• রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৫ অপরাহ্ন

পুলিশ সপ্তাহ সফল হউক

আপডেটঃ : সোমবার, ৮ জানুয়ারী, ২০১৮

অন্যান্য বত্সরের মতো এবারও আজ ৮ জানুয়ারি হইতে পালিত হইতেছে পুলিশ সপ্তাহ। পুলিশ সপ্তাহের প্রসঙ্গ আসিলেই আগে সামপ্রতিককালে তাহাদের নিষ্ঠার সহিত দায়িত্ব পালন ও ব্যাপক অবদানের কথা না বলিয়া পারা যায় না। গত কয়েকটি বত্সর বাংলাদেশ অনেকটা অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়া গিয়াছে। এই সময়ে রাজপথে যেমন সহিংসতা ছিল, তেমনি জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণেও দেশে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হইয়াছিল। পুলিশ এইসকল অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলা ও সার্বিকভাবে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় অত্যন্ত সাফল্যের পরিচয় দিয়াছে। জঙ্গি তত্পরতা বন্ধে তাহাদের ভূমিকা ছিল বেশ চোখে পড়িবার মতো। বর্তমানে বাংলাদেশ ১৬ কোটি মানুষের দেশ। জনসংখ্যার আধিক্য সত্ত্বেও পুলিশ বাহিনী যেইভাবে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখিয়া চলিয়াছে তাহা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। আমরা জানি, শুধু বাংলাদেশ নহে, গোটা ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ সহজে নিয়ম-কানুন মানিতে চাহেন না। অনেকে তাহা গ্রাহ্যই করেন না। তাই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এই সকল দেশে বরাবরই একটি কঠিন কাজ। এই কঠিন কাজে নিয়োজিত এবং শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও প্রগতি এই মন্ত্রে উজ্জীবিত পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা অবশ্যই অভিনন্দনযোগ্য।

কয়েক দিন আগে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক সংবাদ সম্মেলনে জানান যে, পুলিশি তত্পরতায় গত পাঁচ বত্সরে (২০১৩-২০১৭) অপরাধপ্রবণতা প্রায় অর্ধেকে কমিয়া আসিয়াছে। একই সঙ্গে গত নয় বত্সরে এই বাহিনীতে ব্যাপক উন্নয়নও সাধিত হইয়াছে। ব্যারাক ও রেশন সমস্যা এবং পদোন্নতি জটিলতা দূর হইয়াছে। গড়িয়া উঠিয়াছে বিভিন্ন বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিট। প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে ‘বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’। স্থাপন করা হইয়াছে নূতন নূতন তদন্ত কেন্দ্র ও পুলিশ ফাঁড়ি। তাহাছাড়া ২০০৯ সালে পুলিশের সংখ্যা যেখানে ছিল ৮৪ হাজার, সেখানে তাহা এখন প্রায় দুই লক্ষে উন্নীত হইয়াছে। এইসকল উন্নয়নে পুলিশ সদস্যরা নিঃসন্দেহে আনন্দিত। এই কারণে তাহারা বলিতেছেন যে, তাহাদের এইবার তেমন কোনো দাবি-দাওয়া নাই। অধিকাংশ দাবিই ইতোমধ্যে পূরণ হইয়াছে। আর কিছু দাবি পূরণের বিষয়টি রহিয়াছে বাস্তবায়নাধীন।

এতদসত্ত্বেও আমরা মনে করি, পুলিশ বাহিনীর উন্নয়নে আরো অনেক কিছু করিবার আছে। যেখানে অন্য দেশে পুলিশ অপরাধী ধরিতে যায় রীতিমত যুদ্ধবেশে, সেখানে আমাদের পুলিশের হাতে এখনো থাকে লাঠি বা তুলনামূলকভাবে কম আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্র। তাহা হইলে তাহারা কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করিবেন কিভাবে? তাহাদের আবাসন ও গাড়ি সংকটের কথা আমরা বহুবার লিখিয়াছি। যতদিন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় এই সমস্যার সমাধান না হইবে, ততদিন লিখিতেই থাকিব। নূতন বত্সরে তাহাদের কামনা, তাহারা বিশেষত জঙ্গিবাদ দমনে আরো লজিস্টিক সাপোর্ট চান। সাইবার ক্রাইম, ফিনান্সিয়াল ক্রাইম ইত্যাদি প্রতিরোধেও চান তথ্য-প্রযুক্তিগত সহায়তা। চান, জন অনুপাতের সহিত সংগতি রাখিয়া পুলিশের জনবল আরো বৃদ্ধি করা হউক। তবে শুধু জনবল বাড়াইলেই চলিবে না, সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ও অত্যাধুনিক সরঞ্জামাদিও তাহাদের সরবরাহ করিতে হইবে। পুলিশ সপ্তাহ উদযাপনের উদ্দেশ্য সফল হউক।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ