• বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩০ পূর্বাহ্ন

ভণ্ড পির ইকবাল ঢাকায় গ্রেফতার

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ২৪ জুন, ২০২৩

লিচুর প্রলোভন দিয়ে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে কুমিল্লার দেবিদ্বারের কথিত পির ইকবাল হোসাইন শাহ সুন্নি আল কাদেরী ওরফে মাওলানা প্রফেসর মো. ইকবাল হোসাইনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

রোববার রাতে রাজধানীর মিরপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার ইকবালের ধর্মীয় কোনো প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান নেই। পড়ালেখা করেছেন ইংরেজিতে। কিন্তু সহজে টাকা উপার্জনের উদ্দেশ্যে পির সেজে দরবার শরিফ খুলে বসেন।

সোমবার দুপুরে র‌্যাবের মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন রাজধানীর কাওরান বাজারে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ২ জুন দুপুর আনুমানিক ১২টায় বাড়ির পাশের মাঠে খেলতে গেলে ইকবাল এক শিশুকে লিচু দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নিজের আস্তানায় নিয়ে কৌশলে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে শিশুটি সেখান থেকে পালিয়ে বাড়িতে গিয়ে মায়ের কাছে সব খুলে বলে। এরপর তার মা তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন।

পাশাপাশি দেবিদ্বার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। ইকবাল ও তার অনুসারীরা ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে শিশুর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখান। পরিস্থিতি প্রতিকূল দেখে ইকবাল আস্তানা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান।

খন্দকার আল মঈন বলেন, কুমিল্লার কথিত এই পির মোবাইল ফোনে ভিডিও দেখে নিয়মিত ধর্মীয় বক্তব্য দিয়ে বেড়াতেন আশপাশের বিভিন্ন জায়গায়। এছাড়া তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের এবং তার আস্তানার বিভিন্ন আইডি ও পেজ খুলে প্রচার করে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করতেন।

তার আস্তানায় অনৈতিক কার্যকলাপ চলত। আস্তানায় আসা লোকজন মাদকসেবনসহ নানা অপরাধে জড়িত। বিষয়টি ইতঃপূর্বে বেশ কয়েকবার স্থানীয় লোকদের কাছে ধরা পড়ে। তবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে অঙ্গীকারনামা দিয়ে ছাড়া পান। অন্ধ ভক্তরা ইকবালকে হাদিয়াস্বরূপ টাকাপয়সা, স্বর্ণালংকার, গবাদি পশু প্রভৃতি দিতেন, যা তিনি নিজের ও আস্তানার ব্যয় বহন করতেন।

র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, ইকবাল কুমিল্লার একটি স্থানীয় কলেজ থেকে ইংরেজি বিষয়ে স্মাতক শেষ করে বিভিন্ন কলেজে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকতা করতেন এবং স্থানীয় লোকজন তাকে প্রফেসর বলে ডাকতেন। তবে স্থায়ী কোনো চাকরি না পেয়ে সহজে টাকা উপার্জনের সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে টার্গেট করেন। এরপর আগের বেশভূষা ও চলাফেরায় পরিবর্তন এনে পিরের লেবাস ধারণ করেন।

নামের শেষে শাহ সুন্নি আল কাদেরী উপাধি যুক্ত করে ধর্মীয় অপব্যাখ্যার মাধ্যমে লোকজনের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। ২ জুনের ঘটনার পর এলাকা থেকে পালিয়ে প্রথমে কক্সবাজার এবং পরে নারায়ণগঞ্জে আত্মগোপন করেন। সর্বশেষ তিনি তার স্থান পরিবর্তন করে রাজধানীর মিরপুরে এক পরিচিতের বাসায় ওঠেন। সেখান থেকে র‌্যাব তাকে গ্রেফতার করে।

র‌্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, ইকবাল কুমিল্লার চান্দিনা এলাকার তথাকথিত একজন পিরের মুরিদ এবং স্বনামধন্য একটি দরবার শরিফের অনুসারী ও প্রতিনিধি হিসাবে নিজেকে দাবি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে নিজ বাড়িতে আস্তানা গড়ে তোলেন। তিনি শুদ্ধভাবে আরবি পড়তে পারতেন না। বিভিন্ন ইসলামিক বই পড়ে ও মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল শুনে কিছু ধর্মীয় বিষয় মুখস্থ করে সপ্তাহে একদিন নিজের আস্তানায় জমজমাট আসর বসিয়ে বক্তব্য দিতেন। আস্তানার বাইরেও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতেন। ১৮ বছর ধরে মানুষের সঙ্গে নানা কায়দায় প্রতারণা করে আসছেন তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ