• শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন

সিলেটের রাস্তায় চলছে‘চলন্ত বোমা

আপডেটঃ : শনিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৭

এম,এ রউফ,সিলেট।।

 জ্বলানি হিসেবে তেল ছেড়ে পরিবেশবান্ধব সিএনজিতে রূপান্তরের মাধ্যমে ধোঁয়া থেকে মুক্তি মিললেও দেড় যুগ পেরিয়ে এখন তদারকির অভাব আর পরিবহন মালিকদের উদাসীনতায় সেই সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলন্ত ‘বোমায়’ রূপান্তরিত হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে সিলেট নগরী ও আশপাশের এলাকায় সিএনজি অটোরিক্সার সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলেও তা প্রতিরোধে কার্যকর সচেতনতা গড়ে উঠছে না। পাশাপাশি তদারকি না থাকায় সিলেটের অন্তত ৩ হাজার সিএনজি অটোরিক্সার সিলিন্ডার শক্তিশালী বোমায় রূপান্তর হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা।

তবে বড় ধরণের বিস্ফোরণ এড়াতে যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সম্প্রতি সিলেট বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রচারণাও চালিয়েছে। তারা সিলিন্ডার রিটেস্টহীন কোন গাড়িকে ফিটনেস প্রদান করছেন না। আর তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারণ জনগন। সিলেটে প্রায়ই যানবাহনের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহতের খবর পাওয়া যায়। পুলিশ ও সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, বাংলাদেশে যে সব গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়েছে, তা পাঁচ বছরেরও বেশি সময় থেকে সিলিন্ডারগুলোর মান পরীক্ষা করা হয়নি। যদিও সেগুলোর অধিকাংশেরই মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে কয়েক বছর আগেই।

সিলেট বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, সিএনজি অটোরিকশা প্রতিটি সিরিজে ১০ হাজার করে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দেয়া হয়েছে। যথাক্রমে সিলেট-থ-১১, ১২ এবং ১৩। কিন্তু সিলেট-থ-১৩ সিরিয়ালের সিএনজি অটোরিকশার এখনও পূর্ণ কোঠা পূরণ হয়নি। সিলেটে ১০ হাজার সিএনজি অটোরিকশা যার সিরিজ সিলেট-থ-১১ নামে চলছে। এসকল সিএনজি অটোরিকশার মেয়াদ প্রায় ১৫ বছর হয়েছে। যদিও ৫ বছর পরপর এসকল সিএনজি অটোরিকশা সিলিন্ডার রি-টেস্ট করার নিয়ম রয়েছে কিন্তু সিলেটে সিলেট-থ-১১ সিরিজের ১০ হাজার সিএনজি অটোরিকশার মধ্যে প্রায় ৩ হাজার সিএনজি অটোরিকশা সিলিন্ডার রি-টেস্ট হয়েছে বলে সিলেট জেলা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ জাকারিয়া। সম্প্রতি সিলিন্ডার রি-টেস্টহীন কোন গাড়িকে ফিটনেস প্রদান না করায় সিলেটের বিভিন্ন সিলিন্ডার রিটেস্ট সেন্টারে সিলিন্ডার রিটেস্টের জন্য গাড়ির মালিকদের যোগাযোগ করছেন।

সিলেট জেলা অটোরিকশা সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের ৭০৭-এর সভাপতি মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, বড়ধরণের বিস্ফোরণ এড়াতে সিলেট বিআরটিএর এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা আমার শ্রমিকদের বলেছি যে যাত্রী এবং নিজের সুরক্ষায় নিজের সিএনজি অটোরিকশার সিলিন্ডার রি-টেস্ট করা প্রয়োজন। তাছাড়া সিলেট বিআরটিএ অফিস থেকেও এখন আর রিটেস্ট বিহীন কোনো সিএনজি অটোরিকশাকে ফিটনেস দেয়া হয় না।

সিলেট জেলা ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. দিলু মিয়া বলেন, সিলিন্ডার রি-টেস্ট বিহীন গাড়িকে ‘শক্তিশালী বোমা’র সাথে তুলনা করা যায়। অতীত্ওে সিলেটে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে অনেক যাত্রী হতাহত হয়েছেন। আমি আমার সংগঠনের সবাইকে এবিষয়ে অবগত করেছি।

দি ইঞ্জিনিয়ার সিলিন্ডর রি-টেস্ট সেন্টারের স্বত্তাধিকারী মো. জান্নাতুল নাইম, সিএনজি অটোরিক্সায় যে সিলিন্ডার ব্যবহৃত হয় তা হচ্ছে ইনফ্লেক্স, ইকোসিটির। এ সকল সিলিন্ডারের মেয়াদ কাগজে কলমে ১৫ বছর থাকে। প্রতি ৫ বছর পর পর সিলিন্ডর ক্ষয় হয়েছে কি না তা পরীক্ষা করা দরকার। জ্বালানী গ্যাস তরল হওয়ায় সিলিন্ডারের ভেতর ক্ষয় হয়। এ কারণে সিলিন্ডার দূর্বল হয়ে বিস্ফোরণ ঘটে থাকে। এ সময় গ্যাস ভর্তি করতে গিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে থাকে। তিনি বলেন, সিলেট থ ১১ সিরিজের গাড়িগুলো বেশ পুরনো হওয়ায় সিলিন্ডার রি-টেস্ট কিংবা রিপ্লেস না করলে তা ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করা দোষের নয়।

সিলেট বিআরটিএর সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী কে এম মাহবুব কবীর বলেন, সিলেট থ ১১ সিরিজের গাড়িসহ সকল গাড়ির সিলিন্ডার রি-টেস্ট কার্ড ছাড়া আমরা কাউকে ফিটনেস সার্টিফিকেট দিচ্ছি না। এটা যাত্রীসহ সকলের নিরাপত্তার বিষয়। এক্ষেত্রে আমরা কোনো ধরণের ছাড় দেবো না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ