চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি॥
১৯১১ সালে স্থাপিত ভোলাহাট উপজেলার প্রথম হাই স্কুল রামেশ্বর পাইলট মডেল ইনস্টিটিউশন। উপজেলায় এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি এ পুরাতন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে জালিয়াতি ও দূর্নীতিতে ভরপূর। এ সবের দেখভাল করবে কে তার মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ১৯ আগষ্ট ২০১৫ সালে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর থেকে উপ- পরিচালক(প্রাক্তন) এসএম কামরুজ্জামান ও সহঃশিক্ষা পরিদর্শক কাওসার হোসেন এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনে আসেন। তারা পরিদর্শন প্রতিবেদনে গর্ভনিং বডির মেয়াদ শেষ হওয়ায় অবিলম্বে নিয়মিত কমিটি গঠন করে রেকর্ড প্রদর্শন করতে বলা হলেও এখন পর্যন্ত তা করা হয়নি। শিক্ষকদের সমন্বয়ে স্টক টেকিং কমিটি করার কথা বলা হলে সেটিও করা হয়নি। এদিকে ২৩ ফের্রুয়ারী/১২ সালে সমাজ বিজ্ঞানের সহকারী শিক্ষক হামিমা খাতুন(ইনডেক্স-১০৬৮৩২২) নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে ১ নভেম্বর/১২ সালে ৮ হাজার টাকার স্কেলে এমপিও ভুক্ত হয়। পরিদর্শনকালে এ শিক্ষকের নিবন্ধন সনদ যাচাই করে জাল ধরা পড়ে। ফলে তার বেতন ভাতা বাবদ গৃহীত ৩০জুলাই/১৫ সাল পর্যন্ত ২ লাখ ৬৭ হাজার ৬৮০ টাকা সরকারী কোষাগারে ও এর পরে যে বেতন ভাত নিয়েছেন তার টাকাও সরকারী কোষাগারে জমা দেয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত টাকা ফেরৎ নেয়া কো দুরের কথা তার বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করননি সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষক। এদিকে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা তিন মাস অন্তর অন্তর করা হয় না । ফলে এ কমিটি গঠন করে প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের হিসাব করার কথা বলা হলেও তা মানা হচ্ছে না। এদিকে স্কুল সংলগ্ন তেলীপাড়া গ্রামের আব্দুল হকসহ ২জন বাদি হয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরাবর প্রতিষ্ঠানের সম্পদ নামকাস্তে ৮০ লাখ টাকায় বিক্রয় করে প্রধান শিক্ষক সাদিকুল ইসলামসহ কয়েক জন মিলে আত্মসাত করার অভিযোগ এনে প্রতিকারের আশায় অভিযোগ প্রদান করেন ১০আগষ্ট১৭ তারিখে। অভিযোগে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ১২ বছর মেয়াদে ৬০ হাজার টাকায়, খাদ্যগুদামের পাশে আমবাগান ৪ লাখ টাকায় এ’ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের মাঠের পশ্চিমে জীবিত নিমসহ মেহগুনি গাছ বিক্রয় করে ৪ লাখ টাকা মোট ৮০ লাখ টাকা আত্মসাত করেছে। আর এ সব অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ২০১৪ সালে আবারও এডহক কমিটি করে অনিয়মতান্ত্রীক ভাবে চলে আসছে। অপরদিকে প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল বারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ৬ নভেম্বর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে সুবিচার চেয়েছেন তিনি তার অভিযোগপত্রে তাকে কোন কারণ ছাড়াই জেএসসি পরীক্ষার সকল দায়িত্ব পালন থেকে অন্যায় ভাবে সরিয়ে রেখেছেন এবং স্কুল জাতীয়করণের জন্য তারসহ অন্য শিক্ষকদের ব্যক্তিগত মোটা অংকের টাকা নিয়ে এক বছরেও জাতীয়করণের সামন্যতম অগ্রগতি না হওয়ায় আদায়কৃত টাকাগুলো ফেরৎ চাইলে তা দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন। অপরদিকে সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল বারী প্রধান শিক্ষকসহ ৬জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার হয়রানির শিকার হওয়ার আশংকায় ১০ নভেম্বর ভোলাহাট থানায় সাধারণ ডায়রী করেছেন। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক সাদেকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্র প্রণোদিত বলেন। সদন জালিয়াতকারী শিক্ষকের ব্যাপারে তিনি বলেন, তাকে পর পর ৩বার কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হলেও কোন উত্তর দেয়নি। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান। এ ব্যাপারে স্কুল সভাপতি মাসুদ রানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সহকারী শিক্ষক হামিমার নিবন্ধন সনদ জাল, নিয়মিত কমিটির প্রস্তুতি চলছে এবং অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি মিথ্যা বলে জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফিরোজ হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার কাছে অর্থ আত্মসাতের যে অভিযোগ করা হয়েছে তার ব্যাপারে তদন্ত অব্যহত আছে বলে জানান।