বাগেরহাট প্রতিনিধি॥
প্রায় দেড়শ বছরের পুরানো ঐতিহ্যবাহী সুন্দরবনের দুবলার আলোরকোলে তিনদিন ব্যাপী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাস উৎসব শনিবার সাকালে পূর্ণ¯œানের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছে। হাজার হাজার পূর্ণার্থী শনিবার সকালে সূর্যোদয়ের আগে সাগরে জোয়ারের প্রথম ¯œান করে তাদের মনো বাসনা যেন পূর্ণ হয় তার প্রার্থনা করেন। গত ২ নভেম্বর এই রাস উৎসব শুরু হয়। প্রতি বছর কার্ত্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথীতে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চরের আলোরকোলে এই রাস উৎসব শুরু হয়। রাস উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।এ সময় অনাান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ^াস, পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায়, বন সংরক্ষক (সিএফ) আমির হোসাইন চৌধুরী, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান সহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সুন্দরবনের রাস উৎসবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী, পুরুষ ও দর্শনার্থীসহ জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষ এখানে সমাবেত হন। তিনদিনের এই উৎসব স্থলে দোকানিরা নানা পসরা সাজিয়ে বসেন। সুন্দরবনের আলোরকোলে রাস উৎসব শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন করতে সুন্দরবন পূর্ব ও পশ্চিম বিভাগে মোট আটটি প্রবেশ দ্বার প্রস্তুত রাখে। প্রবেশ দ্বারগুলো হচ্ছে, ঢাংমারী, বগী, কচিখালী, শরণখোলা স্টেশন, বুড়িগোয়ালিনি, কৈখালী, কয়রা কাশিয়াবাদ এবং নলিয়ান। এসব স্থান থেকে বনভিাগের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করা যাবে। গত ২ নভেম্বর সকাল থেকে পূর্ণার্থীরা প্রবেশ অনুমতি (পাশপারমিট) নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় বলেন, সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে তিনদিন ব্যাপী রাস উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। রাস উৎসবকে ঘিরে সুন্দরবনে নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পূর্ণার্থীদের যাতে উৎসবে যোগ দিতে কোন অসুবিধা না হয় তার জন্য র্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও বনবিভাগ ছিল তৎপর। রাস উৎসব উৎযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ দে বলেন, শনিবার সকালে সূর্যোদয়ের আগে সাগরের প্রথম জোয়ারে পূর্ণ¯œান করে তাদের মনো বাসনা যেন পূর্ণ হয় তার প্রার্থনা করেন। কার্ত্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথীতে হাজার হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পূর্ণলাভের আশায় এখানে এসেছিলেন। সূর্যোদয়ের আগে সাগরের জোয়ারের জলে ¯œান করলে পাপমোচন হয়ে থাকে বলে তারা বিশ^াস করেন। এখানে প্রতিদিন পূজার্চ্চনা, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।সুন্দরবন বিভাগের বনসংরক্ষক (সিএফ) আমির হোসাইন চৌধুরী এই প্রতিনিধি কে বলেন, ঐতিহ্যবাহী সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে তিনদিন ব্যাপী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাস উৎসব পূর্ণ¯œানের মধ্যে দিয়ে শনিবার সকালে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। সরকারের মন্ত্রী, প্রশাসনের কর্মকর্তারাসহ হাজার হাজার পূর্ণার্থী ও পর্যটকরা এই রাস উৎসবে অংশ নেন। রাস উৎসব স্থল সব ধর্মের মানুষের এক মহা মিলন মেলায় পরিণত হয়।