• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৭ অপরাহ্ন

টাকা গুরুত্বপূর্ণ হলে সৌদি আরবে যেতাম: মেসি

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩

দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল লিওনেল মেসির প্যারিস ত্যাগের গুঞ্জন। সম্ভাব্য নতুন ঠিকানার তালিকায় সবার ওপরে ছিল বার্সেলোনার নাম। অর্থের ঝংকারে সম্ভাবনা জাগিয়েছিল সৌদি প্রো লীগের দল আল হিলাল এফসিও। মেসিকে ভেড়ানোর দৌড়ে যে দলটির নাম সবচেয়ে কম শোনা যায়, সেটি ইন্টার মিয়ামি। শেষ পর্যন্ত এমএলএস ক্লাবটিকেই বেছে নিলেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। মেসির যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর নেপথ্যে ইন্টার মিয়ামির লোভনীয় প্রস্তাব? বিশ্বকাপজয়ী তারকা বললেন, অর্থের জন্য হলে সৌদি ফুটবলকেই বেছে নিতেন তিনি।

লিওনেল মেসিকে ভেড়াতে দফায় দফায় মোটা অঙ্কের অর্থ প্রস্তাব করে সৌদিয়ান ক্লাব আল হিলাল। গত জানুয়ারিতে আর্জেন্টাইন সুপারস্টারকে দেয়া প্রো লীগ ক্লাবের প্রস্তাবটি বার্ষিক ৩০০ মিলিয়ন ইউরো বেতনের। গত এপ্রিলে মেসিকে ভেড়ানোর দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ৪০০ মিলিয়ন ইউরো বার্ষিক পারিশ্রমিক প্রস্তাব করে আল হিলাল। তাতেও মেসির মন না পেয়ে ৫০০ মিলিয়ন ইউরোর প্রস্তাব দেয় দলটি। পারিশ্রমিকের অঙ্ক আল হিলালের চেয়ে কম হলেও ক্লাবের স্পন্সরশিপ সত্বের একটি অংশ, টিকিট বিক্রির অর্থের অংশ এবং ভবিষ্যতে ক্লাবের মালিকানার অংশ মিলিয়ে ইন্টার মিয়ামির প্রস্তাবও কম লোভনীয় নয়।

তবে স্প্যানিশ ক্রীড়া মাধ্যম মুন্দো দেপোর্তিভোকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মেসি জানালেন, অর্থ ইন্টার মিয়ামিতে যোগ দেয়ার পেছনে প্রভাবক ছিল না। মেসি বলেন, ‘অর্থ আমার কাছে কখনোই এতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। বার্সেলোনার সঙ্গে এবার আলোচনায় তো চুক্তি নিয়ে কোনো কথাই বলিনি আমরা। তারা আমাকে একটি প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু কখনোই আনুষ্ঠানিক বা লিখিত ও স্বাক্ষর করা কোনো প্রস্তাব দেয়নি। পারিশ্রমিক নিয়ে দর কষাকষি করিনি আমরা। অর্থ গুরুত্বপূর্ণ হলে তো সৌদি আরব বা অন্য কোথাও যেতাম, যেখানে তারা আমাকে অনেক অর্থ দিতে চেয়েছিল।’
মেসির ভাষ্য, পরিবারের কারণেই ইন্টার মিয়ামিতে যোগ দিয়েছেন তিনি। আর্জেন্টিনা অধিনায়ক বলেন, ‘একটি ইউরোপিয়ান ক্লাব থেকেও প্রস্তাব ছিল আমার। কিন্তু তা ভেবেও দেখিনি, কারণ ইউরোপে খেললে আমার ভাবনায় ছিল কেবলই বার্সেলোনা। জীবনের এমন একটি পর্যায়ে এসেছি, যখন পাদপ্রদীপের আলো থেকে একটু দূরে থাকতে চাই, পরিবারের কথা আরেকটু বেশি ভাবতে চাই।’

অনেক আগেই ক্লাব ফুটবলে প্রাপ্তির ষোল আনা পূর্ণ হয় লিওনেল মেসির। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে আর্জেন্টাইন সুপারস্টারের একমাত্র অপ্রাপ্তির নাম ছিল বিশ্বকাপ শিরোপা। গত বছর সেটিও পূর্ণ হয়েছে। অর্জনে ভরপুর ক্যারিয়ারে মেসির চাওয়া আর কী থাকতে পারে? তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপ জেতার পর এবং বার্সেলোনায় ফেরার সম্ভাবনা কম থাকায় আমার মনে হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের লীগে ভিন্ন ঘরানার ফুটবলের অভিজ্ঞতা নেয়ার এবং প্রতিটি দিন উপভোগের এখনই সময়। অবশ্যই দায়িত্ব একই রকম থাকবে এবং জয়ের তাড়না ও সবসময় ভালো করার চেষ্টাও থাকবে বরাবরের মতো, তবে তা আরও বেশি মানসিক শান্তি নিয়ে।’

২০২১ সালে বার্সেলোনা থেকে বিদায় নেন লিওনেল মেসি। স্প্যানিশ লা লিগার বেতন কাঠামোর দোহাই দিয়ে আর্জেন্টাইন সুপারস্টারকে বিদায় করে কাতালানরা। অথচ অর্ধেক বেতনেও ন্যু-ক্যাম্পে থিতু হতে চেয়েছিলেন মেসি। অগত্যা প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ে (পিএসজি) যোগ দেন তিনি। মেসি জানান, প্যারিসে কাটানো দুই বছর উপভোগ করেননি তিনি। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী তারকা বলেন, ‘প্যারিসে আসতে হয়েছিল আমাকে। পরিবারসহ লম্বা সময় হোটেলে থাকতে হয়েছিল। আমার বাচ্চারা হোটেলে থেকেই স্কুলে যাচ্ছিল। আমরা কখনোই কোনোভাবে প্যারিসে যেতে চাইনি। খুব কঠিন সময় ছিল, খুবই কঠিন। তবে পরিবার আমার পাশে ছিল এবং সিদ্ধান্ত ছিল সম্মিলিত, শুধু আমার নয়। এখন আবার ছেড়ে যেতে হচ্ছে বলে কিছুটা দুঃখবোধ ওদের আছে। কারণ শুরুতে কষ্ট হলেও আস্তে আস্তে প্যারিসে মানিয়ে নিয়েছিল তারা।’

মেসি বলেন, ‘তবে এটাই সত্যি, এই দুই বছর আমার পরিবারের জন্য খুব ভালো ছিল না এবং আমি তা উপভোগ করিনি। বিশ্বকাপ জয়ের মাসটি ছিল অসাধারণ। কিন্তু এছাড়া বাকি সময়টা আমার জন্য কঠিন ছিল।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ