জানা গেছে, নতুন ভবন নির্মাণকাজের জন্য সিলেট সিটি কর্পোরেশন নগরীর তোপখানাস্থ পীর হাবিবুর রহমান পাঠাগারে নিজেদের অস্থায়ী কার্যক্রম চালায়। এই অস্থায়ী কার্যালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের কোণায় সিসিকের তিনটি গাড়ি রাখা ছিল। এ গাড়ি তিনটির নং হচ্ছে- সিলেট ব-৬১৪৮, সিলেট ট-৫৪১০ ও সিলেট ঘ-০২-০০৪৮। গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে গাড়িগুলোর কোনো হদিস মিলেনি। অথচ থানায় জিডি (নং-১৯৪৯) দায়ের করা হয়েছে গত ২৪ অক্টোবর। সিসিকের উপসহকারি প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মো. জাবেরুল ইসলাম এই জিডি দায়ের করেন।
জিডিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘গত ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে অফিসে তিনটি অকেজো গাড়ি যথাস্থানে দেখতে পাননি। খোঁজাখুঁজি করে সন্ধান না পেয়ে থানায় জিডি করছি।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের তিনটি অব্যবহৃত গাড়ি গায়েব হওয়ার ঘটনার বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তের পাশাপাশি কোতোয়ালি থানার জিডি তদন্তের আদেশ চেয়ে গত ১ নভেম্বর সিলেট চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে আবেদন করেন কোতোয়ালি পুলিশের এসআই বেনু চন্দ্র। আদালতের নির্দেশে তিনি তদন্ত কাক সম্পন্ন করে গত রোববার আদালতে দাখিল করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সিটি কর্পোরেশনের অস্থায়ী কার্যালয়ের ভেতরে গাড়িগুলো দেখাশুনার দায়িত্বে পাহারাদার হিসেবে নিউ লাইফ সিকিউরিটি কোম্পানীর সিকিউরিটির জৈন্তাপুর উপজেলার মৃত নুর উদ্দিনের ছেলে আব্দুল্লাহ। গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে সাড়ে ১২ টায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হানিফুর রহমান কয়েকজন লোক নিয়ে পুরাতন ৩টি ট্রাক পাবলিক লেবারের মাধ্যমে গ্যাস দিয়ে কাটিয়ে ২টি বেসরকারী ট্রাক দিয়ে সিটি কর্পোরেশনের মেইন গেইট দিয়ে নিয়ে যান বলে জানিয়েছে আব্দুল্লাহ। ৩টি অকেজ পুরাতন গাড়ি চুরির এবিষয়ে এসআই বেনু চন্দ্র সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হানিফুর রহমানকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ৩টি গাড়ির অংশ বিশেষ ডাম্পিংয়ের জন্য সরিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু কোথায় রাখা হয়েছে তার তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, দিনের পর দিন পড়ে থাকার সুযোগে করপোরেশনের পরিবহন শাখার একটি চক্র ওই গাড়িগুলো থেকে মূল্যবান যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে বিক্রি করে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি থানায় তিনটি গাড়ি গায়েবের কথা উল্লেখ করে জিডি করা হয়। এর একমাস পর ওই জিডি তদন্তে কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। সিটি করপোরেশন থেকে ৩টি গাড়ি নিখোঁজের ঘটনার পরপরই গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ এবং সিলেট সিটি করপোরেশনে তোলপাড় শুরু হয়।
এ ব্যাপারে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।