• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

ফোরজি’র যুগে বাংলাদেশ

আপডেটঃ : সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

টুজি, থ্রিজির পর এবার ফোরজি’র যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ। বলা হচ্ছে, ইন্টারনেটের গতি আগের থেকে অন্তত চারগুণ বাড়বে। এক জিবি’র একটি ফাইল ডাউনলোড করতে থ্রিজি নেটওয়ার্কে যেখানে ২০ মিনিট লাগছে, ফোরজিতে সেটি পাঁচ মিনিটে সম্ভব হবে। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে অপারেটরদের সেবা দেয়ার মানসিকতার ওপর। কারণ ফোরজিতে ইন্টারনেটের প্যাকেজ কত দামের হবে, সেটা আসলে গ্রাহকদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকবে কি-না সেসব নিয়ে এখন মানুষের প্রশ্ন। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে মাত্র ১০ ভাগ গ্রাহকের হাতে আছে ফোরজি ব্যবহার করার মতো সেট। আজ সোমবার সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অপারেটরদের হাতে ফোরজির লাইসেন্স তুলে দেবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ ইত্তেফাককে বলেন, ‘আমরা আশা করব লাইসেন্স পাওয়ার পরই ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের জন্য একটি বিশেষ দিন, তারা সেদিনই ফোরজি সেবা চালু করবে। অপারেটররা জানিয়েছে, ফোরজির জন্য তারা পুরোপুরি প্রস্তুত। লাইসেন্স পেলেই তারা গ্রাহকদের সেবা দিতে বিলম্ব করবে না।’
মোবাইল অপারেটর রবি’র এমডি ও প্রধান নির্বাহী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ফোরজি লাইসেন্স পাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে তারা ফোরজি সেবা চালু করবেন। এজন্য তারা সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।
সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে থ্রিজি সেবা নিয়ে চরম বিরক্তি রয়েছে। খোদ রাজধানীর অধিকাংশ জায়গায় থ্রিজি নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। অধিকাংশ জায়গায় টুজি চলে আসে। তাহলে ফোরজি দিয়ে কি হবে? যদি নেটওয়ার্কই না পাওয়া যায় তাহলে থ্রিজি বা ফোরজিতে কিছু যায় আসে না? তবে আশার কথা টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার কঠোরভাবে হুশিয়ার করেছেন অপারেটরদের। ফোরজি সেবাতে কোন ধরনের অজুহাত তিনি মেনে নেবেন না। কারণ পর্যাপ্ত স্পেকট্রাম অবিক্রিত থাকার পরও অপারেটররা সেটা কেনেনি। পাশাপাশি টেক নিউট্রালিটি (প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা) দেয়া হয়েছে। এখন তারা স্পেকট্রাম ইচ্ছেমতো ব্যবহার করতে পারবে।
অপারেটররা বলছে, যতো পরিমাণ গ্রাহক থ্রিজিতে আসবে বলে ধারণা করা হয়েছিল তার চেয়ে অনেক বেশি সংযোগ চালু হয়ে যাওয়ায় অনেক জায়গায় সেবা পরিস্থিতি খারাপ হয়ে গেছে। বিশেষ করে শহরের বাইরে বিভিন্ন এলাকায় থ্রিজি’র অভিজ্ঞতা করুণ। বাংলাদেশে থ্রিজি প্রযুক্তির আরেকটি বড় বাধা- এখানে এই সেবা প্রযুক্তি স্পেকট্রামের যে ব্যান্ডে দেওয়া হয়েছে (২১০০ ব্যান্ড) তার বড় দুর্বলতা হলো এটি পাশাপাশি উঁচু ভবন থাকলে বেজ স্টেশন বা টাওয়ারের মাঝে এক ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়ে যায়। তাই নেটওয়ার্ক ভালো পাওয়া যায় না। ফলে শহরের বড় বড় ভবনের অলি-গলিতে নেটওয়ার্কও ভালো মেলে না। ফোরজিতে এখানেই সবচেয়ে বড় অগ্রগতি হবে। কারণ, অপারেটররা যে কোনো ব্যান্ডেই ফোরজি সেবা দিতে পারবেন। ফলে ভালো নেটওয়ার্কের বড় অগ্রগতি হবে এর মাধ্যমে। কথা বলা এবং ইন্টারনেট ব্যবহার দুই ক্ষেত্রেই তা হবে।
এবার প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা দেয়া হয়েছে। অর্থাত্ যে কোন ব্যান্ডের স্পেকট্রাম দিয়েই সেবা দেওয়ার সুযোগ মিলেছে। বাংলাদেশে এতোদিন এটি ছিলো না। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি স্পেকট্রাম নিলামের সময় থেকে এটি উন্মুক্ত করা হয়েছে। ফলে একে তো অপারেটর তার হাতে থাকা স্পেকট্রাম দিয়ে ইচ্ছে মতো নেটওয়ার্কের ডিজাইন করতে পারবে। আর টেকনোলজিক্যাল নিউট্রালিটি এমনিতেই স্পেকট্রামের কার্যক্ষমতা দেড় থেকে দুইগুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়। এতে করে বিদ্যমান স্পেকট্রাম দিয়েই অপারেটরা গ্রাহকদের ভালো সেবা দিতে পারবে বলে আশাবাদী।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ