এসএসসির ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং
নির্মল ইন্দু সরকার, প্রভাষক
সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
নিচের উদ্দীপক পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও
জনাব জাহাঙ্গীর আলম তার প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নের জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে জামানতসহ ও জামানতবিহীন উত্স দুটির সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করেন। এরপর তিনি জামানতবিহীন ঋণ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। এ ব্যাপারে ব্যাংকে প্রস্তাব দিলে ব্যাংকে বিনিয়োগে সম্মত হয়।
ক. ডিবেঞ্চার বা ঋণপত্র কি?
খ. সব কোম্পানির ডিবেঞ্চার বিনিয়োগকারীরা ক্রয় করে না কেন?
গ. উক্ত উত্সটিতে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংক কীভাবে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে তা বর্ণনা কর।
ঘ. জনাব জাহাঙ্গীর এই উত্স দুটিতে কী ধরনের বৈসাদৃশ্য লক্ষ করেছেন তা তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।
ক. ঋণপত্র হচ্ছে জামানতবিহীন বন্ড। অর্থাত্ যে ঋণপত্রে কোনো জামানতের উল্লেখ থাকে না, তাকে ডিবেঞ্চার বলে।
খ. ডিবেঞ্চারের বিপরীতে জামানত থাকে না বিধায় সব কোম্পানির ডিবেঞ্চার বিনিয়োগকারীরা ক্রয় করে না। বিনিয়োগকারীরা সাধারণত বড় স্বনামধন্য কোম্পানি কর্তৃক ইস্যুকৃত ডিবেঞ্চারে তাদের অর্থ বিনিয়োগ করে থাকে।
গ) উক্ত উত্সটিতে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকে যে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে তা হলো-
(ক) ডিবেঞ্চারে বিপরীতে কোনো জমানত থাকে না বিধায় এটি ঝুঁকিপূর্ণ।
(খ) বন্ডের ন্যায় ডিবেঞ্চার মালিকদের ভোটাধিকার থাকে না। ফলে কোম্পানির পরিচালনায় ডিবেঞ্চার মালিকদের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
(গ) ডিবেঞ্চার মালিকরা সাধারণ পাওনাদারদের সমান মর্যাদা ভোগ করে। ফলে কোম্পানির অর্জিত আয় থেকে ডিবেঞ্চার মালিকদের সুদ দেওয়ার আগে বন্ড মালিকদের সুদ পরিশোধ করা হয়। অুরূপভাবে কোম্পানির বিলুপ্তির সময় বা অবসায়নকালে বন্ড মালিকদের দাবি বা পাওনা পরিশোধের পর ডিবেঞ্চার মালিকদের পাওনা পরিশোধ করা হয়।
ঘ. জনাব জাহাঙ্গীর আলম বন্ড ও ডিবেঞ্চার এই উত্স দুটির মধ্যে যেসব বৈসাদৃশ্য লক্ষ করেছেন তা নিম্নরূপ:
ক) সুদের হার নির্দিষ্ট থাকে বিধায় বন্ডে বিনিয়োগকারীদের আয় নির্দিষ্ট থাকে। ফলে তাদের আয়ে অনিশ্চয়তা কম থাকে। তবে কোনো কোনো সময় সুদের হার পরিবর্তনশীলও হতে পারে।
(খ) বন্ডের বিপরীতে স্থায়ী বা অন্যান্য সম্পত্তি জামানত হিসেবে রাখা হয় বিধায় বন্ডে বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি হ্রাস পায়। (গ) কোম্পানি কর্তৃক অর্জিত আয় থেকে সর্বপ্রথম বন্ড মালিকদের সুদ সম্পদ বিক্রিয় প্রাপ্ত অর্থ থেকে সর্বপ্রথম বন্ড মালিকদের পাওনা টাকা পরিশোধ করে অন্যদের দাবি পূরণ করা হয়। অর্থাত্ বন্ড মালিকদের দাবি সাধারণ এবং অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকদের দাবি থেকে অগ্রগণ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। অপরদিকে ডিবেঞ্চারের ক্ষেত্রে বৈসাদৃশ্যগুলো নিম্নরূপ:
ক) বন্ডের ন্যায় বিনিয়োগকারীরা ডিবেঞ্চার থেকে নির্দিষ্ট হারে নিয়মিত আয় পায়।
(খ) ডিবেঞ্চারের নির্দিষ্ট মেয়াদের কারণে অনেক বিনিয়োগকারীর কাছে এটি জনপ্রিয়।