ডাবের পানি পছন্দ করেন না এমন মানুষ কমই আছে। গরমে পিপাসা মেটানোর অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম এটি। শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে কিংবা পেটে গোলমাল হলে ডাবের পানি দারুণ কাজ করে। স্বাদে, পুষ্টিগুণে এর জুড়ি মেলা ভার। তবে সবার জন্য কি এটি উপকারি?
ডাবের পানিতে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম থাকে। এক গ্লাস ডাবের পানিতে ক্যালরির পরিমাণ মাত্র ৪৫। এতে আছে সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক-সহ নানা খনিজ। তবে উপকারি এই পানীয় সবার জন্য উপকারি নয়। কিছু কিছু রোগ থাকলে ডাবের পানি খাওয়া অস্বাস্থ্যকর হতে পারে। চলুন জেনে নিই বিস্তারিত-
কিডনির অসুখ
ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম। চিকিৎসকদের মতে, যাদের কিডনির অসুখ আগে থেকেই আছে, তারা নিয়মিত ডাবের পানি খেতে শুরু করলে শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এটি ‘হাইপারক্যালিমিয়া’র কারণ হতে পারে। ফলে শরীরে খনিজ উপাদানগুলির ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে।
অ্যালার্জি
অনেকের বিভিন্ন খাবারে অ্যালার্জি থাকে। এমনটা হলে ডাবের পানি খাওয়া চলবে না। এতে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। চিকিৎসকের কথায়, ‘ফুড অ্যালার্জি’-র চিকিৎসা যদি চলে বা কোনোরকম ওষুধ খান, তাহলে ডাবের পানি খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তিনিই ভালো জানবেন রোগী এটি খেতে পারবেন কি পারবেন না।
ফুসফুসের রোগ
দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসে সংক্রমণ এবং তার থেকে সিস্ট হতে পারে অনেকের। ফুসফুসের সব সংক্রমণই ঠিকভাবে চিকিৎসা না হলে শেষ পর্যন্ত ফাইব্রোসিসে পরিণত হয়। এতে ফুসফুসের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ধীরে ধীরে স্থূল ও কঠিন হয়ে পড়ে। এটি শ্বাসকার্যে বাধা তৈরি করে। তখন একে ‘সিস্টিক ফাইব্রোসিস’ বলে। এমন অবস্থায় ডাবের পানি খাওয়া স্বাস্থ্যকর নাও হতে পারে।
রক্তচাপের ওঠা-নামা
ডাবের জলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম। যদি শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়, তাহলে রক্তচাপ বাড়বে। আবার পটাশিয়াম বেড়ে গেলে রক্তচাপ কমবে। যাদের রক্তচাপের সমস্যা আছে, তাদের ডাবের পানি না খাওয়াই ভালো। আর খেলেও চিকিৎসকের পরামর্শে খাওয়া উচিত।
ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিসে ডাবের পানি খাওয়া স্বাস্থ্যকর কি না, তা নিয়ে মতান্তর আছে। চিকিৎসকদের মতে, ডায়াবেটিসের রোগী যদি সপ্তাহে একদিন ডাবের পানি পান করেন, তাহলে তেমন ক্ষতি হবে না। তবে প্রতিদিন খেলে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে। সাধারণত দেখা গেছে, বাজারচলতি নরম পানীয় বা প্যাকেটজাত ফলের রসের থেকে ডাবের জলে শর্করার মাত্রা অনেকটাই কম। সেদিক থেকে এটি নিরাপদ। তবে ডায়াবেটিসের রোগী কী মাত্রায় ইনসুলিন নিচ্ছেন অথবা কেমন ওষুধ খাচ্ছেন, তার উপরেই সবটা নির্ভর করবে।