বয়স বাড়ার সাথে সাথে ত্বকে পরিবর্তন দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। তবে বাদাম ও বীজ ত্বকে বিস্ময়কর প্রভাব নিয়ে আসতে পারে।
তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান গ্রহণের মাধ্যমে ত্বকের ক্ষয়, বয়সের ছাপ ধীর করে তারুণ্য ও লাবণ্য ফুটিয়ে তোলা যায়।
বাদাম ও বীজ পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ। এসবে আছে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডস যা ত্বক আর্দ্র রাখে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়।
এই বিষয়ে ভারতীয় পুষ্টিবিদ রিয়া দেশাই বলেন, “ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মতো কাজ করে ত্বককে সুরক্ষিত রাখে ও বয়সের ছাপ কমাতে সহায়তা করে।”
এছাড়া জিংকের মতো খনিজ উপাদানের উৎস যা কোলাজেনের উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং ব্রণের প্রবণতা কমায়।
এই পুষ্টিবিদ জানান, বাদাম ও বীজ নিয়মিত খাওয়া, সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা ও নিয়মিত যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে ত্বক ভালো রাখা যায়।
কাঠবাদাম: উচ্চ ভিটামিন ই সমৃদ্ধ। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকে ফ্রি রেডিকেলের কারণে হওয়া অক্সিডেটিভ চাপ কমায়। ভিটামিন ই কোলাজেনের উৎপাদন বাড়ায়, ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করে।
এছাড়াও রয়েছে বায়োটিন যা ত্বক সুস্থ রাখতে এবং কোষের পুনর্গঠনে সহায়তা করে।
দেশাই বলেন, “কাঠবাদাম ত্বকের বলিরেখা, সুক্ষ্ম ভাঁজ এবং ‘হাইপারপিগমেন্টেইশন’ কমাতেও কার্যকর ভূমিকা রাখে।”
আখরোট: আছে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডস এবং পলিআনস্যাচুরেইটেড ফ্যাটি অ্যাসিডস যা ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং সূক্ষ্ম ভাঁজ দূর করে।
জিংক সমৃদ্ধ আখরোট ত্বক মসৃণ রাখতে এবং ব্রণ কমাতে ভূমিকা রাখে। এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যা ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং বলিরেখা কমাতে পারে।
চিয়া বীজ: ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডস সমৃদ্ধ যা প্রদাহ নাশক হিসেবে কাজ করে। এসব ফ্যাটি অ্যাসিডস ত্বকের সুরক্ষার স্তর মজবুত রাখে, পানিশূন্যতা কমায় এবং ত্বকের স্বাস্থ্যকর রং বজায় রাখে।
চিয়া বীজে থাকা জিংক কোলাজেনের উৎপাদনে সহায়তে করে এবং ক্ষত নিরাময়ের ভূমিকা রাখে।
তিসির বীজ: ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডস সমৃদ্ধ। এটা ত্বকের প্রদাহ কমাতে ভূমিকা রাখে। ত্বক আর্দ্র ও মসৃণ রাখতে সহায়তা করে।
সূর্যমুখীর বীজ: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন ই সমৃদ্ধ যা ফ্রি রেডিক্যাল থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখে এবং পারিবেশিক চাপ কমায়।
দেশাই বলেন, “ভিটামিন ই ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়, বলিরেখা কমায়। এতে আছে কপার যা মেলানিনের উৎপাদন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ত্বক সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।”
কুমড়ার বীজ: রয়েছে জিংক। এটি ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে, প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং ক্ষত সরাতে সহায়তা করে।
ব্রণ প্রবণ ত্বকের জন্য এটা বেশি উপকারী। এতে আরও আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন- ভিটামিন ই যা ত্বক সার্বিকভাবে সুস্থ রাখতে পারে।
তিলের বীজ: অত্যাবশ্যকীয় খনিজ উপাদান জিংক সমৃদ্ধ। এটা ত্বকে তেলের উৎপাদন স্বাভাবিক রাখে। যাদের ত্বক তৈলাক্ত ও ব্রণ প্রবণ তাদের জন্য এটা বেশি উপকারী। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির কারণে হওয়া ত্বকের ক্ষয় কমাতে সহায়তা করে এই বীজ।
যা করা উচিৎ
সঠিক ফলাফল পেতে সকালে অথবা সন্ধ্যায় এইসব বাদাম ও বীজ একসাথে নাস্তা হিসেবে খাওয়ার পরামর্শ দেন, দেশাই।
দৈনিক ৩০ গ্রাম বীজ ও বাদাম খাওয়া উপকারী। যা থেকে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা মিটবে।