মানবপাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার চীনা নাগরিক জিসাও সুহুইকে (৩৪) আদালত কারাগারে পাঠিয়েছেন। পাশাপাশি পাঁচ ভুক্তভোগী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
এদিকে পাচার চক্রের অন্যতম সদস্য সুমি চাকমা ওরফে হেলিকেও আটক করেছে পুলিশ। রোববার (৯ জুন) রাতে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে নানা প্রলোভনে চীনে পাচারের উদ্দেশ্যে কিশোরী-তরুণী সংগ্রহ করছিলেন চক্রের সদস্য হেলি চাকমা। বিদেশে উচ্চ মূল্যে বেতন ও সুবিধার কথা বলে কিশোরী-তরুণীদের চীনে পাচার করতো চক্রটি।
পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিউল আজম জানান, রোববার সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে উদ্ধার পাঁচ ভুক্তভোগীর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার জিসাও সুহুইয়ের জবানবন্দি নেওয়া শেষে তাকে খাগড়াছড়ি কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ভুক্তভোগী দুজনকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনজনের বাড়ি রাঙ্গামাটি হওয়ায় তাদের জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আদালতে জবানবন্দি দেওয়া ভুক্তভোগীদের একজন সাংবাদিকদের জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হেলি চাকমার সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। চীনে উচ্চ বেতনের চাকরির সুযোগ করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ঢাকায় যেতে বলেন হেলি।
ঢাকায় যাওয়ার জন্য ওই ভুক্তভোগীকে পাঁচ হাজার টাকাও পাঠানো হয়। ঢাকায় যাওয়ার পর তার ফোন কেড়ে নিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। ওই ভুক্তভোগী কৌশলে বড় বোনকে বিষয়টি জানালে পুলিশের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করা হয়।
মূলত খাগড়াছড়ির পানছড়ির দুই কিশোরী নিখোঁজের খবরের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ অনুসন্ধানে নামে। পরে ঢাকার উত্তরার একটি অভিজাত ফ্ল্যাট পাঁচ ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে পুলিশ। তখন চীনা নাগরিক জিসাওকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিসাও ও হেলি চাকমা স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়ে থাকতেন।
খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা দুই কিশোরীকে উদ্ধার করতে নামলেও সেখানে রাঙ্গামাটির আরো তিনজনকে আটকে রাখা হয়েছিল। আমরা তাদের ইতোমধ্যে রাঙ্গামাটির ডিবির কাছে হস্তান্তর করেছি।