবে মর্মে আশা প্রকাশ করেন তিনি । পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতার বস্তায় আদা চাষ করতে কৃষকদের সার্বিক ভাবে উদ্বুদ্বসহ কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে জয়পুরহাটের উন্নয়ন সংস্থা “জাকস ফাউন্ডেশন “। জাকস ফাউন্ডেশনের কৃষি কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন শাহিন বলেন, কৃষকরা যাতে আন্ত: ফসল হিসেবে বা বাড়ির পাশে পতিত জায়গায় আদা চাষ করে লাভবান হতে পারেন সে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বস্তায় আদা চাষ করে রুস্তম আলী এলাকায় অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। জাকস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মোঃ নূরুল আমিন বলেন, বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা এক ইঞ্চি জায়গা যেন অনাবাদি না থাকে এ ঘোষণা বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে জাকস ফাউন্ডেশন।

স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন জানান, বস্তায় আদা চাষের জন্য আলাদা করে জমির দরকার নেই। অনেকের বাড়িতে এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ হয়। আবার অতিবৃষ্টি বা বন্যায় ফসল ডুবে নষ্ট হওয়ার ভয়ও নেই। আবার একটি ফসল তোলার পর সেখানে আলাদা করে কোনো সার ছাড়াই আরেকটি ফসল ফলানো যাবে। খরচও তুলনা মূলক কম।
এ পদ্ধতিতে একদিকে যেমন মাটিবাহিত রোগের আক্রমণ অনেক কমে যায়, অন্যদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে বস্তা অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। বাড়ির উঠোন, প্রাচীরের কোল ঘেঁষে বা বাড়ির আশেপাশের ফাঁকা জায়গা অথবা ছাদে যেখানে খুশি রাখা যায়। এর জন্যে আলাদা কোনও জমি বা পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না।
কৃষি বিভাগ আরও জানায়, ছায়াযুক্ত জায়গাতেও এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করা যায় । সাধারণত বাঁশ বাগানের তলায় কোন ফসল চাষ হয় না। ফলে জায়গাটা পড়েই থাকে। সেই বাঁশ বাগানে বস্তায় আদা চাষ করা যায় খুব সহজেই ।

চাষ পদ্ধতি : প্রথমে মাটির শুকনো ঢেলা ভেঙে চেলে নিতে হবে। যাতে ঝুরঝুরে হয়। বস্তায় মাটি যাতে ফেঁপে থাকে সেজন্যে ভার্মিকম্পোস্ট ও ছাই মেশাতে হবে। পরিমাণমতো যোগ করতে হবে গোবর সার। মাটি তৈরি হয়ে গেলে বস্তায় ভরে চাষের জন্যে বসাতে হবে ৭৫ গ্রামের একটি করে আদার কন্দ। সামান্য পানি দিতে হবে। এরপর বস্তার উপর ঢেকে দিয়ে রাখতে হবে। এতে মাটিতে আর্দ্রতা বেশিদিন থাকে । অল্প দিনের মধ্যেই কন্দ থেকে গাছ বেরিয়ে আসা শুরু করে । আদা চাষ করতে খরচ কম আবার রোগবালাই কম হওয়ায় অধিক লাভ করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন । সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা গুলো এখন মাঠ পর্যায়ে বস্তায় আদা চাষের জন্যে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলেও জানান তিনি। সূত্র বাসস


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ