এস কে কামরুল হাসান॥
সাতক্ষীরা জেলার অন্তর্গত তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানার নগরঘাটা ইউনিয়নে জোরপূর্বক জমি দখলকে কেন্দ্র করে এক বিধবাকে ফাসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরোজমিনে জানা যায়, তালা উপজেলার অন্তর্গত নগরঘাটা ইউনিয়নের বাসিন্দা মহীউদ্দীনের সাথে পারিবারিক ফারাজী জমি নিয়ে আমিরুল মাষ্টারের দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় পর্যায়ে বার বার সালিশে আপোষ মিমাংসার চেষ্টা করা হলেও বিষয়টি মিমাংসিত না হওয়ায় উভয়ে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে ১৩-০৯-২০১৫ তারিখে একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নম্বর পি-৩৪৫/১৪। মামলার বিবরনে জানা যায়, ফারাজী সূত্রে আমিরুল মাষ্টার নানা বাড়ির এস.এ রেকর্ডীয় সম্পত্তি অনুযায়ী ৪১ শতক সম্পত্তির অংশীদার। সে মতে বর্তমান হাল রেকর্ড অনুযায়ী সেই সম্পত্তির খাজনা ও দাখিলা পরিশোধ করে আসিতেছেন। কিন্তু এই সম্পত্তি অপরপক্ষ মৃত রেজাউদ্দিনের পুত্র মহীউদ্দিন ও দাবি করে, যা তার প্রাপ নয়। এ নিয়ে মহীউদ্দিন বিভিন্ন সময় আমিরুল মাষ্টারের পরিবারকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলেন। এই মামলায় বিজ্ঞ বিচারক তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নগরঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান এবং পাটকেলঘাটা থানার ওসিকে নির্দেশ প্রদান করেন। এরই পরিপেক্ষিতে পাটকেলঘাটা থানার পক্ষ থেকে তৎকালীন সাব ইন্সপেক্টর বুলবুল মামলার তদন্ত করেন এবং যেকোন সময় সংঘর্ষ বাধতে পারে বলে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিজ্ঞ আদালত উক্ত জমির উপর ১৯-১০-২০১৭ তারিখে ১৪৪ ধারা জারি করেন। জানা যায়, মহীউদ্দীন সম্প্রতি কিছুদিন আগে বিদেশ থেকে বাড়ি আসিয়াছেন এবং আমিরুল মাষ্টার মারা যাওয়ার পরপরই তিনি উক্ত জমি দখলের জন্য নতুন ষড়যন্ত্রে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। সম্প্রতি আমিরুল মাষ্টার মারা যাওয়ায় উক্ত জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও আদালতের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জোরপূর্বক প্রতারক আদম ব্যাবসায়ী ও ভূমিদস্যু মহীউদ্দীন কফিশপ নির্মান কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি মৃত আমিরুল মাষ্টারের স্ত্রী দুই কন্যা সন্তানের জননী আমিরুন নেছা জানতে পারলে অত্র এলাকার চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান লিপুর স্বরণাপন্ন হয় এবং নগরঘাটা ইউপিতে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এরই পরিপেক্ষিতে চেয়ারম্যান বিবাদী মহীউদ্দিনকে তাৎক্ষণিক নোটিশ করেন এবং বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কফিশপ নির্মান কাজ বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। অসহায় আমিরুন নেছা ও তার সন্তানদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার লক্ষে তিনি বিভিন্ন কুটকৌশলের অবলম্বন করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ধূর্ত মহিউদ্দীন গত ইং ০৯-০১-২০১৮ তারিখে কিছু বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে রাতের আধারে দখলী জমির উপর কফিশপ আংশিক ভাংচুর করে এবং সাংবাদিককে ভ’ল ব্যাখ্যা দিয়ে পত্র পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে অসহায় পরিবারকে ফাঁসাতে চাইছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে নগরঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান লিপু বলেন, আমি কারও পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নেয় নাই। আমি জনপ্রতিনিধি হিসাবে আদালতের অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র। মহীউদ্দীন অন্যায়ভাবে উক্ত সম্পত্তি জবরদখল করার চেষ্টা চালাচ্ছে, আমি আদালতের নির্দেশনাকে সম্মান জানিয়ে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যান্ত কাজ না করার জন্য বলেছি। এজন্য আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যও সে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে মহিউদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে পাটকেলঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ এর নিকট বার বার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেন নি।বর্তমানে অসহায় পরিবারটি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভ’গতেছে এবং অসহায় বিধবা আমিরুন নেছা পরসম্পদলোভী ষড়যন্ত্রকারি মহীউদ্দীনের কবল থেকে বাঁচার জন্য বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ ব্যাপারে বিধবা আমিরুন নেছা ভুমিদস্যু মহীউদ্দিনের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্তপূর্বক শাস্তির দাবি জানিয়ে নবাগত পুলিশ সুপারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।