রংপুর অফিস॥
গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলার ৩ নং দামোদরপুর ইউনিয়নের মরূয়াদহ গ্রামে ৬ টি পরিবারের বসত বাড়িতে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ ও লুটতারাজের ঘটনা ঘটেছে। এতে ওই পরিবারগুলোর ঘরবাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে। লুটপাট করা হয়েছে পরিবারগুলোর যাবতীয় সম্পদ। থানায় মামলা করায় ওই পরিবারগুলোকে এলাকাছাড়া করেছে একই এলাকার প্রভাবশালী মহল। এতে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো বসতভিটা হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেছে। বিষয়টি অবহিত করে গতকাল শনিবার রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগি পরিবারের সদস্যস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হামলার শিকার হওয়া ও এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার বাদী শামীম মিয়া।
শামীম মিয়া বলেন, গত ২৩ অক্টোবর সকাল অনুমান ৮ টার দিকে সাদুল্ল্যাপুর বন্দরে যাওয়ার পথে ওই এলাকার মাজেদ মেম্বারের বাড়ির সামনে পাকা রাস্তায় পৌঁছলে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে একই এলাকার মৃত গনি মন্ডল এর ছেলে সাখোয়াত হোসেন এর নির্দেশে খোকন মিয়া, সাহাবুদ্দিন মন্ডল, রফিকুল ইসলাম, আনিছুর রহমান, তিত,ু নিতু, জনি, জিসাদ, শরিফুল ইসলাম, রুবেল, মাইন, মিশু, আলম মিয়া, কামরুলসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জন তার উপর আক্রমন করে। তারা তাকে বেধরক মারধর করে। সে কোনমতে প্রাণ বাঁচিয়ে নিজ বাড়িতে প্রবেশ করে। পরে আক্রমন কারীরা তার বাড়িতে প্রবেশ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার পিতাঃ আবুল কাশেম, জ্যাঠাত ভাই মিলন ও মা হাসিনা বেগমকে কুপিয়ে জখম করে। তাদের চিৎকারে তার চাচাতো বোন জরিনা, ফুপু বেছোয়া বেগম ও জ্যাঠাতো ভাইয়ের স্ত্রী খাদিজা বেগম এগিয়ে আসলে তাদেরকের মারধর করে অভিযুক্তরা।
মারপিটের এক পর্যায়ে তারা ওই বাড়ির সবগুলো ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এসময় তারা ওই বাড়ির গাছগাছালি কেটে ফেলে। বাড়িতে থাকা গবাদিপশু, ধান, চাল, নগদ টাকা, অলংকারসহ প্রায় ১৯ লক্ষ টাকার মালামাল লুটতারাজ করে নিয়ে যায়।
এর পরে হামলায় আহতদের এলাকাবাসীর সহয়তায় প্রথমে সাদুল্যাপুর হাসপাতালে এবং পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিনই সাদুল্ল্যাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন শামীম। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটঁনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে শামীম নিজে থানায় গিয়ে এজাহার করেন। তখন ওসি বোরহান উদ্দিন নিজেই ঘনাস্থল পরিদর্শন করে খোকন ও সাখওয়াৎ কে গ্রেফতার করে প্রথমে থানা হাজতে পরে জেল হাজতে প্রেরণ করে। পরে আসামীগণ জামিন পেয়ে আরও চড়াও হয়। তারা এখন তাদেরকে প্রাণ নাশের হুমকী দিচ্ছে।
শামীম আরও বলেন, যে জমি নিয়ে এই সংঘর্ষ, সেই জমি নিয়ে মামলার ১নং বিবাদী সাখোয়াত হোসেন গাইবান্ধা কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন। তাতে তিনি পরাজিত হয়ে আমাদের উপর এই তান্ডব চালিয়ে আমাদেরকে বাড়ি থেকে উৎখাত করে দিয়েছে। আমরা প্রায় ৬ পরিবারের ২০সদস্য বসতবাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে আছি। মামলা দেয়ার পরেও বিভিন্ন হুমকি ধামকির ভয়ে আমরা আতংকে জীবন যাপন করছি। এখন আমাদের থাকার জায়গা নেই। আমরা উদ্ভাস্তু জীবন যাপন করছি। এমত অবস্থায় জীবনের নিরাপত্তার জন্য সাংবাদিক মহলের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।