• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৩:৩৫ অপরাহ্ন

দেশি কাপড়ের চেয়ে পাকিস্তানি পোশাকে ঝোঁক বাড়ছে ক্রেতাদের

আপডেটঃ : সোমবার, ২৮ মে, ২০১৮

রংপুর অফিস॥
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে  রেখে  শুরু হয়েছে ঈদের কেনাকাটা । রংপুর  নগরীর জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট এর সামনে ফুটপাতের বিপনী বিতানগুলোতে বাড়ছে ক্রেতাদের আনাগোনা। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর  দেশি কাপড়ের প্রতি ক্রেতাদের ঝোঁক খুবই কম। ক্রেতারা ভারত এবং পাকিস্তানি পোশাক  বেশি কিনছেন। শিশু থেকে শুরু করে মধ্য বয়সীরাও  বিদেশী পোশাকের দিকেই ঝুঁকছেন বেশি। মেয়েরা ভারতীয় শাড়ি ও লেহেঙ্গা এবং ছেলেরা পাকিস্থানি পাঞ্জাবী ও ভারতীয় জিন্স প্যান্ট বেশি কিনছেন। তবে বিদেশি পোশাকের দাম চড়া হওয়ায় ক্রেতারা একাধিক দোকান ঘুরে যাচাই বাচাই করে কাপড় কিনছেন বলে জানান, তারা। নগরীর পোশাক বিক্রেতারা জানিয়েছেন, জামদানী ৩ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা, মেয়েদের পাগলু, বিপাশা বসু, জান্নাত-টু, আশিকী-২, জিপসি ৩শ’৫০ থেকে ২৮ হাজার ৫শ’ টাকা, ছেলেদের কার্গো জিন্স, থাই, ডিসকার্ড-২, সিম ফিট, ফরমাল টি শার্ট ৭শ’৫০ থেকে ৩ হাজার ৪শ’ টাকা, ছোটদের লেহেঙ্গা, মাসাক্কালী, সিঙ্গেল টপ, টপসেট, গেঞ্জিসেট ১ হাজার ২শ’ থেকে ৭ হাজার টাকা, পাঞ্জাবির মধ্যে বড়দের ছোটদের ধুতি কাতান, ৩শ’৫০ টাকা থেকে ৫ হাজার এবং আকর্ষণীয় শেরওয়ানী ৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। নগরীর জাহাজ কোম্পানিতে অবস্থিত বেস্ট ওয়ান গার্মেন্টেস এর স্বত্বাধিকারী জানান, মার্কেটে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ক্রেতাদের উপস্থিতি থাকছে। তবে কেনার চেয়ে দেখছেন বেশি। গাউসিয়া ফেব্রিক্সের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রহিম জানান, এবার ভারতীয় লং ড্রেস বেশি কিনছেন ক্রেতারা। রংপুর সুপার মার্কেটে পোশাক কিনতে আসা রংপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাতুল মৌ বলেন, এবার পোশাকের দাম অনেক বেশি। যেহেতু ঈদ সামনে সেহেতু দাম যাই হোক, পোশাক তো কিনতে হবে। তাই দুটি মাসাক্কালী ড্রেস কিনেছি। লালমনিরহাট থেকে রংপুরে স্ব-পরিবারে পোশাক কিনতে আসা সায়েদ বলেন, বিক্রেতারা দাম বেশি নিচ্ছেন। যেটা পছন্দ হচ্ছে সেটার দাম বাড়িয়ে বলছেন। এদিকে ক্রেতাদের দাম বাড়ানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে বিক্রেতারা বলেন, বিদেশী কাপড় আমদানি করতে খরচ বেশি হয়। এ জন্য একটু বেশি দামে বিক্রি না করলে আমাদের লোকসান গুনতে হবে। তবে বিদেশী পোশাকের আড়ালে এবারের ঈদের বাজারে কম বিক্রি হচ্ছে উত্তরাঞ্চলের তাঁতের শাড়ি, লুঙ্গি, রংপুরের পীরগাছা বেনারশী, শতরঞ্জির মতো বিখ্যাত সব ব্রান্ডের দেশীয় কাপড়।
গঙ্গাচড়া উপজেলার তালুক হাবু এলাকার রহমান উইভিং তাঁত শিল্পের মালিক ফরিদা আখতার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঈদ উপলক্ষে দেশীয় তাঁতের শাড়ির চাহিদা বেড়ে যায়। পূর্বে দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা এসে স্বল্প দামে শাড়ি, থ্রি-পিস, টু-পিস ও পাঞ্জাবি কিনতো। তবে গত দুই বছর থেকে চোরাই পথে ভারত থেকে বিভিন্ন পোশাক ঢুকে যাবার কারণে দেশীয় তাঁত শাড়ির চাহিদা কমে গেছে। তিনি আরো বলেন, দেশীয় মার্কেটে বিদেশী কাপড়ের প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি দুঃখজনক। এ শিল্পের সাথে জড়িত সকলকে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে পর্যালোচনা করতে হবে। তা না হলে আমাদের দেশীয় তাঁত শিল্প হুমকীর সম্মুক্ষিন হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ