• মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ১০:০১ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাস রাজি হওয়ায় অবাক হয়েছে ইসরাইল রাষ্ট্রপতির কাছে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত নতুন ‘স্মার্ট এনাইডি’ হস্তান্তর ইসি’র চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আশ্রয়ণের ৮০ ঘর বিক্রির অভিযোগ ইউক্রেনে সেনা পাঠানো হবে না, ফের জানাল যুক্তরাষ্ট্র জনগণের সম্পদ লুটপাটে বারবার ডামি নির্বাচন : রিজভী রাঙামাটিতে দুর্বৃত্তের গুলিতে আহত শিশুর মৃত্যু রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল গঠনে নতুন অংশীদার খুঁজুন : আইওএমের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী ধানখেত থেকে গৃহবধূর গলাকাটা লাশ উদ্ধার কারও একার পক্ষে ডেঙ্গু মোকাবেলা সম্ভব না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এলো ১২৮ বিজিপি

১৯টি বাংলা ড্রেজার চলছে দিনরাত টাঙ্গাইলের এলেংজানী নদীতে বাধ দিয়ে বালু উত্তোলন

আপডেটঃ : বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি॥
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেংজানী নদীতে আঁড়াআড়ি বাধ দিয়ে ১৯টি বাংলা ড্রেজার বসিয়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে অবৈধভাবে দিনরাত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। দুই ব্যক্তি স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে ১৫-১৬দিন যাবত ওই বাংলা ড্রেজার চালাচ্ছেন।
জানাগেছে, কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত নিউ ধলেশ্বরীর শাখা এলেংজানী নদীর পাথাইলকান্দি মৌজায় বাধ দিয়ে পানিপ্রবাহ বন্ধ করে নিষিদ্ধ বাংলা ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে অবাধে বালু উত্তোলন করে ড্রামট্রাক দিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। এলেঙ্গা পৌরসভার হাকিমপুর গ্রামের ফরজ আলী(৪৮) ও বাঁশী গ্রামের মো. লাবু মিয়া(৪০) স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে ১৯টি বাংলা ড্রেজার বসিয়ে দিনরাত বালু উত্তোলন করছেন। ফরজ আলী ও মো. লাবু মিয়ার লাঠিয়াল বাহিনীর ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না।
স্থানীয়রা জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নদী শাসনে ব্যবহৃত স্ল্যাবগুলো এখনই ভেঙে নদীতে পড়ছে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ওই এলাকা দিয়ে পানি প্রবেশ করে নদীতীর ভেঙে বাড়ি-ঘর, স্কুল-মাদ্রাসা ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নদীর দক্ষিণ পাশে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া নদীর মাঝখানে বাধ দেয়ায় পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। পানি প্রবাহ না থাকায় নদীর তীর ঘেষে বোরো আবাদ করা সম্ভব হচ্ছেনা।
ধলাটেঙ্গরের মুক্তার আলী, এলেঙ্গা উত্তর পাড়ার শাজাহান মিয়া, পাথাইলকান্দি গ্রামের ছব্বের আলী সহ অনেকেই জানান, স্থানীয় অনেকের জমিই ইতোপূর্বে এলেংজানী নদীতে বিলীন হয়েছে। নদীতে জেগে ওঠা তাদের জমির চরে মো. ফরজ আলী গত ১৫-১৬দিন যাবত জবরদস্তি বেকু দিয়ে বালু-মাটি কেটে ড্রামট্রাক দিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে। বাধা দিতে গেলে তাদের বাহামভুক্ত লোকদিয়ে নাজেহাল করা হয় ও মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত করে জেল-হাজতে পাঠানো হয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে বর্ষা মৌসুমে তাদের বাড়ি-ঘর ভেঙে নদীতে বিলীন হবে এবং জমির ফসল ধংস হয়ে যাবে। তারা আরো জানান, বাংলা ড্রেজার ও বেকু দিয়ে দিনরাত বালু উত্তোলন করে প্রতিদিন ৮০০-৯০০ ড্রামট্রাক বালু বিক্রি করছে। দিনরাত ট্রাক চলাচলের কারণে স্থানীয় গ্রামীণ সড়ক বিনষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পুরো এলাকায় ধূলো-বালির আস্তর পড়ে গেছে। এলাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী সহ সাধারণের চলাচলে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে।
এ বিষয়ে ফজর আলী জানান, নদী থেকে বাল উত্তোলনে সরকার একটি প্রকল্প গ্রহন করেছে। সেই প্রকল্পের আওতায় এশিয়ান ড্রেজার নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তিনি নদীতে বাংলা ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। তিনি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন না।
উল্লেখিত এশিয়ান ড্রেজার নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প পরিচালক মো. বাদল মিয়া জানান, সরকার নদী খননের প্রকল্প গ্রহন করে দরপত্র আহ্বান করেছে। আমরা দরপত্রে অংগ্রহন করে নির্বাচিত হয়েছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কার্যাদেশ পাইনি। আগামি মার্চ মাসের শুরুতে কার্যাদেশ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কার্যাদেশ না পেলে কাজ করার প্রশ্ন অবান্তর বলে তিনি মন্তব্য করেন। তাছাড়া ফরজ আলী ও লাবু মিয়াকে তিনি চিনেন না।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাজাহান সিরাজ জানান, নদী খননের কোন নির্দেশনা আমরা পাইনি। নিউ ধলেশ্বরীর শাখা এলেংজানী নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে তারা কিছু জানেন না। তাছাড়া এসব বিষয় স্থানীয় প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন তদারকি করে থাকে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সরকারি নির্দেশনার বাইরে কিছু করে না। কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাম্মৎ শাহীনা আক্তার জানান, ঘটনাটি সম্পর্কে তিনি জানতেন না। প্রাথমিক তদন্তের পর ওই নদীতে দ্রুত ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চালানো হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ