• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

হরিপুরে দুদকের গণশুনানি

আপডেটঃ : রবিবার, ২৯ জুলাই, ২০১৮

পীরগঞ্জ(ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি॥
দুর্নীতি প্রতিরোধ ও জনগণের সেবা প্রাপ্তী নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উদ্যোগে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার উপজেলা প্রশাসন এর সার্বিক সহযোগিতায় দুদক,দিনাজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি আয়োজনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (তদন্ত) এএফএম আমিনুল ইসলাম। উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পল্লী বিদ্যুৎ অফিস, উপজেলা ভূমি অফিস, সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসসহ উপজেলা সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন স্থানীয় ভুক্তভোগী জনগণ।
গণশুনানীতে, উপজেলা সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান ও আপত্তি অফিসার নিরঞ্জন কুমার রায় এর বিরুদ্ধে ঘুষের বিস্তর অভিযোগ উত্থাপন করেন স্থানীয় সেবা প্রার্থীগণ। এক সেবা প্রার্থী নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন ৪টি আপত্তি কেসের রায় তার অনুকূলে থাকা সত্ত্বেও রায়ের কপি সরবরাহ না করে নতুনভাবে রায় প্রদানের নিমিত্তে তার নিকট থেকে ২ লক্ষ ৫০ পঞ্চাশ টাকা উৎকোচ দাবী করেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরো অনেক অভিযোগ স্থানীয় ভুক্তভোগী জনগণ গণশুনানীতে উত্থাপন করেন। অভিযোগ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সঠিক জবাব দিতে পারেন নি। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর সেবার নি¤œমান, রোগীদের সরকারি ঔষধ না সরবরাহ করা, ডাক্তারদের অনুপস্থিতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ, পল্লী বিদ্যুৎ অফিস এর বিরুদ্ধে স্থানীয় এক সেবা প্রার্থী তাদের অভিযোগে করেন মিটার স্থাপনে, বৈদ্যতিক খুটি স্থাপনে পদে পদে পল্লী বিদ্যুতের অফিসের কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে হয় এবং ঘুষ দিলেও তারা কাজ করেন না। নানাভাবে তাদের হয়রানি করেন। এদিকে উপজেলা ভূমি অফিসে জাবেদা নকল উঠানো, ভূমি উন্নয়ন কর বাবদ রশিদে উল্লিখিত টাকার অতিরিক্ত টাকা আদায় করা, সাব-রেজিস্ট্রান, উপজেলা প্রকৌশল অফিস, সমবায় অফিস এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করেন স্থানীয় ভুক্তভোগী জনগণ।
প্রধান অতিথি দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (তদন্ত) এএফএম আমিনুল ইসলাম ধৈর্যসহকারে ভুক্তভোগী জনগণের বক্তব্য শোনেন এবং সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তাদের সেবা প্রদানের জন্য কঠোরভাবে নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনের ২টি দিকের একটি হলো দমন এবং আরেকটি হলো প্রতিরোধ। জনগণের অধিকার অনুযায়ী সেবা পাচ্ছেন কি না সেগুলো জানা ও সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে দুদক প্রত্যন্ত অঞ্চলে গণশুনানী পরিচালিত করছে। জনগণের অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান দেয়া সরকারি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব। এর ব্যত্যয় ঘটলে দুদক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি আরো বলেন, টিআর, কাবিখার আওতায় যে সকল প্রকল্প নেয়া হয় সেগুলো যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হয় তা হলে বাংলাদেশের গ্রামের চেহারা পরিবর্তন হয়ে যেত। তিনি সংশ্লিষ্টদের হুশিয়ার করে দিয়ে বলেন, টিআর, কাবিখার প্রকল্প সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। তা না হলে কঠিন পরিনতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে। পরিশেষে নাগরিক সনদ অনুযায়ী জনগণের নাগরিক সেবা নিশ্চিতকরণের জন্য স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা /কর্মচারিদের নির্দেশ প্রদান করেন তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন দুদক প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক (প্রতিরোধ ও গণসচেতনতা) মনিরুজ্জামান, দুদক রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক আব্দুল করিম, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ড. একেএম আজাদুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পীরগঞ্জ সার্কেল) মোসফেকুর রহমান, দুদক দিনাজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বেনজির আহম্মেদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এমজে আরিফ বেগ প্রমুখ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ