রংপুর অফিস॥
রংপুরের পীরগাছায় গত এক সপ্তাহে তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে ৫টি গ্রাম নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এছাড়াও নতুন করে প্রায় ১০টি গ্রাম, দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ এবং একটি কমিউনিটি ক্লিনিক হুমকির মুখে পড়েছে। সরেজমিনে ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ওই উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের তিস্তা পাড়ের লোকজন তাদের ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। এছাড়াও আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন কয়েক হাজার পরিবার। তিস্তা নদীর পাড়ে অবস্থিত শিবদেব চর, আমিন পাড়া , বৈরাগীপাড়াসহ ৫টি গ্রাম গত ৭দিনে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এসময় বাড়িঘর ও ফসলি জমিসহ বসতভিটা হারিয়ে প্রায় ২ হাজার পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়ে। বর্তমানে ওইসব নদী গর্ভে বিলিন হওয়া পরিবারের লোকজনরা খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এদিকে থেতরাই, জুয়ান সদরা, পূর্ব ছাওলা, চৌমুহনিসহ প্রায় ১০টি গ্রাম হুমকির মূখে পড়েছে। সেই সাথে গ্রামগুলোতে অবস্থিত দুটি দ্বিতল প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসা, একটি ক্লিনিক, ৩টি হাটবাজার ও ৫টি মসজিদসহ প্রায় তিন হাজার পরিবারের মাঝে নদী ভাঙ্গনের আশংকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। বর্তমানে নদী পাড়ের লোকজন রাত জেগে স¤পদ রক্ষার শেষ চেষ্টা টুকু চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দূর্ণীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে এ ভাঙ্গনের শিকার হতে হচ্ছে প্রতি বছর নদী পাড়ের লোকজনদের। তারা জানান, ছাওলার ১০নং বোল্ডারের পাড় থেকে আরও ৩ কিলোমিটার বোল্ডার দিয়ে বাধঁ নির্মাণ করে নদী শাসন করলে এ গ্রামগুলো রক্ষা হতো। কর্তৃপক্ষ অপরিকল্পিতভাবে ১নং ও ২নং বেড়ি বাধঁ নির্মাণ করলেও নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে গ্রামগুলো রক্ষা পাচ্ছেনা। এলাকাবাসী জরুরী ভিত্তিতে বোল্ডারের মাথা হতে পূর্বশিবদেবচর পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এলাকা বোল্ডার ফেলে বাধঁ নির্মাণ করে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে গ্রামগুলি রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানায়। তিস্তা নদীর ভাঙ্গনের শিকার ষাটোর্ধ মোহাম্মদ আলী প্রামানিক জানান, প্রতি বছর নদী ভাঙ্গনের ফলে পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়ন মানচিত্র থেকে ছোট হয়ে আসছে। এ অঞ্চলে গত ৫ বছরে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর ফসলি জমিসহ প্রায় ৩ হাজার পরিবারের বসতভিটা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এছাড়াও একই গ্রামের মোশারফ, আজিমুদ্দিন, শরীফ, আফাজ, মালেক, মতলেব, আবুবক্কর ও রনজিৎ বর্ম্মণ অভিযোগ করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে প্রতি বছর এ এলাকাটি তিস্তা নদীর ভাঙ্গনের শিকার হয়। এলাকাবাসীর তারা সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে তিস্তা নদীর ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষার দাবী জানান।