সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধিতে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। এক পর্যায়ে তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে মৌচাক ও কোনাবাড়ী এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।
পুলিশ, কারখানার শ্রমিক ও এলাকাবাসী জানান, শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি না করায় তারা সোমবারের মতো মঙ্গলবার দুপুরেও বিভিন্ন কারখানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা কোনাবাড়ী এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে প্রায় আধা ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
এ সময় শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এক পর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পোশাক শ্রমিক আফরোজা বেগম বলেন, অপারেটর পদে চাকরি করি। বেতন ১০ হাজার ২০০ টাকা। জিনিসের অতিরিক্ত দামের কারণে এই বেতনে সংসার চলে না। কারখানা কর্তৃপক্ষকে বেতন বাড়ানোর কথা বললেও তারা বেতন বাড়াচ্ছে না। অথচ বাজারে কিছু কিনতে গেলে ৮০ টাকার নিচে কেনা যায় না। প্রতিমাসে বাসা ভাড়া সাড়ে ৩ হাজার টাকা দিতে হয়। বাকি টাকা দিয়ে সংসার চালাবো কীভাবে? তাই বাধ্য হয়ে আন্দোলন করতে এসেছি।
সেলিনা বেগম নামে কারখানার শ্রমিক জানান, যে টাকা বেতন পাই তা দিয়ে ১৫ দিনও সংসার চলে না। ঘর ভাড়া, ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ, চিকিৎসার খরচ, রিকশাভাড়া ও খাওয়া-দাওয়ার খরচ হয় না। সবকিছুর দাম অতিরিক্ত। আমাদের খেয়ে বাঁচতে হবে। এই বেতনে তিনবেলা খেতে পাচ্ছি না। বেতন বৃদ্ধি না করলে আন্দোলন ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। আমাদেরতো বাঁচার অধিকার আছে। আমরা তিনবেলা খেয়ে বাঁচতে চাই। কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ আমাদের বেতন বৃদ্ধি করে দিক, তা না হলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানো হোক।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি-কোনাবাড়ী জোন) মো. আসাদুজ্জামান জানান, বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা কোনাবাড়ী এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ রেখে বিক্ষোভ করেন। এছাড়া বিভিন্ন কারখানায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে টিয়ারশেল ছুড়ে ও ধাওয়া দিয়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।