• শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন

আজ ২২ নভেম্বর তেরশ্রী গণহত্যা দিবস

আপডেটঃ : বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৭

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি॥
আজ ২২ নভেম্বর। মানিকগঞ্জের ঘিওরের তেরশ্রী গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনী তেরশ্রী এস্ট্রেটের সে সময়ের জমিদার সিদ্ধেশ্বর রায় প্রসাদ চৌধুরী, কলেজ অধ্যক্ষ আতিয়ার রহমানসহ ৪৩ জন স্বাধীনতাকামী মানুষকে হত্যা করে। ওই সময় তারা পুরো গ্রামের বাড়িঘর আগুনে জ্বালিয়ে দেয়। সেই দিন (৪৫ বছর আগে) খুব ভোরে তেরশ্রী গ্রামটিতে আক্রমণ চালায় পাক হানাদার বাহিনী। তাদের সহায়তা করে এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আল-শামস বাহিনীর সদস্যরা। হানাদাররা ঘুমন্ত গ্রামবাসীর উপর নারকীয় হতাযজ্ঞ শুরু করে। প্রথমে তেরশ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আতিয়ার রহমানকে গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। এরপর তেরশ্রীর তৎকালীন জমিদার সিদ্ধেশ্বর রায় প্রসাদ চৌধুরীর শরীরে পেট্রোল ঢেলে তাকে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়। একইভাবে ওই গ্রামের আরো ৪১জন মানুষকে হত্যার পর পুরো গ্রামে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। সেই দিনের ভয়াল স্মৃতি মনে করে ওই গ্রামের অনেকে এখনো আঁতকে উঠেন। স্বাধীনতার এত বছর পরও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের স্বীকৃতি না পাওয়ার বেদনা রয়েছে তাদের (জমিদার সিদ্ধেশ্বর রায় প্রসাদ চৌধুরীর পরিবারের সদস্যদের) মনে। স্বাধীনতার পর শহীদদের স্মরণে তেরশ্রী গ্রামে নির্মাণ করা হয় একটি স্মৃতিস্তম্ভ। কিন্তু প্রতিশ্রুতি থাকলেও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে স্মৃতিস্তম্ভের পাশে একটি যাদুঘর ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লাইব্রেরি না করায় ক্ষোভ রয়েছে নতুন প্রজন্ম ও এলাকাবাসীর।
তেরশ্রী এস্ট্রেটের জমিদার সিদ্ধেশ্বর রায় প্রসাদ চৌধুরী জমিদারের নাতনি পরমা রায় চৌধুরানী বলেন, আজকের এই দিনে আমার দাদুকে পাক বাহিনীরা নৃশংসভাবে হত্যা করে। আমরা চাই রাষ্টীয়ভাবে আমাদের শহীদ পরিবার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। তেরশ্রী এস্ট্রেটের জমিদার সিদ্ধেশ্বর রায় প্রসাদ চৌধুরী জমিদারের ছেলে সমেশ্বর রায় প্রসাদ চৌধুরী বলেন, ঘুরে ফিরে এই সেই ২২শে নভেম্বর আমাদের কাছে আসে। এই দিনটি আমাদের রক্তের সাথে মিশে গেছে। এই তেরশ্রী গ্রামে আমার বাবাসহ মোট ৪৩ জনকে পাক বাহিনীরা হত্যা করেছিল। ৩০ লাখ মানুষ আত্মাহুতি দিয়েছে (রক্ত দিয়েছে)। মুক্তিযোদ্ধোরা যেমন সম্মানিত হয়েছে ঠিক তেমনিভাবে একাত্তরে যারা আত্মাহুতি দিয়েছে তাদের পরিবারগুলোকে যেন ঠিক একইভাবে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়া হয়।

এলাকাবাসীর দাবি,শহীদ পরিবারগুলোর সদস্যদের পুনর্বাসনের পাশাপাশি সরকার শিগগিরই মুক্তিযুদ্ধের একটি যাদুঘর ও লাইব্রেরি স্থাপন করবেন।মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দীন বলেন, আমরা বলেছিলাম প্রশাসনও বলেছিল এখানে একটি লাইব্রেরি হবে,তবে এই বিষয় আমাদের মাথায় আছে। এটার জন্য জায়গা সংগ্রহ করতে হবে। এটা আমি স্থানীয় সংসদ সদস্যের সাথে আলাপ করে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে শহীদ স্মৃতি স্তম্ভের পাশে লাইব্রেরি ও মুক্তিযুদ্ধু যাদুঘর নির্মাণ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ