সাভারের আশুলিয়ায় বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সকালে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের নরসিংহপুর এলাকার ইথিক্যাল গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা নরসিংহপুর-কাশিমপুর সড়ক অবরোধ করে এই বিক্ষোভ করেন।
এর আগে এদিন সকালে কাজে যোগ দিতে গেলে কারখানার গেটে বন্ধের নোটিশ দেখতে পান শ্রমিকরা।
নোটিশে বলা হয়, ইথিক্যাল গার্মেন্টস লিমিটেডে কর্মরত সব কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, কর্তৃপক্ষের সিদ্বান্ত অনুযায়ী অত্র কারখানার সব সেকশন আগামী ১৬ মে রোজ বৃহস্পতিবার ইথিক্যাল গার্মেন্টস লিমিটেডের সব শাখা সাধারণ ছুটি হিসেবে বন্ধ থাকবে। এ ব্যাপারে সবাইকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
শ্রমিকরা জানান, প্রায় প্রতি মাসে বেতন দেওয়ার সময় তালবাহানা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। গত এপ্রিল মাসের বেতন আজ ১৬ তারিখ হলেও পরিশোধ করেনি মালিক পক্ষ। গতকাল ১৫ মে এপ্রিল মাসের বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। পরে আজ শ্রমিকরা কাজে যোগ দেওয়ার জন্য কারখানায় গেলে গেটে বন্ধের নোটিশ দেখা যায়। এরপর শ্রমিকরা একটি আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
ওই কারখানার শ্রমিক বকুল জানান, শ্রমিকদের গত এপ্রিল মাসের বেতন ১০ মে পরিশোধ করার কথা ছিল। পরে ১০ মে বেতন পরিশোধ না করে পুনরায় ১৫ মে বেতন পরিশোধের দিন নির্ধারণ করে। গতকালও বেতন পরিশোধ না করে আগামী ২১ মে বেতন পরিশোধের দিন ধার্য করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মালিক পক্ষের এই সিদ্ধান্ত শ্রমিকরা মেনে নেননি। আজ সকালে শ্রমিকরা কারখানায় গেলে গেটে বন্ধের নোটিশ দেখতে পান। পরে শ্রমিকরা কারখানা খুলে দেওয়া ও বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করলে আমি বাসায় চলে আসি। এরপর কি ঘটেছে আমি জানি না।
অপর শ্রমিক শাহীন বলেন, প্রতি মাসে বেতন দেওয়ার সময় হলে কর্তৃপক্ষ টালবাহানা করে। সময় মতো বাসাভাড়া, দোকান বাকি পরিশোধ করতে পারি না। এ জন্য বাড়ির মালিক ও দোকানদারের কথা শুনতে হয়। আমরা কাজের টাকা চাই, আমরা তো দান চাই না। আমরা দ্রুত এবং সময়মতো বেতন পরিশোধের দাবি জানাই।
ইথিক্যাল গার্মেন্টস লিমিটেডের এডমিন ম্যানেজার বেলাল হোসেন বলেন, শ্রমিকদের দাবি যৌক্তিক। তারা গত এপ্রিল মাসের বেতন পাবেন। গতকাল বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও টাকার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে আগামী ২১ মে বেতন দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
গতকালই শ্রমিকরা কারখানার সিদ্ধান্ত মেনে না নিয়ে আন্দোলনের চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে আজ সকালে শ্রমিকরা কারখানায় এলে তারা আন্দোলনের প্রস্তুতি নেন। কারখানা ভাঙচুরের আশঙ্কা থেকে আমরা আজকের দিনের জন্য কারখানা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছি। আগামী ২১ তারিখের আগে কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন দিতে পারবে না। আমরা শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করছি।
আশুলিয়া শিল্প-পুলিশ-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার সাহা বলেন, আমরা প্রস্তুত ছিলাম। শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু তারা পারেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।