• বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৭ অপরাহ্ন

আইটিতে কর্মযোগ্য প্রশিক্ষণ দিচ্ছে কোডার্সট্রাস্ট:

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বুধবার, ১৪ জুন, ২০২৩

রাজধানীতে কোডার্সট্রাস্টের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ।

বাংলাদেশের তরুণ প্রজম্মকে ভবিষ্যতের প্রযুক্তি জ্ঞানে দক্ষ ও ডিজিটাল কর্মশক্তিতে রূপান্তরে ‘কোডার্সট্রাস্ট’ ৭০ হাজার প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছে। যা উদাহরণযোগ্য। নতুন প্রজন্মকে দক্ষ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলে কর্মসংস্থানের অবারিত সুযোগ তৈরি, পরিবর্তনশীল বিশ্বের যোগ্য করে তুলতে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

চট্টগ্রামের পর ঢাকায় কোডার্সট্রাস্ট নতুন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছে। মঙ্গলবার (১৩ জুন) চট্টগ্রামে কোডার্সট্রাস্ট চট্টগ্রামে নতুন ক্যাম্পাস উদ্বোধন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, সরকারি উদ্যোগের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানের বেসরকারি উদ্যোগ কারিগরি শিক্ষামানের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে কোডার্সট্রাস্ট। নিজেদের আত্মকর্মসংস্থান নয়, বহু লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে কোডার্সট্রাস্টে প্রশিক্ষণ নেওয়া শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৪ জুন) রাজধানীর জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে কোডার্সট্রাস্টের নতুন কাযক্রমের অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শুধু চাকরি নয়, বরং চাকরি দেওয়ার মতো সুযোগ তৈরি করে দেবে কোডার্সট্রাস্টের প্রশিক্ষণ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বিকাশ স্বপ্নদ্রষ্টা কামাল কাদীর বিদেশে পড়াশোনা করেও দেশে ফিরে সফল উদ্যোক্তা হয়ে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম বাড়িয়েছেন। ১০ হাজার শিক্ষার্থী এখন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করছে। তারাও দেশের জন্য সফল কিছু করবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের আর্কিটেক্ট সজীব ওয়াজেদ জয় প্রদত্ত দিকনির্দেশায় বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল। সরকার ৫৩ হাজার প্রশিক্ষণ দিয়েছে। কিন্তু কোডার্সট্রাস্ট দিয়েছে ৭০ হাজার প্রশিক্ষণ। তাদের এ অগ্রযাত্রাকে সরকার গর্বিত। ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। স্মার্ট নাগরিক হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশের প্রধান শর্ত। আর স্মার্ট নাগরিক তৈরিতে আজিজ আহমেদ প্রতিষ্ঠিত কোডার্সট্রাস্ট দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, সারাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আইসিটি প্রশিক্ষণ জরুরি। কারিগরি দক্ষতা ছাড়া ভবিষ্যতের কর্ম দুনিয়ায় টিকে থাকা সহজ হবে না। ইতিমধ্যে কোডার্সট্রাস্ট চট্টগ্রামে সে সুযোগ তৈরি করছে। আগ্রহীদের কেউ সাইন্স, কেউ টেকনোলজি, কেউ রোবটিক্স আবার কেউ সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে কাজ করবে। বলতে গেলে চতুর্থ শিল্প বিল্পবের যেসব কাজ আছে প্রায়ই সব কাজে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে কোডার্সট্রাস্ট প্রশিক্ষণ দেবে। ফলে স্মার্ট বাংলাদেশেও অগ্রযাত্রার দুয়ার প্রায় খুলে যাচ্ছে বলে দৃশ্য আশা ব্যক্ত করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পুরস্কারজয়ী আইটি উদ্যোক্তা ও কোডার্সট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আজিজ আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান, ইউনিভার্সিটি ফর পিস প্রতিনিধ, ডিসকভারি এডুকেশন প্রতিনিধ, থিম্বল প্রতিনিধ। অনুষ্ঠানে কোডার্সট্রাস্টের বৈশ্বিক সহযোগীদের কার্যক্রম ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোডার্সট্রাস্টের চুক্তির কথা জানিয়ে বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোডার্সট্রাস্ট বিশ্বস্ত সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ৩৫ লাখ শিক্ষার্থী এখানে অধ্যয়ন করছে। বলতে গেলে পুরো বাংলাদেশের মানচিত্রেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দখলে। এত সংখ্যক শিক্ষার্থীদে যদি আইটি স্কিল বাড়ানো যায় তাহলে ভেবে দেখুন বাংলাদেশের চিত্র কিভাবে জাদুর মতো বদলে যাবে। তাই এসব বিশ্বমানের কোর্সগুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ ব্যাপক শিক্ষার্থীদের জন্য কর্মসংস্থানসহ দেশ গড়ার সুযোগ তৈরি করবে।

ডিজিটাল অগ্রগতিতে গবেষণার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে সে জন্য শিল্পপতিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী জানালেন, গবেষণায় বিনিয়োগই পারবে অগ্রযাত্রাকে স্থায়ী রূপ দিতে।

বক্তব্য রাখছেন কোডার্সট্রাস্টের চেয়ারম্যান আজিজ আহমেদ।
অনুষ্ঠানে কোডার্সট্রাস্টের চেয়ারম্যান আজিজ আহমেদ বলেন, ভবিষ্যতের প্রতিষ্ঠানের ৬৫ শতাংশ লোক কর্ম অযোগ্য হয়ে পড়বে কারিগরি জ্ঞানের অভাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নেওয়ার পরেও চাকরি পেতে ৩ থেকে ৫ বছর সময় লেগে যায়। কোডার্সট্রাস্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল স্কিলস দিয়েই তাদের দ্রুত কর্মবাজারে সুযোগ করে দিতে পারি। যারা এখন কাজকর্মে আছে তাদেরও প্রতিনিয়ত নতুন দক্ষতা নিতে হয়। বর্তমান দক্ষতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে হয়। কর্মবাজারে টিকে থাকতে প্রতি ৫ বছরে বিশ্বের ৪৫ শতাংশ মানুষকেই নিজেকে নতুন কিছুতে দক্ষ করে তুলতে হয়। তা না হলে পিছিয়ে পড়তে হবে। কর্মহীন হওয়ার ঝুঁকিও থাকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং বর্তমানে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার অগ্রযাত্রায় ডিজিটাল দক্ষতাই সবচেয়ে বড় শক্তি। জনশক্তিকে ডিজিটাল শক্তিতে রূপান্তরের চেষ্টায় কাজ করছে কোডার্সট্রাস্ট।

অনুষ্ঠানে কোডার্সট্রাস্টের আন্তর্জাতিক সহযোগী প্রতিষ্ঠান থিম্বল সিইও অস্কার পেড্রোসো যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে লেখাপড়ার সময়ে রোবটিক্স শেখার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, কোডার্সট্রাস্টের সঙ্গে কাজ করে বাংলাদেশেও আমরা স্কুল পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের রোবোটিক্স বিজ্ঞান ও দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষায় উৎসাহিত করতে চাই।

বক্তারা বলেন, বিগত ১৪ বছরে দেশ বহুলাংশে এগিয়েছে। দারিদ্র কমেছে, বেড়েছে শিক্ষার হার। ২০১০ সালে কারিগরি শিক্ষার হার ছিল ১ শতাংশ। যা এখন ১৭ শতাংশ। ১৭ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশে পৌঁছাতে কোডার্সট্রাস্ট দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে পারবে। বাংলাদেশের যে উন্নয়নের অভিযাত্রা সে জায়গায় সবার একযোগে কাজ করা জরুরি।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ডিজিটাল হওয়ার পরে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অগ্রযাত্রায় কোডার্সট্রাস্ট অন্যতম সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীরা কোডার্সট্রাস্টের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজেদের জীবিকার মানোন্নয়নে সক্ষম হবে।

তথ্যপ্রযুক্তিতে ভাবনা পরিবর্তন দরকার। দেশকে ডিজিটাইলাইজড করে সমতায় আনতে গেলে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতকে উন্নত করে কাজে লাগাতে হবে। বিজ্ঞানমনস্কক ও ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোডার্সট্রাস্টের সংযুক্তির বিষয়ে বলেন, কোডার্সট্রাস্টের সঙ্গে আমরা কাজ করতে চাই। চুক্তি করেছি আমরা। ফলে এখন থেকে আমাদের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিংয়ের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাবে।

বর্তমানে কোডার্সট্রাস্ট্রের নিয়মিত কোর্সের মধ্যে আছে ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, অ্যাকাউন্টস ম্যানেজম্যান্ট সিস্টেম, অ্যাডভান্সড এক্সেল, ভিডিও এডিটিং, কনটেন্ট রাইটিং, ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভলভমেন্ট ও অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভলপমেন্ট।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ