সরকার ঘোষিত নতুন স্কেলে বেতনের দাবিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় একটি খাদ্যপণ্য উৎপাদন কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করছেন।
আজ সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকাল পৌনে ৮টা থেকে পৌনে ১০টা পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এ কর্মসূচি পালন করেন শ্রমিকেরা। এ সময় সেখানে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে শ্রমিকদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।
কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েক মাস আগে সরকার শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা ঘোষণা করে। পোশাক কারখানাগুলো সরকার ঘোষিত বেতন বাস্তবায়ন করলেও গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কোকোলা ফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড কারখানা কর্তৃপক্ষ তা বাস্তবায়ন করেনি। সরকার ঘোষিত বেতন বাস্তবায়নের দাবিতে আজ সকাল থেকে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে ওই মহাসড়কের উভয় দিকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
খবর পেয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশ ও কালিয়াকৈর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরে যেতে বলে। কিন্তু শ্রমিকেরা পুলিশের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে পুলিশ শ্রমিকদের লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
কোকোলা ফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড কারখানার শ্রমিক আরাফাত হোসেন বলেন, ‘সব কারখানায় শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ১২ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হলেও আমাদের কারখানায় দিচ্ছে না। আমাদের কারখানার শ্রমিকেরা সর্বনিম্ন বেতন পাচ্ছেন ৬ হাজার ৭০০ টাকা। সবাই বেতন পেলে আমরা কেন পাচ্ছি না, আমাদের কেন ঠকানো হচ্ছে?
শ্রমিক মো. হাবিব বলেন, ‘চলতি মাসের শুরু থেকেই আমরা সরকার ঘোষিত বেতন দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসতেছি। কর্তৃপক্ষ দিচ্ছি-দেব বলে সময় নিচ্ছে। এখন পর্যন্ত সেই বেতন আমরা পাইনি। এ কারণে বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি।
গত বৃহস্পতিবার থেকে শ্রমিকদের সঙ্গে বেতন–ভাতা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বলে জানান কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আনিসুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘বেশ কয়েকবার আলাপ–আলোচনা করে বেতনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁদের বেতন ছিল ৬ হাজার ৭০০ টাকা। তাঁদের বেতন ১ হাজার ৩০০ টাকা বৃদ্ধি করে এখন ৮ হাজার টাকা করা হয়েছে। গত শনিবার কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছিল। বেতনের বিষয়ে সমাধান হওয়ার পর গতকাল রোববার থেকে শ্রমিকেরা কাজও করেছেন। কিন্তু আজ সকালে বহিরাগত কিছু শ্রমিকের উসকানিতে বিক্ষোভ হয়েছে। সেখানে আমাদের কোনো শ্রমিক ছিল না।
মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইফুল আলম বলেন, শ্রমিকদের ধাওয়া ও লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকেরা সরে গেলে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। কারখানা এলাকায় শিল্প ও থানার অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা আছে।