ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের সমস্যা ডিজিটাল উপায়ে সমাধান করা সম্ভব। শিশুদের এখন আর চক ডাস্টার টেবিল চেয়ারে পড়ানো যাবে না। তাদের কম্পিউটারের মাধ্যমে শেখাতে হবে। কারণ এখন আর শিশুরা স্কুলে আগ্রহ ধরে রাখতে পারে না। তারা ডিজিটালের ছোঁয়া পেয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে শিশুদের শিক্ষার জন্য সফটওয়্যার তৈরিতে কাজ করেছি। বর্তমানে সাতটি সফটওয়্যার তুলে দেয়ার মতো অবস্থায় এসে পৌঁছেছি। শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর বাংলাদেশে বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে।
বিজয় নেটিজেনের উদ্যোগে শনিবার রাজধানীর এলজিইডি ভবনের দ্বিতীয় তলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর’ শীর্ষক সম্মেলন। এতে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ১৭৬০ সালের যে শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল তা এখনো বিদ্যমান রয়েছে। এর পরিবর্তন না আনলে ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থার অগ্রগতি সম্ভব নয়। এ পরিবর্তনের মাধ্যমে যে অনাকাঙিক্ষত প্রশ্নফাঁস হলে তা সমূলে উৎপাটন করা সম্ভব। ২০৪১ সালকে লক্ষ্য রেখে শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে আমূল পরিবর্তন না আনলে এদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর মো. মাহবুবুর রহমান। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক মো. দেলওয়ার হোসেন, বিকাশ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কামাল কাদির, আমরা নেট্ওয়ার্ক লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ ফরহাদ আহমেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নেটিজেন আইটি লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড সিসিপি মোহাম্মাদ আশিকুজ্জামান খান।
অনুষ্ঠানে ‘শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর’ কার্যক্রমের ওপরে মূল বক্তব্য উপস্থাপনা করেন নেটিজেন আইটি লিমিটেডর প্রধান নির্বাহী রায়হান নোবেল। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে ’ডিজিটাল শিক্ষা সবার আগে’ এমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে সারাদেশে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে বিজয় ও নেটিজেন কমিউনিটি পরিবার। প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় স্থানীয় পর্যায়ের আইসিটি প্রেমি তরুণ উদ্যোক্তাদের নিয়ে গড়ে তুলেছে এক বিশাল কমিউনিটি পরিবার। যারা প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পরিপূর্ণ ডিজিটাল সেবার আওতায় নিয়ে আসতে বিরামহীন ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ প্রকল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৩ হাজার কর্মী কাজ করছেন। মাত্র ২ বছরের মধ্যে ২৩০০ (দুইহাজার তিনশত) প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সারা দেশে বিকাশের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের ফি প্রদানের লক্ষে বিকাশ লিমিটেডের সঙ্গে নেটিজেন আইটি লিমিটেড এর চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। চুক্তিতে বিকাশের চিফ কমাশিয়াল অফিসার মিজানুর রশিদ ও নেটিজেন আইটির প্রধান নির্বাহী রায়হান নোবেল স্বাক্ষর করেন। উভয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এর ফলে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা বিকাশ ব্যবহার করে ফি পরিশোধ করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে বিকাশ লিমিটেড এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাল কাদির বলেন, ‘ শিক্ষার্থীরা যাতে বিকাশ ব্যবহার করে সহজে ঘরে বসেই টিউশন ফিস দিতে পারে তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নেটিজেনের এ উদ্যোগ কে স্বাগত জানাই। ডিজিটাল বাংলাদেশ করতে হলে ডিজিটাল শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। একাজে বিকাশ সব সময় নেটিজেন ও বিজয়ের পাশে থাকবে। শিক্ষার্থীদের ফিগুলো বিকাশ পেমেন্টে ঘরে বসে সহজে দেয়া যাবে। আপনাদের সেবা দিতে আলাদা টিম থাকবে।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিজয় শিশু শিক্ষার অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপের হালনাগাদ সংস্করণ উন্মুক্ত করা হয়। এ প্রসঙ্গে বিজয় ডিজিটালের প্রধান নির্বাহী জেসমিন জুঁই বলেন, ‘‘শিশু শিক্ষার বিকাশে ডিজিটাল মাধ্যম হিসেবে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ বিজয় শিশু শিক্ষা চালু করা হল। ’’
অনুষ্ঠানে সারাদেশ থেকে বিজয় নেটিজেনের ৭০০ এর বেশি সহযোগী হাজির হন। নেটিজেন আইটি লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড সিসিপি মোহাম্মাদ আশিকুজ্জামান খান অনুষ্ঠানে সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তার ডিজিটাল শিক্ষাকে আরও সামনে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।