নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লায় গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন গার্মেন্টসকর্মী এক তরুণী (১৯)। তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে হাত পা ও মুখ বেঁধে প্রেমিক ও তার সহযোগী কয়েকজন মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষক শিবলু সাহা (২৫) ও সুমনকে (২৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে মূলহোতা প্রেমিক আবু হাসান ও অপর সহযোগী শাকিল পলাতক রয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে ফতুল্লার পঞ্চবটি গুলশান রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল শুক্রবার দুপুরে ওই তরুণী বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি নুরে আযম মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গণধর্ষণের ঘটনা বেশ কয়েকদিন আগে ঘটে। লোকলজ্জার ভয়েও মেয়েটি ঘটনাটি গোপন করে রেখেছিল। কিন্তু ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করে মোটা অংকের টাকা চেয়ে এই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছিল ধর্ষকরা। এ ঘটনার গার্মেন্টস কর্মী অভিযোগ দায়ের করার পর পরই অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার সূত্রে জানা গেছে, ফতুল্লার মুসলিমনগর নয়াবাজার সাত ভাই মার্কেট সংলগ্ন এলাকার ইউনুস মিয়ার ছেলে আবু হাসান (২৯) এর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে একই এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসাবে বাসবাসকারী এক তরুণীর। সে বিসিক শিল্পনগরীর একটি গার্মেন্টে চাকরি করে। আবু হাসান আর ওই তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক অনেকদিন গড়ায়। যার কারণে তরুণী আবু হাসানকে বিয়ের কথা বলে। কিন্তু হাসান বিয়ে করতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। মেয়েটি বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। যার কারণে পূর্ব-পরিকল্পিত ভাবে চলতি বছরের ৩০ মার্চ রাতে তরুণীকে কেনাকাটা করে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে পঞ্চবটি গুলশান রোড এলাকার বিকাশ বাবুর ছেলে শিবলু, একই এলাকার শাকিল, সুমন মিলে আবু হাসানের কথা বলে তরুণীকে ডেকে নিয়ে শহরের চাষাঢ়ায় নিয়ে যায়। পরে তরুণীকে সিএনজি দিয়ে ঘুরিয়ে গভীর রাতে শিবলু সাহার বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে সেখানে নিয়ে তরুণীর হাত পা এবং মুখ বেঁধে সারা রাত পালাক্রমে তরুণীকে ধর্ষণ করে। তার পর সারাদিন ধর্ষণের পর রাত ৮ টার পর তরুণীকে হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়। আর ঘটনার কয়েকদিন পর ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখা হয়েছে এ কথা বলে তরুণীকে ব্লাকমেইল করতে থাকে।
ধারণকৃত ভিডিওটি পরিবারের লোকজনসহ ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। লোকলজ্জার ভয়ে বেশ কিছু টাকা দেয়। গত কয়েকদিন ধরে ফের ব্লাকমেইল করলে আইনের আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ঐ তরুণী। পরিবারের কাউকে না জানিয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করে ওই তরুণী। পরে পুলিশ ২ জনকে গ্রেফতার করে।