মাঘ মাসের কেবল ছয় দিন হয়েছে। এখনও শুরুর ধাপে আছে শীতের মাস মাঘ। ফাল্গুন আসতে এখনও অনেক দিন বাকি। এরই মধ্যে খুলনা শহর ও গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে আমের মুকুল। চোখে পড়ে মুকুলে ছেয়ে থাকা অসংখ্য আম গাছ।
এভাবে ফাল্গুনের আগেই গাছে গাছে প্রস্ফুটিত আমের মুকুল সর্বত্র ছড়াচ্ছে সোনালি আভা। আম্র মুকুলের গন্ধেও বিমোহিত হচ্ছেন পথচারীরা। গাছে গাছে আগাম মুকুলের দেখা মেলায় স্থানীয়রা বেশ খুশি।
এরই মধ্যে মুকুলের উঁকিতে গাছে গাছে মৌমাছির আনাগোনা শুরু হয়েছে। মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণ যেন জাদুর মতো কাছে টানছে তাদের। গাছের প্রতিটি শাখা-প্রশাখায় তাই চলছে মৌমাছি আর ভ্রমরের সুরব্যঞ্জনা। নগরজীবনে চলার পথে ঘুরেফিরে আমগাছের ঢালেই উঠছে পথচারীর চোখ। শহর ও গ্রামের আম বাগানগুলোতেও একই দৃশ্য।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মহানগরীর নুরনগর, খালিশপুর, দৌলতপুর, খানজাহান আলী, শিরোমনি এলাকায় আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। সোনারাঙা সেই মুকুলের পরিমাণও কম নয়। সৌরভ ছড়াচ্ছে বাতাসে।
খুলনা অঞ্চলে ৩৫ থেকে ৪০ জাতের আম বাড়ির বাগানে চাষ হয়ে থাকে। আর সারা দেশে রয়েছে ২৫০ জাতের। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ফজলি, গোপালভোগ, মোহনভোগ, ল্যাংড়া, ক্ষীরসাপাত, হিমসাগর, কৃষাণভোগ, মল্লিকা, লক্ষণা, আম্রপালি, দুধসর, দুধকলম, বিন্দাবনী, আরজান, রাণী পসন, মিশ্রিদানা, সিঁন্দুরী, আশ্বিনা।
নুরনগর এলাকার পথচারী রহিমা বেগম বলেন, মাঘের শুরুতে এ গাছটিতে আগাম মুকুল আসে প্রতি বছরই। গাছে মুকুল দেখে বোঝা যায় আমের মৌসুম এসে যাচ্ছে। শীত বিদায় নেওয়ার সময় এগিয়ে আসছে।
কৃষি অফিস সূত্র জানা গেছে, ডিসেম্বরের শেষের দিকে জানুয়ারির মাঝামাঝি অবধি বারোমাসি বা লোকাল জাতের আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়। ফেব্রুয়ারিতে মূলত গাছে মুকুল আসা শুরু হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মাসের মাঝামাঝিতে সব গাছে মুকুল দেখা যাবে।
কৃষি বিভাগ জানায়, আমের ফলন নির্ভর করে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন।
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মৌসুম শুরুতেই গাছে মুকুল দেখা যায়। ফাল্গুনের শুরুতে প্রতিটি আম গাছ মুকুলে ছেয়ে যায়। এই ছেয়ে যাওয়ার সূচনা এখন থেকেই হয়। এটা স্বাভাবিক নিয়মেই আছে।