পার্থ টেস্টের আগেই নাকি অস্ট্রেলিয়ায় চলমান অ্যাশেজ সিরিজের ইংল্যান্ড স্কোয়াডে যোগ দিতে চলেছেন বেন স্টোকস – এমন একটা খবর মুখে মুখে ঘুরে ফেরার কারণ হলো বেন স্টোকস এখন নিউজিল্যান্ডে। কিছু কিছু ব্রিটিশ গণমাধ্যমের দাবি, অ্যাশেজের প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই তিনি গেছেন নিউজিল্যান্ডে।
তবে, আবার এটা স্রেফ গুজব বলেই মন্তব্য করছেন অনেকে। গতকাল বুধবার বেন স্টোকস ক্রাইস্টচার্চে নিজের বাবা-মা ডেবোরাহ ও জেরার্ডের সঙ্গে দেখা করেন। তারা বাবা-মা এই শহরেই থাকেন। গণমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, বাবা-মাকে দেখতে আসার জন্যই তার এই নিউজিল্যান্ডে আসা।
এই তথ্য সত্য। তবে, একই সঙ্গে এটাও সত্যি নেই ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) তাকে নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার জন্য এনওসি বা অনাপত্তিপত্র দিয়েছে। কোনো কিছু চূড়ান্ত না হলেও, যতদূর বোঝা যাচ্ছে তিনি খেলবেন ক্যান্টারবুরির হয়ে। ফোর্ড ট্রফি নামের ৫০ ওভারের এই টুর্নামেন্টটি শুরু হবে আগামী রবিবার।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর ব্রিস্টলে মাঝরাতে নাইট ক্লাব থেকে ফেরার সময় মারামারির মতো কাণ্ড ঘটিয়ে জেলে যেতে হয়েছিল স্টোকসকে। সেই ঘটনার পর সমালোচিত এই অলরাউন্ডারকে ইংল্যান্ড দলে আপাতত নিষিদ্ধ করা হয়, বাদ দেওয়া হয় অ্যাশেজ সিরিজ থেকেও। তার সঙ্গে নিষেধাজ্ঞাদেশ পান অ্যালেক্স হেলসও।
তবে, ক্রিস ওকসের সাম্প্রতিক মন্তব্য শুনে মনে হতে পারে স্টোকস ফিরলেও ফিরতে পারেন। এই অলরাউন্ডার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ইংল্যান্ড দলের খেলোয়াড় হিসেবে আমরা অবশ্যই ওকে এখানে দেখতে চাই। একজন খেলোয়াড় হিসেবে, একজন বন্ধু হিসেবে ওকে চাই। ওর ওপর দিয়ে যা যাচ্ছে তাতে আমাদেরও কষ্ট হচ্ছে। ওকে আমরা স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। বেন বিশ্বমানের এক ক্রিকেটার, আমরা জানি ও বিশ্বের যে কোনো দলে খেললেই সেই দলটা আরো অনেক ভালো হয়ে উঠবে। তবে, ব্যাপার হলো এখনো ওর বিরুদ্ধে পুলিশী তদন্ত চলছে। তাই, আপনারা যতটুকু জানেন, এর চেয়ে বেশি কিছু আসলে আমরাও জানি না।’
যদিও, বেন স্টোকস না ফিরলেও সিরিজের বাকিটা সময় খুব নির্ভার থাকছে না স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। ব্রিসবেনে ইংল্যান্ডকে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে দিয়ে শুরু করেছে স্টিভেন স্মিথের দল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এমন জয়ে এই ভেন্যুতে টানা ২৯ টেস্ট অপরাজিত থাকলো অস্ট্রেলিয়া। ১৯৮৮-৮৯ সালে সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৯ উইকেটে হেরেছিল অজিরা। এরপর এখানে ২২টি টেস্টে জয় ও সাতটিতে ড্র’র স্বাদ নেয় অস্ট্রেলিয়া। এখানে ইংল্যান্ডের কাছে অস্ট্রেলিয়ার সর্বশেষ হার ১৯৮৬ সালে। তাই ইংলিশদের বিপক্ষে অপরাজিত থাকার রেকর্ডও ধরে রাখলো স্বাগতিকরা।
একই সঙ্গে পাঁচ ম্যাচের অ্যাশেজ সিরিজে এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে। তবে, অফ স্পিনার নাথান লিঁও মনে করছেন সামনের লড়াইটা সহজ হবে না তাদের জন্য। আগামী ২ ডিসেম্বর, শনিবার থেকে অ্যাডিলেড ওভালে শুরু হবে অ্যাশেজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। ব্রিসবেন টেস্টে পাঁচ উইকেট নেওয়া ৩০ বছর বয়সী এই স্পিনার অ্যাডিলেডে বসে বলেন, ‘ইংলিশদের আমরা সমীহ করি। আমরা জানি, ওরা বড় আর শক্ত হয়ে ফিরে আসবে। ব্যাপার আমাদের জন্য স্রেফ পার্কে গিয়ে হেঁটে আসার মতো সহজ কিছু হবে না। আসলে কোনো দলকে সমীহ না করলে তারা ফিরে এসে বড় আঘাত হানতে পারে। এগিয়ে থাকার পরও এখন তাই হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই।’